শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে অযৌক্তিক: শিক্ষা উপমন্ত্রী

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে “অযৌক্তিক” বলে বর্ণনা করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। তিনি বলেন, “এমন দাবি সম্পর্কে রাষ্ট্রের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়।” রবিবার (২৩ জানুয়ারি) বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, “অতি উৎসাহী হয়ে যদি কোনো অযৌক্তিক দাবি উপস্থাপন করা হয় এবং কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ব্যতীত, এমন অযৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কোনো তড়িৎ সিদ্ধান্ত নেওয়া রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব নয়।”

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, “মন্ত্রী মহোদয়ের পক্ষ থেকে আলোচনা করা হচ্ছে। আলোচনার পর আমরা যেটা বুঝতে পারছি, এখানে ইগো সমস্যা বেশি, বাস্তব সমস্যার চেয়ে।”

এর আগে, শনিবার দিবাগত রাত ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে এক ঘণ্টা কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি। এ সময় আন্দোলনকারীরা মন্ত্রীর কাছে সামগ্রিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন।

জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “পর্যায়ক্রমে বিদ্যমান সকল সমস্যার সমাধান করা হবে।” মন্ত্রী তাদেরকে অনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। পরবর্তীতে, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন বলে মন্ত্রীকে রবিবার জানিয়েছেন।

উপমন্ত্রী বলেন, “একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগকৃত আচার্যকে চাইলেই সরিয়ে দেওয়া যায় না। একটা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে সবাইকে যেতে হবে। অভিযোগ সুনির্দিষ্টভাবে উপস্থাপন করলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো। কিন্তু কোনো অর্থনৈতিক বিষয়ে তারা কোনো অভিযোগ তুলতে পারেননি।”

উপমন্ত্রী আরও বলেন, “শিক্ষার্থীদের সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ছাড়া আমরা তাকে বাদ দিতে পারি না। সমাধান যেভাবে চাওয়া হচ্ছে, ভিসিকে এখনই চলে যেতে হবে- সেটা কাম্য নয়।”

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের “একেবারেই অনমনীয়” উল্লেখ করে তিনি বলেন, “একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলার বিষয় থাকে, একজন উপাচার্যকে চাইলেই চলে যেতে বলতে পারি না। এই আন্দোলন সমীচীন নয়। এটা বুঝতে হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাংকিং অনেক উন্নত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বারবার আলোচনার পরও যদি তারা সঠিক পথে না আসেন তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন শিক্ষার্থীরাই।”

বিষয়টি কিভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে উপমন্ত্রী বলেন, “তারা যা চায় আমরা তাই করবো এটা তো সমাধানের উপায় না। আচার্য তো শিক্ষার্থীদের অধীনে চাকরী করেন না। শিক্ষার্থীদের ইচ্ছামতো কি তিনি চলে যাবেন?”

প্রসঙ্গত, দিন দশেক আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রভোস্টের দুর্ব্যবহার এবং হলে বিছানা সংকট ও খাওয়ার সমস্যা সমাধানের দাবিতে প্রভোস্ট জাফরিন আহমদ লিজার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। পরবর্তীতে লিজা পদত্যাগ করলেও বর্তমানে তা ভিসি পদত্যাগের এক দফা আন্দোলনে রূপ নেয়।

পরবর্তীতে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেওয়া ছাত্রীদের উপর হামলা করার অভিযোগ উঠে ছাত্রলীগ কর্মীদের ওপর। পরে ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের বেধড়ক পিটুনি, কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ, সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনা ঘটার পর থেকে আন্দোলন ব্যাপক আকার ধারণ করে। উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি।

এদিকে আন্দোলন শিক্ষার্থীদের একজন বলেছেন, “ভিসি আমাদের সর্বোচ্চ অভিভাবক। আমরা তার কাছে সমস্যার সমাধানের জন্য গিয়েছি, তিনি আমাদের পুলিশের মার খাওয়ায়, গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ফোটে। আপইনি কি এরকম কারও অধীনে থাকতে চাইবেন? ভিসি হিসেবে আমরা তাকে চাই না।”

বিবিসি বাংলার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিভিন্ন সিদ্ধান্তকে ঘিরে অনেকদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, “টং দোকানগুলো ক্যাম্পাস থেকে তুলে দেওয়া হয়েছে। আমাদের এখন খাওয়ার কোনো জায়গা নেই। চা খেতে হলেও রিক্সা ভাড়া দিয়ে ক্যাম্পাসের গেটে যেতে হয়। ফুডকোর্টের খাবার আমরা কয়জন খাওয়ার সামর্থ্য রাখি? ওখানে খাবারের অনেক দাম।”

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!