জরুরিভিত্তিতে ৫৪ দেশে ঋণ সহায়তা দরকার: জাতিসংঘ

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন

বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি দরিদ্র মানুষের বসবাস রয়েছে এমন অন্তত ৫৪টি দেশে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। চলমান এই সংকট সমাধানের জন্য জরুরিভিত্তিতে ঋণ সহায়তা দরকার বলে মঙ্গলবার জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

নতুন প্রতিবেদনে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, উন্নয়নশীল কয়েক ডজন দেশ দ্রুতই গুরুতর আকার ধারণ করা অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। আর এই সংকটে বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের ‘নিষ্ক্রিয়তার ঝুঁকি ভয়াবহ’ হতে পারে।

ইউএনডিপি বলেছে, অবিলম্বে ত্রাণ সহায়তা সরবরাহ করা না হলে অন্তত ৫৪টি দেশে দারিদ্র্যের মাত্রা চরম বৃদ্ধি পাবে। একই সাথে ‘জলবায়ু অভিযোজন এবং সংকট’ প্রশমনে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ দরকার।

ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকায় এটি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংক এবং ওয়াশিংটনে জি২০ জোটের অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকের আগে প্রকাশিত ইউএনডিপির প্রতিবেদনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরা হয়েছে।

বৈশ্বিক এই অর্থনৈতিক সংকট সম্পর্কে বার বার সতর্ক করে দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনও পদক্ষেপ দেখা যায়নি এবং যে কারণে ঝুঁকি আরও বাড়ছে, জেনেভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই মন্তব্য করেছেন ইউএনডিপির প্রধান অচিম স্টেইনার।

তিনি বলেছেন, ‘এই সংকট তীব্রতর হচ্ছে এবং বিশ্বের কয়েক ডজন দেশে ছড়িয়ে পড়ার হুমকি রয়েছে।’

সংস্থাটি বলেছে, দরিদ্র ঋণগ্রস্ত দেশগুলো একীভূত অর্থনৈতিক চাপের সম্মুখীন হচ্ছে এবং অনেকের জন্য তাদের ঋণ পরিশোধ বা নতুন অর্থায়নের ব্যবস্থা করা অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে।

ইউএনডিপি বলেছে, বাজার পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যাচ্ছে। ধারাবাহিক রাজস্ব ঘাটতি, আর্থিক সংকোচন ও প্রবৃদ্ধির ধীরগতি বিশ্বজুড়ে অস্থিরতা বাড়িয়ে তুলছে। জাতিসংঘের এই সংস্থা বলেছে, করোনাভাইরাস মহামারি আঘাত হানার অনেক আগেই ক্ষতিগ্রস্ত অনেক দেশেই ঋণ সংকট মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করেছিল।

সংস্থাটি বলেছে, গত দশকে ঋণের দ্রুত বৃদ্ধিকে ধারাবাহিকভাবে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির সময় উন্নয়নশীল দেশগুলোর বোঝা হালকা করার জন্য ঋণ পরিশোধের স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। মহামারী চলাকালীন জি২০’র সাধারণ কাঠামোর আওতায় ভারী ঋণগ্রস্ত দেশগুলোকে তাদের ঋণ পরিশোধের ঢেলে সাজানো ব্যবস্থার তেমন অগ্রগতিও দেখা যাচ্ছে না। বরং তাদের এই ব্যবস্থা শামুকের গতিতে এগিয়ে চলছে।

ইউএনডিপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫৪টি দেশের মধ্যে অন্তত ৪৬টি দেশ ২০২০ সালে মোট ৭৮২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সরকারি ঋণ সংগ্রহ করেছে। আর এই ঋণের এক তৃতীয়াংশের বেশি একাই নিয়েছে আর্জেন্টিনা, ইউক্রেন এবং ভেনিজুয়েলা।

পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ আকার ধারণ করছে। বিশ্বের ১৯টি উন্নয়নশীল দেশের ঋণের বাজার এখন কার্যকরভাবে বন্ধ হয়েছে। এর মধ্যে ১০টি দেশের ঋণপ্রাপ্তি বন্ধ হয়ে গেছে চলতি বছরের শুরুর দিকেই।

ইউএনডিপির প্রধান অর্থনীতিবিদ জর্জ গ্রে মোলিনা সাংবাদিকদের বলেছেন, উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে অন্তত এক তৃতীয়াংশ ইতোমধ্যে তাদের ঋণের পরিমাণকে ‘উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি, চরম অনুমানমূলক বা খেলাপি’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে। তিনি বলেছেন, ঋণের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো হলো শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, তিউনিসিয়া, চাদ এবং জাম্বিয়া।

সূত্র: এএফপি, রয়টার্স।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!