ওয়াগনার প্রধান প্রিগোশিন রাশিয়াতে আছেন: বেলারুসের প্রেসিডেন্ট

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন
প্রিগোশিনের নেতৃত্বে ওয়াগনার যোদ্ধারা রাশিয়ার রোস্তভ শহর দখল করে নিয়েছিল। ছবি রয়টার্স

ওয়াগনার প্রধান প্রিগোশিন রাশিয়াতে আছেন: বেলারুসের প্রেসিডেন্ট

রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন – যিনি গত মাসে স্বল্পস্থায়ী এক বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন- এখন বেলারুসে নয়, রাশিয়াতে আছেন বলে জানিয়েছেন বেলারুসের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো

বিদ্রোহ চলাকালে প্রিগোশিনকে শেষবারের মতো রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় রোস্তভ-অন-ডন শহরে দেখা গিয়েছিল। এর পর থেকে তার অবস্থান নিয়ে অনেক জল্পনা কল্পনা শোনা গেছে।

ওয়াগনার প্রধান প্রিগোশিন রাশিয়াতে আছেন: বেলারুসের প্রেসিডেন্ট
বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো। ছবি এপি

বেলারুসের নেতার মধ্যস্থতায় ওই বিদ্রোহের অবসান ঘটে এবং সমঝোতায় বলা হয় যে প্রিগোশিনের বিরুদ্ধে যেসব মামলা দায়ের করা হয়েছিল সেগুলো প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে এবং তিনি ও তার সৈন্যরা বেলারুসে চলে যাবেন।

মাত্র এক সপ্তাহ আগে মি. লুকাশেঙ্কো, যিনি ১৯৯৪ সাল থেকে বেলারুসের ক্ষমতায় রয়েছেন, বলেছিলেন প্রিগোশিন বেলারুসে গিয়ে পৌঁছেছেন।

কিন্তু আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের তিনি বললেন: “প্রিগোশিন সেন্ট পিটার্সবার্গে আছেন। তিনি বেলারুসের ভূখণ্ডে নেই।”

কিন্তু বিবিসি প্রিগোশিনের ব্যক্তিগত বিমানের চলাচলের ওপর নজর রাখছিল। তাতে দেখা গেছে জুলাই মাসের শেষের দিকে তার বিমানটি বেলারুসে গিয়ে পৌঁছালেও, সেদিন সন্ধ্যাবেলাতেই আবার রাশিয়াতে ফিরে গেছে।

এর পর থেকে এই বিমানটি বেশ কয়েকবার মস্কো ও সেন্ট পিটার্সবার্গের মধ্যে চলাচল করেছে, কিন্তু তাতে প্রিগোশিন ছিলেন কি না সেটা পরিষ্কার নয়।

বেলারুসের নেতা মি. লুকাশেঙ্কো ওয়াগনার প্রধান প্রিগোশিনের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন, বিবিসির পক্ষ থেকে সেটাও যাচাই করে দেখা সম্ভব হয়নি।

মি. লুকাশেঙ্কো বৃহস্পতিবার আরো বলেছেন “আমি যতো দূর জানি” ওয়াগনারের বাকি যোদ্ধারাও তাদের ঘাঁটিতেই অবস্থান করছে- যার মধ্যে হয়তো রয়েছে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল অথবা রাশিয়ার ক্রাস্নোদার অঞ্চলের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।

ওয়াগনার প্রধান প্রিগোশিন রাশিয়াতে আছেন: বেলারুসের প্রেসিডেন্ট
ইয়েভগেনি প্রিগোশিন ছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের একজন। ফাইল ছবি রয়টার্স

বেলারুসের নেতা বলছেন ওয়াগনারের কিছু যোদ্ধাকে যে বেলারুসে আশ্রয় দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল সেটা এখনও বহাল আছে। তিনি তাদেরকে সাবেক সোভিয়েত আমলের বেশ কিছু সামরিক স্থাপনা ব্যবহার করারও প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

প্রিগোশিন ও তার যোদ্ধাদের বেলারুসে আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে বেলারুশে প্রতিবেশী ও নেটোর সদস্য দেশগুলোর পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল।

“কিন্তু ওয়াগনারের স্বপ্ন ভিন্ন,” বলেন মি. লুকাশেঙ্কো। “সে বিষয়ে নিশ্চয়ই আমি আপনাদের কিছু বলবে না। তাদেরকে স্থানান্তরের বিষয়টি এখনও সমাধান হয়নি।”

মি. লুকাশেঙ্কো বলেন ওয়াগনারের যোদ্ধাদের বেলারুসে চলে আসার মধ্যে তিনি কোনো ধরনের ঝুঁকি দেখেন না। এবং তিনি মনে করেন না যে এই যোদ্ধারা তার দেশের বিরুদ্ধে কখনও অস্ত্র তুলে ধরবে।

ওয়াগনার গ্রুপ একটি বেসরকারি বাহিনী যারা রাশিয়ার কাছে ভাড়াটে সৈন্য সরবরাহ করছে। ওয়াগনারের যোদ্ধারা রুশ সেনাবাহিনীর নিয়মিত সৈন্যদের পাশাপাশি ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে।

সেনা ঘাটতি কমাতে রাশিয়া ভাড়াটে বাহিনীর ওপর নির্ভরতা বাড়াচ্ছে
ইউক্রেন যুদ্ধে আলোচনায় এসেছে ওয়াগনার গ্রুপ। ছবি: ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল

প্রিগোশিনের নেতৃত্বে বিদ্রোহের সময় ওয়াগনারের যোদ্ধারা ইউক্রেনের ক্যাম্প থেকে রুশ সীমান্ত পার হয়ে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় রোস্তভ-অন-ডন শহরে ঢুকে পড়ে এবং সেখানে কিছু সামরিক স্থাপনা দখল করে নেয়।

ওয়াগনারের যোদ্ধারা এর পরে রাজধানী মস্কোর অভিমুখে অগ্রসর হতে থাকে। এই পরই ক্রেমলিন রাজধানীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে।

প্রিগোশিন রুশ সামরিক নেতৃত্বের সমালোচনা করে আসছিলেন। তার অভিযোগ ছিল যে তার বাহিনীকে যুদ্ধ করার জন্য যথেষ্ট পরিমাণে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করা হচ্ছে না।

ওয়াগনার প্রধান রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং জেনারেল ভ্যালেরি গেরাসিমভের তীব্র সমালোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যর্থ পরিকল্পনার অভিযোগ আনেন।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই বাহিনীর বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ এনেছেন। কিন্তু যে সমঝোতার অধীনে এই বিদ্রোহের সমাপ্তি ঘটে তাতে প্রিগোশিনকে নিরাপত্তা দেওয়ার পাশাপাশি ওয়াগনারের বিরুদ্ধে আনা ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।

বাখমুতের যুদ্ধে ওয়াগনারের ২০ হাজার সেনা নিহত হয়েছে
রুশ ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের কয়েকজন সদস্য। ফাইল ছবি

এই বাহিনীর যোদ্ধাদের বলা হয় যে তারা রাশিয়ার নিয়মিত সেনাবাহিনীর সঙ্গে চুক্তি করতে পারে অথবা যার যার বাড়িতে, কিম্বা বেলারুসেও চলে যেতে পারে।

এর আগে মি. লুকাশেঙ্কো সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে ওয়াগনারের ভাড়াটে সৈন্যরা যদি তাদের নেতার সঙ্গে যোগ দিতে চায় তাহলে তারা বেলারুসের পরিত্যক্ত একটি সামরিক ঘাঁটিতে গিয়ে থাকতে পারে।

সম্প্রতি তোলা স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে রাজধানী মিন্সকের কাছে সাবেক একটি সামরিক ঘাঁটিতে তাঁবু বসানো হচ্ছে। তবে ওয়াগনারের যোদ্ধারা সেখানে গেছে কি না সেটা স্পষ্ট নয়।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

বিষয়:
এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!