বাংলাদেশে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জেএমবিএফ

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন
ছবি সংগৃহীত

বাংলাদেশে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জেএমবিএফ

জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ ইন ফ্রান্স (জেএমবিএফ)সম্প্রতি ২০২২ সালে বাংলাদেশে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংসতার প্রবণতা সংক্রান্ত বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে আইনঅজীবীরা পেশাগত দায়িত্ব পালনে যে সকল সহিংসতা ও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে তাঁর একটি ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে এবং উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মোকাবেলায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আহ্বান জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার ( ১০ আগস্ট ) ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি একটি যুগান্তকারী প্রচেষ্টা যা বাংলাদেশে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংসতার উদ্বেগজনক ঘটনাগুলির উপর আলোকপাত করেছে।

প্রতিবেদনটিতে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত শারীরিক আক্রমণ, হামলা, মারধর, খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, বানোয়াট মামলার জড়িত, গ্রেপ্তার, হুমকি, ভয় দেখানো, হত্যার চেষ্টা এবং বিচারিক হয়রানি মত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করেছে।

প্রতিবেদনে প্রকাশিত পরিসংখ্যানের থেকে জানা যায় যে, বাংলাদেশে ২০২২ সালে সর্বমোট ৫০টি পৃথক ঘটনায় ৮৮ জন আইনজীবী সহিংসতার শিকার হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৮২জন পুরুষ আইনজীবী এবং ৬ জন মহিলা আইনজীবী বিভিন্ন ধরনের সহিংসতার শিকার হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে একটি গভীর উদ্বেগ জানানো হয়েছে।

সহিংসতার শিকার আইনজীবীর মধ্যে ৯ জন আইনজীবী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলেন, ৬ জন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর সাথে এবং অন্য আইনজীবীদের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা প্রকাশ্যে পাওয়া যায়নি বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

২০২২ সালে বাংলাদেশে ৩জন আইনজীবী খুন, ১৬ জন শারীরিক আক্রমণ এবং ৪ জন আইনজীবী হত্যা প্রচেষ্টার শিকার হয়েছেন। তদুপরি, ১৫ জন আইনজীবীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে রাখা হয়েছে। একজন আইনজীবীকে জোড়পূর্বক অপহরণ করে চাঁদার দাবীতে নগ্ন ছবি তুলতে বাধ্য করা হয়েছে।

তাছাড়া ৪ জন আইনজীবীকে তাদের আইনজীবী সমিতি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং অন্য একজন আইনজীবী বিচারিক হয়রানির সম্মুখীন হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। আশ্চর্যজনকভাবে, একজন আইনজীবী তাঁর সিনিয়র আইনজীবী দ্বারা বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ করেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

দৈহিক সহিংসতার বাইরেও প্রতিবেদনটিতে আইনজীবীদের বানোয়াট ফৌজদারি মামলায় জড়িত করা একটি কষ্টদায়ক বিষয়ও উল্লেখে করেছে।২০২২ সালে এ ধরনের ২৩টি মামলায় মোট ৬১ জন আইনজীবীকে জড়ানো হয়েছে।

যাদের মধ্যে উদ্বেগজনকভাবে ৫জন আইনজীবীকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, তার পরিবারের সদস্য এবং ইসলাম ধর্মীয় নবী মুহাম্মদের কার্যকলাপের সমালোচনা করার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে মামলায় জড়ানো হয়ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ঢাকা বিভাগে ২১টি, রাজশাহী বিভাগে ১২টি, চট্টগ্রামে ৯টি, সিলেটে ৩টি, খুলনায় ২টি এবং ময়মনসিংহ, রংপুরবরিশাল বিভাগে একটি করে ঘটনা ঘটেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ ইন ফ্রান্স (জেএমবিএফ) প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশে আইনজীবীদের অবনতিশীল পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আহ্বান জানিয়েছে।

আইনজীবীদের প্রতি সহিংসতা রোধ করতে এবং আইনজীবীদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সরকার, আইনী সংস্থা এবং সুশীল সমাজ সহ সকল স্টেকহোল্ডারদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে জোর দিয়েছে প্রকাশিত প্রতিবেদনে।

জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ ইন ফ্রান্স (জেএমবিএফ) এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বিশিষ্ট মানবাধিকার আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম নেটওয়ার্ক সদস্য ও উন্নয়ন অংশীদারদের উল্লেখিত প্রতিবেদন প্রস্তুতে তাদের অবদানের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

পাশাপাশি বাংলাদেশে আইনজীবীরা যেন সকল প্রকার সহিংসতা ও বলপ্রয়োগমূক্ত পরিবেশে নিরপেক্ষ ও নির্ভিকভাবে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে পারে সে পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য আইনজীবী সুরক্ষা আইন প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!