পশ্চিম তীরে শরণার্থী ক্যাম্পে ইসরায়েলি হামলায় আট ফিলিস্তিনি নিহত

সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন

পশ্চিম তীরে শরণার্থী ক্যাম্পে ইসরায়েলি হামলায় আট ফিলিস্তিনি নিহত

অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনীর এক বড় আকারের সামরিক অভিযানে এ পর্যন্ত ৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, বলছেন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা। আহতের সংখ্যা ৫০-এরও বেশি।

প্রায় ১৪,০০০ ফিলিস্তিনির বাসস্থান এই জেনিন ক্যাম্পটির ওপর ব্যাপক ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী এবং এর পর হাজার হাজার সৈন্য পাঠিয়েছে – যার ফলে এখন রাস্তায় রাস্তায় বন্দুকযুদ্ধ হচ্ছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে তারা জেনিন এলাকায় ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামোর’ ওপর আঘাত হানছে এবং ২০ জন ফিলিস্তিনিকে আটক করা হয়েছে। কিন্তু ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী মোহামেদ শেতায়েহ বলেছেন, ইসরায়েল ক্যাম্পটি ধ্বংস করে এখানকার বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুত করার চেষ্টা করছে।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, অভিযান শুরু করার পর এ পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আট ব্যক্তি নিহত হয়েছে এবং ৫০ জন আহত হয়েছেন – যার মধ্যে ১০ জনের অবস্থা গুরুতর।

- বিজ্ঞাপন -

জেনিনের বৃহৎ শরণার্থী শিবিরটির কেন্দ্রস্থলে একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের ওপর ড্রোন হামলা হয়েছে।

সেখান থেকে বিবিসির ইয়োলান্দে নেল জানাচ্ছেন, গত কয়েক বছরের মধ্যে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় আক্রমণগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।

পশ্চিম তীরে শরণার্থী ক্যাম্পে ইসরায়েলি হামলায় আট ফিলিস্তিনি নিহত
জেনিনের রাস্তায় টায়ার পুড়িয়ে প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীরা। ছবি রয়টার্স

তিনি জানান, নিয়মিত বিরতিতে জোরালো বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। আরো শোনা যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন ও উড়ন্ত ড্রোনের আওয়াজ।

প্রায় ৪০,০০০ লোকের শহর জেনিনে আগেই একটি হরতাল ডাকা হয়েছিল, সেকারণে রাস্তাঘাট একেবারেই ফাঁকা। ক্যাম্প এলাকার আকাশে বড় বড় ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যাচ্ছে।

একজন অ্যাম্বুলেন্স চালক আল আহমদ রয়টার্স বার্তা সংস্থাকে বলেছেন, পরিস্থিতি এখন আসল যুদ্ধক্ষেত্রের মত মনে হচ্ছে, এবং অ্যাম্বুলেন্সগুলো আহত লোকে ভর্তি হয়ে হাসপাতালের দিকে যাচ্ছে।

- বিজ্ঞাপন -

লড়াইয়ের কারণে জেনিন শিবিরটি বন্ধ করে দেয়ায় অ্যাম্বুলেন্সগুলোও সেখানে ঢুকতে হিমশিম খাচ্ছে।

ইসরায়েলি বাহিনী এ পর্যন্ত সাত জন ফিলিস্তিনি নিহত হবার কথা বলেছে। ইসরায়েলি পরররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেন বলেছেন, তাাদের লক্ষ্যবস্তু সাধারণ ফিলিস্তিনিরা নয় বরং জেনিনে এবং শরণার্থী শিবিরে অবস্থানরত জঙ্গী গ্রুপগুলো যারা তার ভাষায় ইরানের পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে।

ফিলিস্তিনি নেতৃত্বের এক জরুরি বৈঠক ডেকেছেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস

- বিজ্ঞাপন -
পশ্চিম তীরে শরণার্থী ক্যাম্পে ইসরায়েলি হামলায় আট ফিলিস্তিনি নিহত
জেনিন শরণার্থী শিবিরে ঢোকার মুখে দাঁড়ানো ফিলিস্তিনি অ্যাম্বুলেন্স। ছবি রয়টার্স

জেনিনের কিছু রাস্তায় ফিলিস্তিনিরা টায়ার পুড়িয়ে ইসরায়েলি অভিযানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে। ইসরায়েলি সামরিক জীপের দিকে তরুণ ফিলিস্তিনিরা পাথর ছুঁড়লেই সৈন্যরা পাল্টা গুলি করছে।

ইয়োলান্দে নেল জানাচ্ছেন, প্রচণ্ড বন্দুক যুদ্ধের মধ্যে জেনিন ব্রিগেড নামে একটি ফিলিস্তিনি গ্রুপ জানিয়েছে, তারা তাদের শেষ নিঃশ্বাস ও বুলেট থাকা পর্যন্ত লড়াই করে যাবে।

কয়েকটি ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গ্রুপ মিলে এই জেনিন ব্রিগেড গঠিত বলে জানা যায়।

পশ্চিম তীরের রামাল্লাতেও একটি বিক্ষোভ চলাকালে একজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

পশ্চিম তীরে শরণার্থী ক্যাম্পে ইসরায়েলি হামলায় আট ফিলিস্তিনি নিহত
ইসরায়েলি হামলায় আহত একজন ফিলিস্তিনিকে স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাওয়া হয়। ছবি রয়টার্স

জেনিন শহরের অবস্থান অধিকৃত পশ্চিম তীরের উত্তর দিকে এবং এই ক্যাম্পটি ১৯৫০এর দশকের শুরুর দিকে স্থাপন করা হয়েছিল -যাতে ১৯৪৮-৪৯ সালের যুদ্ধের সময় বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দেয়া হয়।

গত এক বছরের মধ্যে জেনিনের শরণার্থী শিবিরের ওপর একাধিক ইসরায়েলি সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে, এবং ইসরায়েলিদের লক্ষ্য করে বেশ কিছু গুলিবর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে।

ফিলিস্তিনিদের দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সময় এই এলাকাটিতে ব্যাপক গোলযোগ হয়।

২০০২ সালের এপ্রিলে ইসরায়েলি বাহিনী এখানে এক পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান চালায় যাতে কমপক্ষে ৫২ জন ফিলিস্তিনি এবং এবং ২৩ জন ইসরায়েলি সৈন্য নিহত হয়।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
মন্তব্য নেই

Log In

Forgot password?

Don't have an account? Register

Forgot password?

Enter your account data and we will send you a link to reset your password.

Your password reset link appears to be invalid or expired.

Log in

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!