প্রকাশিত হল ‘রাউলে পেপারস্’। হইচই পড়ে গেল সারা দেশে। রাতারাতি ছড়িয়ে পড়ল কবি রাউলের খ্যাতি।
কিন্তু রাউল কে?
মুখ খুলল এক ছোট্ট কিশোর। সে বলল, রাউলে হলেন মধ্যযুগীয় এক ধর্মযাজক। বহু বছর আগে এগুলো লিখে তিনি সেগুলো ত্বন্দি করে রেখে গিয়েছিলেন পুরনো গির্জার একটা সিন্দুকে। উদ্ধার করেছে সে। আছে আরও অজস্র লেখা।
ব্যস। এর থেকে আর বেশি কিছু জানা যায়নি। যে কিশোর ছেলেটি এ সব কথা বলেছিল, দারুন দারিদ্র্যের সঙ্গে যুঝে উঠতে না পেরে, একদিন নিরুপায় হয়ে মাত্র আঠেরো বছর বয়সেই সে বেছে নেয় আত্মহত্যার পথ।
![রাউলে পেপারস 38 Untitled design70 রাউলে পেপারস](http://www.samoyiki.com/wp-content/uploads/2021/07/Untitled-design70-1024x724.jpg?v=1625254075)
আবিষ্কারক মারা যেতে পারে, কিন্তু সে তো বলেছিল আরও লেখা আছে। তা হলে তাঁর আবিষ্কৃত সেই লেখাগুলো কোথায়?
খোঁজা শুরু হয় কবি রাউলের বাকি লেখাজোখার। সন্ধান করতে গিয়ে চমকে ওঠেন সবাই। ফাঁস হয়ে যায় আসল রহস্য। আসলে রাউলে নামে কেউ কোনও দিন কখনও কোথাও জস্মিনকালেও ছিলেন না। উন্মেচিত হয় প্রকৃত সত্য। ওই বালক সন্ধান পেয়েছিল ঠিকই, তবে এই লেখাগুলো নয়। পেয়েছিল অন্য কয়েকটা পুরনো পুঁথি। সেগুলো পাঠ করে সে মোহগ্রস্থ হয়ে পড়ে। পৌঁছে যায় সেই পুরনো পৃথিবীতে। যে সময়ে লেখা হয়েছিল এই কবিতাগুলো, ঠিক সেই সময়ে।
![রাউলে পেপারস 39 Untitled design68 রাউলে পেপারস](http://www.samoyiki.com/wp-content/uploads/2021/07/Untitled-design68-1024x724.jpg?v=1625254103)
অবসর সময়ে সে সেই লেখাগুলো পড়ত। দেখে দেখে ঢুকত। নকল করতে করতে শুধু প্রাচীন ভাষা বা ছন্দই নয়, নিখুঁত ভাবে আয়ত্ত করে ফেলেছিল পুঁথির সেই অবিকল হস্তাক্ষরও। এক সময় তার প্রভাবে সেই ভাষা এবং বিষয় নিয়ে নিজেই লিখতে শুরু করে একটার পর একটা কবিতা। কিন্তু তাঁর মতো একটা দরিদ্র বালক কবিতা লিখেছে শুনলে কেউ কি সেটা আগ্রহ নিয়ে পড়বে! ফলে সে নিজেই একটি কাল্পনিক চরিত্র বানিয়ে প্রচার করতেলাগল মিথ্যে এক রাউলের অস্তিত্ব।
পাঠকদের কাছে পৌঁছল নতুন তথ্য। বিস্মিত হল সাহিত্য জগৎ। পণ্ডিতমহল। তাই পরবর্তিকালে আর রাউলে নয়, ‘রাউলে পেপারস্’ গ্রন্থটির জন্য কবি হিসেবে স্বীকৃতি পান স্বল্পায়ুর সেই বালক— টমাস চ্যাটারটন।
![রাউলে পেপারস 40 Untitled design69 রাউলে পেপারস](http://www.samoyiki.com/wp-content/uploads/2021/07/Untitled-design69-1024x724.jpg?v=1625254121)
অনেক বিখ্যাত কবি তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে উৎসর্গ করেছেন তাঁদের গ্রন্থ। যেমন প্রবাদপ্রতিম কবি কিটস উৎসর্গ করেছেন তাঁর ‘এনডিমিয়ন’ কাব্যগ্রন্থ। শেলী উৎসর্গ করেছেন তাঁর অত্যন্ত জনপ্রিয় বই— অ্যাডোনেইস।