ষড় কবিতা: কবি পাভেল আমান

পাভেল আমান
পাভেল আমান
3 মিনিটে পড়ুন

কত কিছু লিখি

কত কিছু লিখে চলি
মনে মনে কথা বলি।
ঘুরে ফিরে ভাবনায়
খুঁজি তাকে চেতনায়।

ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি উড়ে
আকাশের বুক জুড়ে।
দেখি শুধু চোখ মেলে
নিমেষেই সব ফেলে।

বাঁধনের রশি খুলে
একাকার তোর কুলে।
অনুভবে সাড়া দিয়ে
অভিযান তোকে নিয়ে।

মননের ক্যানভাসে
নানা ছবি অবভাসে।
কিছু ছবি রবে শেষে
তোমাদের সমাবেশে।

অনুভূতি দেয় ঝাড়া
যত বাধা ছন্ন ছাড়া ।
তবু আমি হেঁটে চলি
মননের অলি গলি।

ধর্ম ও মানবতা

ধর্ম নিয়ে চলছে খেলা
সকাল থেকে সন্ধ্যে বেলা।
মানব মনের সুপ্তধারা
হঠাৎ যেন বাঁধনহারা।

সবকিছু আজ চুলোয় যাক
আবেগটা নিয়েই বেঁচে থাক।
বিভেদ প্রাচীর উঠছে গড়ে
এই সমাজের প্রতি ঘরে।

অস্থিরতার হাওয়া কলে
অনেক কিছু বেসুরো চলে।
বিশ্বাসের চেতনাতে আজ
পড়েছে যেন আতঙ্কের বাজ।

চতুর্দিকে উঠছে কলরব
ধর্মের নামে যতসব রব।
অনুভূতি আজ বড় অসহায়
ভাবনাগুলো শুধু খাবি খায়।

শব্দের ভুবন

রাত্রির নিস্তব্ধতায়
জেগে ওঠে সৃজন চেতন
শব্দরা ভর করে
মননের কোলে পিঠে
তাগিদ পূরণে
তবু কিছু সহজাত ভাবনা
লিপিবদ্ধ করে চলেছি
সময়ের গতিপথে
সাক্ষ্য বিবিধ ঘনঘটার
কিছুটা অনুভূতির মেলবন্ধনে
খুজে পেয়েছি ব্যক্তের ভাষা
রাত্রির নিস্তব্ধতায় জুড়েছি
ভালোলাগার যাপন কথা
যেখানে সদা জাগরুক
শব্দের ভুবন
অবিরাম লিখতে আছে
নিঃশব্দের কথামালা।

ভারসাম্য

একটা অদৃশ্য ভাইরাস
স্বমহিমায় মানব গড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে
মারণ সংক্রমনের বাহুবলে,
পৃথিবীব্যাপী তার ভয়ঙ্কর বিস্তার!
উড়িয়ে দিয়েছে প্রলয় নিশান
সামান্য একটা অজানা ভাইরাস
সংক্রমনের নিরন্তর বিষাক্ত ছোবলে-
কেড়ে নিচ্ছে অগণিত নিরীহ মানব জীবন
বিশ্বায়ন আজ বড় বিপন্ন
প্রকৃতি যেন ভাইরাসের ছদ্মবেশে
মানুষকে দিচ্ছে ভারসাম্যের সহজপাঠ;
এতদিন সব মুখ বুজে সয়ে
ভেঙে দিয়েছে সংযমী বাঁধ
মানবতা প্রতিনিয়ত ঘোর সংকটাবর্তে-
মানব প্রাণ গুলো অকালে ঝরে যাচ্ছে
রোগ যুদ্ধে মানুষ প্রচন্ড অসহায়!
সযত্নে লালিত শ্রেষ্ঠত্বের মিনার
ভাইরাসের সুনামিতে একেবারে খাদের কিনারে
গর্বের সভ্যতা ভূলুণ্ঠিত, ছত্রভঙ্গ
এভাবেই ঘটে যাবে নিঃশব্দ বিপ্লব;
বৈষম্যকে ঘুচিয়ে সমতার প্রতিষ্ঠায়
প্রকৃতিতে আবারো পুনরুজ্জীবিত
বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্যের চিরায়ত নতুন সকাল।

মনন সংযম

কষ্টার্জিত মনন সংযম
এলোমেলো ভাবনার অসাবধানতায়
আজ যেন ভগ্নপ্রায়
চেপে রাখা বাদ প্রতিবাদ
অসংলগ্নতা চৌহদ্দি ডিঙিয়ে
চুরমার লালিত সংযম
তিলে তিলে গড়ে তোলা
প্রাপ্তিটা বাস্তুচ্যুত
তবুও একটি প্রশ্ন
বারংবার চেতনাকে নাড়া দেয়
কেন এত অস্থিরতা?
ধৈর্যের কঠোরতাকে
চূড়ান্ত পরীক্ষায় ফেলে
অবিরাম চলতে থাকে
অসাধু উদ্দেশ্য পূরণ
সবকিছু বিশ্লেষণে
জেগে থাক মনন সংযম।

পরিচয়

তুলে রাখ সব চাওয়া পাওয়া
যা ছিল জীবনের সাথে
ভুলে যাও যত হিসাবের খতিয়ান
সময়কে মনে রেখে,
সচকিতে চেয়ে দেখো সম্মুখ পানে
ধেয়ে আসছে বিপদ সংকেত!
মননের প্রজ্ঞায় সঁপে দাও বর্তমান
অচিরেই কেটে যাবে কালবেলা
খুঁজে পাবে হারানো গুপ্তধন,
সবকিছু বাধন একে একে ছিঁড়ে
জ্বলে উঠবে সেই বহুকাঙ্খিত
নব চেতনার দিশারী আলো।
বিবর্ণ পাতার মতো খসে পড়ে
মনের জরাজীর্ণ চেতনার দুর্গ
প্রত্যাশার দীপন মেলে ধরো-
জীবনের পূর্ণতার কড়চা
জানি একদিন ঘুচে যাবে অমানিশি
পৃথিবী ফিরবে পূর্বাবস্থায়;
তুমি পুড়িয়ে দেবে অবাঞ্ছিত যত আবদার
নিজেকে চিনবে এক অন্য পরিচয়ে
যেখানে মিলেমিশে সব একাকার..

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
ইংরেজিতে স্নাতক। পেশা শিক্ষকতা। ছাত্রাবস্থা থেকেই লেখালেখির প্রতি আকর্ষণ। বিশেষত কবিতা, ছোটগল্প, প্রবন্ধ বিভিন্ন ফিচার লিখতে অভ্যস্ত। প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় উদার আকাশ পত্রিকা। এরপর শব্দসাঁকো, জিলিপি, শারদীয়া আগন্তুক, আলেখ্য, আখর কথা, পত্রিকায় কবিতা প্রকাশিত। আনন্দবাজার পত্রিকা, প্রতিদিন, উত্তরের সারাদিন, পুবের কলম, দিনদর্পন, সাত সকাল প্রভৃতি পত্রিকায় প্রবন্ধ চিঠিপত্র প্রকাশিত হয়েছে। এখনো ভালো লাগে কলমটাকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিনিয়ত সৃষ্টিশীলতায় ভেসে গিয়ে ভাব জগতে বিচরণ করে কিছু না কিছু লিখতে। লেখালেখিটা অনেকটা জীবনের অপরিহার্য অংশে পরিণত হয়েছে। ক্রমশই অনুভূত লেখনিই আমার জীবনের অবশ্যিক অভিব্যক্তি।
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!