ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ: ‘মানবিক বিরতি’ চায় যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া চায় ‘যুদ্ধবিরতি’

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন
গত ৭ অক্টোবর হামাস-শাসিত গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বিমান হামলা শুরুর হয়, যা এখনও চলছে। ছবি সংগৃহীত

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ: ‘মানবিক বিরতি’ চায় যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া চায় ‘যুদ্ধবিরতি’

ইসরায়েল-হামাসের চলমান যুদ্ধে গাজা উপত্যকার সাধারণ ফিলিস্তিনিদের কাছে জরুরি ত্রাণসামগ্রী পৌঁছাতে সেখানে ‘মানবিক বিরতি’ ঘোষণার প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র অন্যদিকে রাশিয়া তার আগের ‘যুদ্ধবিরতি’ প্রস্তাবের পক্ষেই অনড় রয়েছে।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে জাতিসংঘের রুশ প্রতিনিধি ভাসিলি নেবেনজিয়া পরিষদের বৈঠকে রাশিয়ার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘পুরো বিশ্ব আশা করছে যে নিরাপত্তা পরিষদ শিগগিরই গাজায় নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করবে।’

গাজার আবাসিক এলাকায় হামলা ইসরায়েলের, নিহত ৩০
ইসরায়েলের হামলার পর ধ্বংসাবশেষ উপর দিয়ে হেঠে যাচ্ছেন কয়েকজন নারী ও শিশু। ছবি আল জাজিরা

গত ১৬ অক্টোবর নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে গাজায় যুদ্ধ বিরতির আহ্বান জানিয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাশিয়া; তবে অপর দুই স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের আপত্তির কারণে সেই প্রস্তাব পাস হতে পারেনি।

তবে এবারও সেই প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির জাতিসংঘ প্রতিনিধিদলের এক কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানান, এই মুহূর্তে গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হলে তা থেকে ফায়দা তুলবে হামাস। উল্লেখ্য, বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জন কিরবিও হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে একই কথা বলেছেন।

তবে মঙ্গলবারের বৈঠকে রাশিয়া সেই প্রস্তাবটি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানোর পর আরব বিশ্বের পক্ষ থেকে সেই প্রস্তাবে দৃঢ় সমর্থন জানান বৈঠকে উপস্থিত মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শৌকরি। তিনি বলেন, ‘গাজায় যুদ্ধ থামাতে কোনো রেজোল্যুশন গঠনে নিরাপত্তা পরিষদের অপারগতা এবং দ্বিতীয়বারের মতো যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হতে না পারা খুবই দুঃখজনক।’

জাতিসংঘের যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি দলের ওই কর্মকর্তা অবশ্য বলেছেন, যুদ্ধ বিরতির পক্ষে না হলেও গাজা উপত্যকার বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের জন্য ত্রাণ সরবরাহ নিরাপদ করার জন্য তার দেশ গাজায় মানবিক বিরতির পক্ষে।

Untitled 1 79 ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ: ‘মানবিক বিরতি’ চায় যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া চায় ‘যুদ্ধবিরতি’
ইসরায়েলি হামলায় আহত ২ ফিলিস্তিনি বসে আছেন, এসময় রক্ত বের হতে দেখা যায়। ছবি আল জাজিরা

রয়টার্সকে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘যুদ্ধ বিরতি একটি আনুষ্ঠানিক ব্যাপার; তবে এই মুহূর্তে গাজায় যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করা হলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে হামাস।’

‘তবে যুদ্ধ বিরতির পক্ষে না থাকলেও আমরা গাজায় মানবিক বিরতির পক্ষে। এটি যুদ্ধবিরতির চেয়ে অনেক কম আনুষ্ঠানিক এবং এর ফলে একদিকে গাজায় বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের কাছে নিরাপদে ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হবে, অন্যদিকে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারও বজায় থাকবে।’

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেস সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সেখানকার ভূখণ্ডে প্রবেশ করে কয়েক শ হামাস যোদ্ধা। তার আগে ভোর বেলা থেকে সকাল পর্যন্ত ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে প্রায় ৫ হাজার রকেট ছুড়েছিল হামাস।

ইসরায়েলের ভূখন্ডে প্রবেশের পর নির্বিচারে গুলি চালানোর পাশাপাশি ২ শতাধিক ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা।

গাজায় বাস্তুচ্যুত ১০ লাখ মানুষ : জাতিসংঘ
উপর একটি বহুতল ভবণের ধ্বংসাবশেষ। ছবি এপি

এই হামলার জবাবে ওই দিন থেকেই গাজায় বিমান অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। সেই সঙ্গে গাজার পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়, বন্ধ করে দেওয়া হয় মিসর ও গাজার সীমান্তপথ রাফাহ ক্রসিংও, যা গাজার ‘লাইফ লাইন’ নামে পরিচিত। গত শনিবার অবশ্য খুলে দেওয়া হয়েছে এই ক্রসিং।

গত ১৮ দিনের যুদ্ধে এ পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। অন্যদিকে গাজায় নিহত হয়েছেন ৫ হাজার ৭৯১ জন ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের সংখ্যা ২ হাজার ৩৬০ জন।

৩৬৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের উপত্যকা গাজায় বসবাস করেন প্রায় ২৩ লাখ ফিলিস্তিনি। দারিদ্র্য ও বেকারত্বপীড়িত এই ফিলিস্তিনিদের এক তৃতীয়াংশ সরাসরি জাতিসংঘ ও অন্যান্য দাতা দেশ ও সংস্থার ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।

সূত্র : রয়টার্স

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!