বৃত্ত ভেঙে ছুটে যায় অপরা ব্যবচ্ছেদ এবং অন্যান্য কবিতা

লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল
লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল
3 মিনিটে পড়ুন

বৃত্ত ভেঙে ছুটে যায় অপরা ব্যবচ্ছেদ

পাঁজর ডিঙানো রাস্তায় ওপারে হারমোনিয়ামটি বেজে উঠতেই ভালোবাসতে শিখে যাই পথকে, সাদাকালো রিডের কম্পাংকে ভেঙে যায় শীতার্ত মাইলস্টোন

আলগোছে যে চলে গেছে বনের ভিতর — উপোষ কন্ঠে সেও ধ্রুবতারার সাথে হাঁটে, বৃত্ত ভেঙে ছুটে যায় অপরা ব্যবচ্ছেদ

উপেক্ষা করতে পারিনি নিঝুম উৎরাই — তারই ওম নিয়ে রাতের গভীরে সজোরে ব্রেক কসে মিলন, মেইন প্লটের বিভাজনে ঘন অন্ধকারে ধেয়ে আসছে স্রোতের অন্তরা

আমাদের ভিতর রিপুরা অস্থির হয়ে পড়ে

ভাঙা পাথরে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে উঁচিয়ে ধরে সেলফি স্টিক

জল আঁকড়ে ধরে ইতস্তত ভ্যাপার

পদ্মিনী সন্ধ্যার গা বেয়ে ম্রিয়মান সুন্দরীটি অনবরত আদিম – টগর গাছের নিচে হারিয়ে ফেলে অন্তর্দহনের নোটবুক, আশ্চর্য লিকলিকে মেঘে সিজন চেঞ্জের শ্বাস বাড়ে, ধ্বনি ভেসে থাকা জল আঁকড়ে ধরে ইতস্তত ভ্যাপার

মনখারাপ করা গাঢ় চুম্বনে পুকুরটির পাড়ে আলো কমে আসে ক্রমশ – পাতিহাঁস হেলে দুলে এগিয়ে যায় কোক রঙের ভালোলাগায়

সন্ধ্যার সপ্তর্ষির দিকে তাকাই, অল্প জ্বরের অমেয় পদধ্বনি জেগে আছে নিশ্বাসের কারুকাজে – অস্পষ্ট হয়ে আসছে হাত পা এবং অস্থি

আমি নাতিশীতোষ্ণ, ধূপকাঠির ইতিহাসে এছাড়া কোনো পরিচিত শত্রু নেই

কালসিটে মুখে দুপুর গড়িয়ে পদ্ম হয়ে যায়

তবুও পুকুর দুটোর মাঝখান দিয়েই চাকার দাগ – সমতল প্রতিকৃতিতে ভেঙে যায় সরলরেখা, চোখের সামনে পচনশীল খড়গাদায় কেন্নোরা আঁকড়ে ধরে নিকষ কামনা

শিরিষ গাছের ছাল–চামড়া আঁকে ক্ষুধিত মাকড়সার জাল; কোন অনন্ত নেই, স্যাঁতস্যাঁতে ভাবের নির্জনতাকে আত্মরতির শব্দ দিয়ে শুরু করে অস্তিত্বের স্তব

বকুল ফুটল না এখনো

অথবা সাদা ওড়নায় ভাসেনি কোন এঞ্জেল – খুঁজে পায়নি গ্রীষ্মের রাত; ক্রমেই পাঁজর বেয়ে উড়ে বিন্দু বিন্দু চিল

আমার অহমিকাময় কালসিটে মুখে দুপুর গড়িয়ে পদ্ম হয়ে যায়

ঋকধ্বনির পাখিরা তৎসম হয়ে যায়

কিন্তু সেই ফুলদানিগুলি সমানুপাতিক বিকেলের আলোছায়া নিয়ে নিজের বুকেই সাজানো থাকে, গাঢ় বাদামিরেখায় ভাসে ত্রিকাল স্বরূপ

সেখানে আঁচল বিছিয়ে রাখে সন্ধ্যার ধুলোপড়া নদী ,আগে দেখিনি কেউ

আহত অন্তরীক্ষে ভাসে সে কুয়াশার কথা

ঝরেপড়া পাঁপড়িরা নীলজলের নিচুস্বরে ভিজিয়ে দেয় নৈঃশব্দ্য – একে একে দুঃখ বদলে যায়

কথা ছিল ফুলের ভাষান্তর শিখে নেব রেটিনার রোদ্দুরে, বৃন্তে লেগে আছে সমস্ত সূর্যাস্ত আর জাতিস্মর স্নায়ু

তাকে কানে কানে বলি – বর্ণময় হও; ঋকধ্বনির পাখিরা তৎসম হয়ে যায়

ত্বকে তখন ফোঁটা ফোঁটা শ্রমের নোটেশন

তারাও মাটিতে দাঁড়িয়ে বৃষ্টিপাত দেখছে আর সবুজ হয়ে যাচ্ছে খয়েরি রঙের দুপুর, বিকলাঙ্গ পাখিটিও উড়ছে নিঃস্ব শিমুলের উপর

শীত শীত অভ্যাসে ত্বকে তখন ফোঁটা ফোঁটা শ্রমের নোটেশন

অসমাপিকায় বিনীত হতে হতে জলে ভিজিয়ে নিচ্ছে লবনাক্ত ব্রহ্মতালু

ব্যর্থদিনের গরলপাত্রে অপেক্ষা করে লাইভ বীজতলার অলংকরণ

আমি কি সেই জন্মগত প্রিয়তম

নিজেকে সেঁকে নিতে নিতে চিরায়ত আগাছার বেগুনি ফুল দেখি

অতএব ফোকাসহীন স্বাদকোরক ঝাপসা হয়ে যায়

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল। বহুদিন ধরে লিখছেন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পত্রিকায়। এ পর্যন্ত প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: নিঃসঙ্গ নাভিচন্দন – ২০২২, মনস্কাম ছুঁয়ে দেখো – ২০২১, জাম রঙের পুরুষ - ২০১৯, হরিত প্রাণের কম্পাঙ্ক - ২০১৮, তিলক জন্মের ছায়া - ২০১৫, কালো নৌকার তৃষ্ণা - ২০১৩, আঁধারের পাঁজর - ২০১২, আঁধারের পাঁজর - ২০১২, সজনেফুল ও নিঃশর্ত সমর্পণ - ২০১১, সজনেফুল ও নিঃশর্ত সমর্পণ - ২০১১, খরানদীর বৃষ্টি সম্ভব - ২০১০, মানুষের নদী - ২০০০, হঠাৎ হঠাৎই - ১৯৯৮
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!