প্রবহমান: পর্ব – চার

হোসনে আরা মণি
হোসনে আরা মণি
14 মিনিটে পড়ুন
প্রবহমান

চৈতালির মওসুম। গিরস্থ বাড়িতে কাজের অন্ত নেই। ফাল্গুনের মাঝামাঝি যে রবিশস্য মাঠ থেকে বাড়ি আসতে শুরু করে তা মলন দিয়ে, শুকায়ে, ঝাড়পোছ করে গোলায় তুলতে অনেক সময় চৈত্র শেষ। কাঠফাটা রোদে ছোলা,কলাই, রাই,শর্ষে, তিল, তিসি, যব, ভেন্না মাড়ায়ে-শুকায়ে ঘরে তুলতে প্রাণ ওষ্ঠাগত হলেও কৃষক পরিবার তা ঝটপট গুছায়ে ফেলতে চায়। চৈত মাসের দিন যত পেরোয়, কালবোশেখির উৎকণ্ঠা তত বাড়ে। যাদের ঘরের চাল নড়বড়ে তাদের ঘরে বাঁশ-বাখারি লাগায়ে চাল ছেয়ে নেয়ার এই শেষ সময়। কাজটা সচরাচর শীতের শেষে করা হয় কিন্তু কোন গিরস্থ সময়মত সেটা করতে না পারলে এ সময়ে করে। তাই চৈতালি ফসল যত তাড়াতাড়ি গোলাজাত হয়, কৃষক ততই নিশ্চিন্তি ।

রমিজ মিঞা মাঝারি মাপের জমিঅলা কৃষক। এ গ্রামের অধিকাংশ লোকের অবস্থা মোটামুটি রমিজ মিঞার মতই। জমিদারের বসবাস পাঁচ গ্রাম দূরে। সময় মত খাজনা দিয়ে আসলে তার লোক এখানে এসে অনাহুত উপদ্রব করে না। মুসলমানের ছায়া না মাড়ানো ঠাকুরেরা মুসলমানের গাঁয়ে শখ করে পা ফেলে না। তাদের নায়েব-গোমস্তা-চাকর-নফরও কেউ বড় একটা এ তল্লাট মাড়ায় না। সদর থেকে কোন এত্তেলা পৌঁছাতে যারা আসে তারা জাতে চাঁড়াল কিংবা মেথর।

পায়ে খড়ম, মাথায় ইয়া বড় ছাতি, পরনে খাটো ধুতি আর জামা গায়ে গোমস্তার দেখা মেলে বছরে দুয়েকবার। কালেভদ্রে জমিদার পরিবারের শহরবাসী কোন পরিজন পালকিযোগে অতিক্রম করে এই গাঁ – নিতান্তই পথ সংক্ষেপ করার প্রয়োজনে। তবে প্রায়ই আসে কাঁড়া দেয়ার ঢুলি। সেরেস্তার পক্ষ থেকে কোন খবর থাকলে, কোন আদেশ-নিষেধ বলবৎ করতে হলে প্রজাকে তো তা জানানো চাই আগে। ঢুলি ঢোল বাজায়ে লোকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আর কাঁড়াল উচ্চস্বরে পরওয়ানা ঘোষণা করে।

এক সন্ধ্যেয় হাট থেকে ফিরে শরাফত মিঞা এক সাংঘাতিক খবর তার বাপকে জানায়। দিনকতক হয় রমিজ মিঞার শরীরটা ভালো যাচ্ছিল না। প্রতি সন্ধ্যায় কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে তার। বড়াইখালি গাঁ থেকে সেদিন দূর সম্পর্কের আত্মীয় সোনা মিঞা এসেছিলো। সে দিলো পিলে চমকে যাওয়ার মতন খবর। বড়াইখালির দুই গ্রাম পরের গাঁ কালিয়া নাকি উজাড় হওয়ার দশা। অবস্থা নাকি এমন যে মুখে পানি দেয়ার মানুষটাও নেই। যে পরিবার এখনো সুস্থ আছে তারা যে যেদিক পারে ছুটছে। আর যাদের কেউ এরই মাঝে শয্যা নিয়েছে তারা বাড়ির শিশুদেরে দূর কোন গ্রামের আত্মীয়বাড়ি পাঠায়ে দিচ্ছে। যারা গ্রামে আছে তারা মরা-বাঁচা আল্লাহ্র হাতে ছেড়ে দিয়েই আছে।

গায়ে জ্বর আসছে দেখে রমিজ মিঞার কলিজা দিন কতক শুকায়ে ছিল ভয়ে। যে সোনা মিঞা রোগের খবর আনলো – সে কি একাই এলো, না বসন্ত বিবিও এলো পিছে? শোনা যায়, এসব রোগের খবর যে বয়ে আনে, তার পিছে পিছে বিবিও আসে। তবে কয়েক দিন যেতেই রমিজ মিঞা বুঝল যে রোগটা আসলে পালা জ্বর। রোজ একই সময় আসে, এক পহর থাকে, তারপর ছেড়ে যায়। যতক্ষণ থাকে ততক্ষণ হাড়ের মজ্জা পর্যন্ত কাঁপাতে থাকে। কী এক ওষুধ জানি আছে এর, ক্ষিতিশ ডাক্তার পুরিয়া করে দেয়। কয় পুরিয়া যেন খেলে আরোগ্য মেলে। কিন্তু ক্ষিতীশ ডাক্তারের বাড়ি চার গ্রাম দূরে। এই চৈতালির মওসুমে কাজ ফেলে কে যাবে সেই পুরিয়া আনতে!

শরাফতের মুখে ঢোল-সহরতের খবর শুনে রমিজ মিঞার কলিজায় ফের কাঁপন ধরে। একই বছর দুই বিবি যদি পাল্লাপাল্লি করে দুই অঞ্চলের দখল নেয় তাহলে এ বছর মানুষ পালায়ে বাঁচবে কোন খানে? বসন্ত বিবি এখনো মধুমতির এ পারে না এলেও ওলাবিবি নাকি নবগঙ্গার ধার ধরে ছুটছে। এ গ্রাম নবগঙ্গা থেকে দেড় ক্রোশ দূরে হলেও ভরসা কী! বিবি পা বাড়ালে দুই-চার ক্রোশ দূরত্ব কোন ব্যাপারই না। খোঁড়া পায়ে ঠিকই লাফায়ে লাফায়ে ছুটবে।

আজ রাতে খাওয়া-দাওয়ার পাট চোকে বেশ দেরিতে। দুই বিবির ভয়ে ভীত হয়েই কি না কারো গলা দিয়ে ভাত নামতে চায় না। রওজান বিবির শরীরে জুৎ নেই অজুহাতে উঠে গিয়ে শুয়ে পড়ে। আকিমনও খানিকক্ষণ ভাত নাড়াচাড়া করে কয় লোকমা গিলে তাতে পানি ঢেলে সরিয়ে রাখে। রমিজ মিঞাতো জ্বর গায়ে কিছুই খায় না। সন্ধ্যার আগে সে এক বাটি বার্লি খেয়ে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়েছিলো। এখন বিবিদের নিয়ে কতক্ষণ ভাবতে ভাবতে কোন এক সময় আচ্ছন্নের মত ঘুমিয়েও পড়ে।

ঘুম আসে না আকিমনের। এ বছর আমন ধান নামি হওয়ায় চৈতালি বুনতে দেরি হয়েছিল। তার ফলে চৈতালিও হয়েছে নামি। এ দিকে চোত মাস শেষ হয়ে আসছে। যে কোন দিন ধেয়ে আসতে পারে কালবোশেখি। গোয়াল ঘরটার পড় পড় দশা। বাঁশ-খুঁটি বদলে এখনই না ছাইলে বিষ্টি-বাদলে গরুগুলোনের বড় কষ্ট হবে। ওদিকে মরার পরে খাঁড়ার ঘা হয়ে ঘটছে আরাক দুর্ঘটনা। গেল সোমবার লোকমানের বৌটা হঠাৎ করেই গলায় দড়ি দিয়ে মরেছে।

লাশ দাফনের অনুমতি পেতে বিস্তর ঝামেলা হয়েছিল। সেই ঝামেলা মেটাতে রমিজ মিঞার হাতের নগদে পড়েছে টান। পুলিশকে বাড়িতে পালা খাসি মোরগের সুরুয়া থেকে শুরু করে নগদ খাওয়ানোর পর গ্রামের বাছা বাছা মাথাগুলোরে জিয়াফত খাওয়াতে হইছে। সবই হয়তো লোকমান একদিন গায়ে খেটে শোধ দেবে কিন্তু এখন রমিজ মিঞার হাতে নগদ দশটা টাকা কে যোগায়?

এসব বিপদের উপর এলো এই বসন্ত-ওলাওঠার সংবাদ। এখন একা শরাফত সংসারের কোন দিকটা সামলায়!

পরদিন দুপুর। রমিজ মিঞা দুর্বল শরীরে গরুর জাবনা যোগাড়ের চেষ্টা করতে গিয়ে মাথা ঘুরে ওঠায় একটু সামলে নিয়ে চিঁ চিঁ স্বরে লোকমানরে গালাগাল করছিল। হারামজাদাটার বৌ মরছে না যেন মাথায় ঠাঠা পড়ছে। তার দরুন রমিজ মিঞার হাতের জমা সব শেষ, অথচ নিমকহারাম চোরটা দেখ এই চৈতালির ভরা মওসুমে রমিজ মিঞার অসুস্থতার সময়ে কেমন নখরা জুড়েছে! যেন বৌ কারো কোনদিন মরেনি, যেন সে একাই বৌ ভালবাসে!

রমিজ মিঞার রাগারাগিতে কান দেয়ার গরজ আকিমন তত বোধ করে না। জন্ম থেকে পেট রোগা রমিজ মিঞা তার মা-বাপের একমাত্র সন্তান। অতি আদর আর অতি আশঙ্কাতেই কিনা তার হিলহিলে লিকলিকে শরীরের মত মনের বাড়ও হয়েছে কম। অন্ততঃ আকিমনের তাই ধারণা। না হলে সাত দিনও হয়নি বৌ মরেছে যার সেই মানুষকে কাজের জন্য গালাগাল করা কি ভালো দেখায়!

হ্যা, এটা ঠিক যে বৌ মরলে সোয়ামির শোক ঐ কবরে লাশ নামানো পর্যন্ত। শেষবারের তরে মুখটা দেখে নিজ হাতে বাঁশের চালি বিছায়ে মাটি দেয়ার কালে পুরুষের বুকের শোকের পাথর ঐ মাটির সাথেই নেমে যায়। কিন্তু লোকমানের কথা ভিন্ন। সংসারে এক বৌ ছাড়া তার আর কেউ ছিল না। আট মাসের লোকমানেরে পায়ের নিচে বসায়ে তার মা নাকি গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলেছিল ঘরের আড়ার সাথে। কার উপর রাগে কি অভিমানে সে এই কাজ করছিল তা জানা না গেলেও এর পর থেকে লোকমানের বাপ নিরুদ্দেশ। পুলিশ নাকি লাশ নিয়ে টানা-হ্যাঁচড়া যতটা পারে করছিল। বিশেষ ফায়দা মেলেনি কারণ গরীবের বৌ গলায় দড়ি দিয়ে মরলে আর তার স্বামী নিরুদ্দেশ হলে পুলিশের পকেট ভারি করার দায় নেয় কে?

এ তো আর এক-দেড় আনার মামলা নয় যে, গ্রামবাসী দয়া পরবশ হয়ে চাঁদা-টাদা তুলে একটা কোন সদ্বন্দোবস্ত করবে। দুই-চার আনার ব্যাপারও নয় যে, মোকার ঘরের মাটির হাঁড়ি-কুড়ি আর তার বহু শখের পিতলের থালটা জমা করে নিয়ে কেউ দায় শোধ করবে। একেবারে গোটা দুই টাকার ধাক্কা। ঘর-গিরস্থি সম্বল মুসলমানের গাঁয়ে এমন বাবু কে ছিল যে মোকার বৌয়েরে পুলিশি চালান থেকে উদ্ধার করে কাফন-দাফনের তাগিদে অতগুলোন টাকার জামিন হয়?

অতএব বোকাসোকা মোকার সুন্দরী বৌটা গলায় দড়ি কি নিজে পরছে, নাকি কেউ তারে ঝুলায়ে দেছে সে প্রমাণ দিতে তারে সদরে চালান হতেই হয়। তিন দিন বাদে গরুর গাড়ি চেপে সে যখন ফিরে আসে তখন দুর্গন্ধের চোটে লাশ কবরস্থ করা মোল্লা-মুন্সি দূরে থাক, হাড়ি-ডোমের পক্ষেও যেন কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। মাত্র কয় দিন আগে যার শরীরের বুনো খুশবুর কল্পনায় অনেকেরই কলিজা আইঢাই করতো, তার শরীরে আজ এ কি বদগন্ধ!

শেষ পর্যন্ত লোকমানের মায়েরে কারা কিভাবে কবর দিয়েছিল তা নিয়ে আছে নানা মত। কেউ দাবি করে তার অনুরোধ-উপরোধেই নাকি মজিদ মুন্সি জানাজা পড়াতে রাজি হয়েছিল। কেউ বলে জানাজা হয়নি। কেউ বলে তার মা ছাড়া আর কেউ নাকি মোকার বৌয়ের ছেঁড়া-কাটা শরীরে কাফন পরাতে সাহস করেনি। কেউ বলে লোকমান নাকি তার বৌয়ের কোলের গ্যাদার সাথে দুধ ভাগাভাগি করে খেয়ে মানুষ – সে হিসেবে সে তার দুধবাপ। এমনি কত কত উপকারকের কত বিচিত্র উপকারের কাহিনী শুনে যে লোকমান মানুষ! মানুষের মুখে এসব কাহিনী শুনে শুনে নিজেরে তার মনে হয় এজমালি সম্পত্তি। এত এত উপকারের পরতিদান দেয়ার সামর্থ্য নেই বলেই কি না সে হয়েছে ভিখারীর মতই অকৃতজ্ঞ। জ্ঞান হওয়ার পর থেকে যে রমিজ মিঞার বাড়িতে সে বারমেসে, তার জন্যই কি তার কোন দয়া-দরদ আছে!

তা রমিজ মিঞার জন্য তার মায়া-দয়া না থাক, বৌয়ের জন্য কিন্তু তার খুব মায়া ছিল। বিয়ের পর কোনদিন সে মিঞা বাড়ির হাতনেয় বসে ভাত খায়নি। গামছায় পুঁটলি বেঁধে হোক কি কলাপাতায় আড়াল করে, ভাত সে নিয়ে যেত নিজের ঘরে। মিঞাবাড়ির পরে দুই বাড়ি, এক ভিটে, আর তিন বিঘে জমির আইল পেরোয়ে তবে তার তিন শতক জমির ভিটের কোনে খোড়ো ঘর।

সেই ঘরের কোনে তার এক কাপড় পরা বৌ তখন রেড়ির তেলে পিদিম জ্বেলে তারই অপেক্ষায় বসে। আধো আলো-আঁধারির পটভূমির রহস্যে তার বৌয়ের কচি কলাপাতা রঙা মুখে কী যে মায়া খেলা করতো! সত্যিই কি মুখের মায়া, নাকি লোকমানের চোখের মায়া বৌয়ের মুখে লেপ্টে মুখটা অমন মায়া ঢলঢল দেখাতো? লোকমান জানে না। কিন্তু এখন এই একা ঘরে প্রায় বিবাগী মনে লোকমান ভেবে পায় না যে কেন তার বৌ তার মনে অতখানি মায়া জন্মে অমন আলগোছে টুপ করে ডুব মারার মত করে মরে গেল!

মাত্র একটা চড় মেরেছিল লোকমান। জীবনে কোনদিন একটা কটূ কথাও না বলা সোয়ামি সেদিন হঠাৎ রাগের বশে না হয় একটা চড়ই মারছিল! তাতেই দেখ নবাবের ঝি.. … নাহ্, লোকমান এখনো বৌয়ের উদ্দেশ্যে একটা কটূ ভাবনা পর্যন্ত ভাবতে পারে না। এটা ঠিক যে, গাঁয়ের আর পাঁচজন মরদ যেভাবে মারপিট করে বৌ সোজা রাখে, লোকমান তা করা দূরে থাক, ভাবতে পর্যন্ত পারে না। তাই বলে কি বৌয়ের উচিৎ হয় বেকি বেড়ার এপারে দাঁড়ায়ে হেসে হেসে ওপারের পরপুরুষের সাথে কথা কওয়া! কম দুঃখে কি লোকমান বৌয়েরে চড় মেরেছিল? আর সেই পুরুষটাও তো যেন তেন কেউ না – খোদ দেলু গাওয়াল।

দেলু গাওয়ালের পেশা গাওয়ালি হলেও মাসে মাত্র কয় দিনই সে গাওয়ালে যায়। আসলে গাওয়ালিটা বুঝি তার ছল। তার আসল কাজ বুঝি গাওয়ালির অছিলায় লোকের বাড়ির বেকি বেড়া পার হয়ে উঠোন কোনে জমায়ে বসে ভেতর বাড়ির খবর নেয়া। কার বাড়ির ঝি কতখানি ডাঙ্গর হলো, কোন বাড়ির বৌয়ের গলায় চান্দি রূপোর হাঁসুলি, নাকে গিনি সোনার নথ – এ যেমন তার জানা তেমনি এটা সে কোনদিন ভোলে না যে, কার কচি বৌয়ের হাত রোয়া গজানো কবুতরের মতন ঊষ্ণ-নরম-তুলতুলে – যেন মন্থনে জাগা মাখন – ইট্টুসখানি উষ্ণ দলনেই গলে যেতে তৈয়ার।

তা নারীদের হাতের কোমলতার খোঁজ সে পেতেই পারে – তার গাওয়ালির প্রধান পন্য চুড়ি কি না। কিন্তু ঐ হাতের সাথে নারীদের মনের খবরও যে সে জেনে নেয় এবং সে খবর বিনা তারে যোগ্য জায়গায় পৌঁছেও দেয় – এই নিষ্ঠাবান পেশার প্রতিই আসলে লোকমানের ক্ষোভ। না হলে তার বৌ দুই পয়সার চুড়ি কিনবে, তা কিনুক না। পয়সা নেই লোকমানের? – কে দেয় এমন ডাহা বদনাম? রমিজ মিঞার বাড়ির আউড়ি ভরা ধান খালি কি ইন্দুরের বংশই খায় নাকি লোকমানও তার বখরা বুঝে নেয়? আর খালি কি ধান – চৈতালির ছোলা, কলাই, তিল, তিসি, সর্ষেতেও কি লোকমানের একটা হিস্যা থাকে না? বারো মাস এক পেটের খোরাকি, একজোড়া তহবন আর একখানা গামছার ভরসায় মাটি কামড়ে পড়ে থাকলে কোন জোয়ান মরদের চলে?

কথায় কয় – যার জন্যি করি চুরি, সেই কয় চোর – অভাগা লোকমানের সেই দশা। ছিঁচকে ‘চোর’ উপাধি লোকমানের গায়ে সেঁটে মনভরা অভিমান নিয়ে বৌ কিনা তার চলে গেল ওপারে! দেলু গাওয়ালের সাথে হেসে কথা কওয়ার অভিযোগের বদনাম শরীর থেকে খসাতেই কিনা অবাধ্য ঘোড়ার মতন তেজি আর জেদি বৌটা লোকমানের চেয়ে পঞ্চগুণ বেশি আক্রোশ প্রকাশ করে গেল নিজে মরে আর লোকমানের সম্মান মেরে। রমিজ মিঞার বাড়ি বয়ে যেয়ে এই যে সে চুরির ফসল বিক্রি করে সোনার নাকছাবি আর রুপোর বিছে কিনে দেয়ার প্রমাণ দেখানো থেকে শুরু করে লোকমানের নগদ টাকা জমাবার খবরটাও দিয়ে এলো – এখন সে মিঞাবাড়িতে আগের মত কাজে লেগে যায় কোন মুখে? বিবাগী হয়ে দূর কোন দেশে চলে যাওয়া ছাড়া আর কি কোন উপায় এখন আছে লোকমানের?

চলবে …

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
জন্ম - মাগুরা জেলার মহম্মদপুর থানার ওমেদপুর গ্রামে নানা বাড়িতে জন্মতারিখ- প্রকৃত: ২৭ জুন ১৯৭৭, সনদীয়: ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ পিতা- মোঃ আব্দুল গফ্ফার মোল্লা মাতা- সালেহা ইয়াসমিন সংসারসঙ্গী- মোঃ দেলোয়ার হোসেন (মাহমুদ) তিন কন্যা- আদৃতা, অঙ্কিতা ও দীপিতা বর্তমান অবস্থান: রাজশাহী। পেশা: সরকারী চাকরি [উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত), জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর, বিভাগীয় কার্যালয়, রাজশাহী] প্রকাশিত গ্রন্থঃ ৭টি (৬টি গল্পগ্রন্থ, ১টি উপন্যাস) প্রথম: অপরাজিতা (সময় প্রকাশন) দ্বিতীয়: জীবনের পেয়ালায় ছোট্ট চুমুক (ইত্যাদি গ্রন্থপ্রকাশ) তৃতীয়: নদীও নারীর মত কথা কয় (বটেশ্বর বর্ণন) চতুর্থ: মহাকালে প্রান্তরে (পরিবার পাবলিকেশন্স) পঞ্চম: লিলুয়া জীবনের নারীগণ (বটেশ্বর বর্ণন) ষষ্ঠ: বিবিক্তা (বটেশ্বর বর্ণন) – উপন্যাস সপ্তম: তামসী (বইঘর)
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!