উত্তরপাড়া

অঞ্জলি দেনন্দী মম
অঞ্জলি দেনন্দী মম
3 মিনিটে পড়ুন

৺ শ্রী আশিস নন্দী। ভারতের, বঙ্গের, হুগলীর, উত্তরপাড়ার কলেজে ভর্তি হল। তিন বছর পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপ নিয়ে একাউন্টেন্সি অনার্স পাস করল।      

এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম. কম. – এ ও একইসঙ্গে আই. সি. ডব্লিউ. এ. – তেও ভর্ত হল। দু বছর পর মাষ্টার ডিগ্রী কমপ্লিট করল। আর আই. সি. ডব্লিউ. এ. তখনও পড়তে লাগল।        

বাড়ি হুগলীর চৈতন্যবাটী গ্রামে। কিছুদিন পর সাইনাস হল। অপারেশন হল। ছয় মাস পর নার্ভের রোগ হল। ডান হাতটি কম্পিত হত। চিকিৎসা হল। কাঁপা বন্ধ হল। কিন্তু সারা জীবন ওষুধ খেয়ে বাঁচতে হবে। ডাক্তার তাকে বললেন। এরপর ওষুধ খাওয়া স্বত্বেও তার ঘাড় বেঁকে গেল। মুখ দিয়ে লাল পরতে থাকল। আবার চিকিৎসা করে ভালো হল। তবে লেখাপড়া ছেড়ে দিতে হল। তখন তার আই. সি. ডব্লিউ. এ. অর্ধেক পাস করা হয়েছে। হাওড়া জেলার মধ্যে সে এতে প্রথম হয়েছে। পড়ালেখা শেষ হয়েছে – তাই শুধুই কাঁদে। পরে সে আলু ব্যবসা করে, বাড়িতে বসে প্রচুর উপার্জন করল। আর একইসঙ্গে গরীব কলেজ ছাত্রদের, নিজের বাড়িতে বসে, বিনামূল্যে পড়িয়ে পাস করালো। কয়েক বছর পর যখন ওর বয়স ত্রিশ বছর হল তখন নিজের ঘরে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলল। সেই ঘরটি কমার্সের বইয়ে ভরা। আর ছিল ব্যাংকের বই। যা থেকে তার বাবা দেখল যে তাদের একমাত্র ছেলে মা ও বাবার নামে অনেক টাকা ব্যাংকে জমা রেখেছে। আর স্কলারশিপ পেয়ে যে টাকা পেয়েছিল তা দিয়ে সে তার মৃত্যুর অনেক আগেই একটি টেপ রেকর্ডার কিনেছিল। সেটা চালিয়ে সে তার মাকে গান শোনাতো।      

বাবা, মা যখন তারকেশ্বর, হাওড়ার যাওয়া, আসা করত তখন উত্তরপাড়া স্টেশন এলেই চোখ বুজে পাথরের মূর্তির মত বসে থাকত।        

- বিজ্ঞাপন -

তার ক্লাস ওয়ান থেকে সারা জীবনের, উচ্চ শিক্ষার সব রেজাল্ট কার্ড – মার্কশিট, সব সাফল্যের কাগজিক প্রমাণ পত্রগুলি তার মা ও বাবা খুব যত্ন করে রাখলো। আর বাবা নিজের বুক পকেটে সব সময় ছেলের ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে থাকত। মা ছেলের ব্যবহার করা বাথরুম সু-দুটিতে রোজ গঙ্গাজল ঢেলে পূজো করত আর নিজের কপালে ঠেকাতো। আর এই গঙ্গাজল বাবা কলকাতা থেকে বয়ে আনতো। আর মায়ের হাতে পালস্টিক জার সমেত তুলে দিত। বাবা বহু টাকা অনেক যুবকের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য দান করল। তারা দোকান করে খুব ইনকাম করতে থাকলো। আশিসের মৃত্যুর সাত বছর পর তার বাবা ৺ শ্রী দেবী প্রসাদ নন্দী ক্যান্সার হয়ে মারা যায়। তখন মা টাকা দান করে বহু ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসা করালো। ছেলের মৃত্যুর দশ বছর পর ও স্বামীর মৃত্যুর তিন বছর পর ৺ শ্রীমতী সবিতা নন্দীও ক্যান্সার হয়ে মারা গেল।        

তারা তিনজন, তারা হয়ে কি খুব কাছাকাছি, আকাশে সংসার করছে? ! …………..

✍️এই নিবন্ধটি সাময়িকীর সুন্দর এবং সহজ জমা ফর্ম ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। আপনার লেখা জমাদিন!

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

বিষয়:
এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!