১
দশ বছরের মেয়েটা সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই মাকে জিজ্ঞাসা করল, আচ্ছা মা, রাতের বেলা বাবা তোমাকে মারছিল কেন?
মা বলল, ওটা মার নয়, ভালোবাসা। আমরা এভাবেই ভালোবাসা পাই।
২
নুব্জ দেহটা লাঠির উপর ভর দিয়ে ছেলেকে জিজ্ঞাসা করল- ও বাপ দুপুরে খেতে দেবে তো?
বাপ মানে তার ছেলে বলল, হ্যাঁ দেবে।
আমরা আসি পেট ভরাতে, আর ওরা, মানে লাল, নীল, সবুজ, হলুদ পার্টিটা আসে মাঠ ভরাতে।
৩
পার্কের শ্যাওলা ধরা বেঞ্চটায় বসে কত কথা মনে পড়ে গেল, যৌবনের কত প্রেম কাহিনী।
আজ এই বেঞ্চটার মতো সেগুলোও মলিন। স্বপ্নগুলো হারিয়ে, বেঁচে আছি যে যার মতো করে।
৪
রমা ও রথীন একসঙ্গে থাকে। জানে না কতদিন থাকতে পারবে? তারা কারোর কথায় কান না দিয়ে এইখানে থাকে। তাদের নিয়ে কত আলোচনা, কত নিন্দার ঝড়। তবুও রথীন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, যে তার প্রেমকে সে শেষদিন পর্যন্ত নিয়ে যাবে। আলমারিতে রমার রিপোর্টের লেখা তার আয়ুর পরিধি।
তবুও দুটি প্রাণ ভালোবাসার জন্য একতাবদ্ধ।
৫
ইনকাম ট্যাক্স অফিসার নিজের ঘরে বসে একটা বিশেষ ফাইল নিয়ে খুব মনোযোগ দিয়ে দেখছিলেন, আর মুচকি মুচকি হাসছিলেন। তাই দেখে তার জুনিয়র খুব অবাক হয়ে স্যারকে প্রশ্ন করলেন যে, আপনি হাসছেন? আপনি তো ফাইলের ভুল ত্রুটি দেখে তাকে কী শাস্তি দেওয়া যায় তাই ভাবেন!
স্যার বললেন, দেখো লন্ড্রীর বিল দিয়েছে ৯০ হাজার টাকা।
জুনিয়র বলে, বড়লোকদের ব্যাপার। খুব বড় লন্ড্রী বোধহয়। তা কে স্যার! শাহরুখ খান!
স্যার বললেন, না, সানি লিওন।
৬
শত সহস্র লোকের ভিড়ে পিছন দিকটা অন্ধকার স্বপ্নকে বলিষ্ঠ করতে মাঝে মাঝে কয়েকটা আবছা মুখ সামনে আসে। আমি নীরব দর্শক হয়ে ওদের দেখি, সঠিক জায়গায় নাম লেখাতে পারিনি বলে আজও পিছিয়ে আছি, আছি নীরব দর্শক হয়ে।
দেখছি সোনা, রূপা, ব্রোঞ্জ পদক নিয়ে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ওরা, আর পিছনে তাদের দেশের জাতীয় সংগীত বাজছে।
আমি তো দর্শকমাত্র। ওদের জন্য আমার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। ওরা তো এক একটা বর্শা, নিজের লক্ষ্য মতো নিজেরা সেল করবে।