শংকর ব্রহ্মর নির্বাচিত ছয়টি কবিতা

সম্পাদক সাময়িকী
সম্পাদক সাময়িকী
3 মিনিটে পড়ুন

স্বপ্নরেণু

মুঠো ভর্তি ফুলরেণু,
রংবেরংয়ের আশা একদিন ভাষা পাবে ভেবে,
তুলে রাখি গোপনে সিন্দুকে, পরম আদরে
নিন্দুকে বলবে কত কথা, তা ও জানি
তবু কাঁথা কানি জড়িয়ে,এসো বসি এখন,
এইবার শীতে, আর কোথাও যাব না বেড়াতে।

অন্তরে তুমি গান ধরবে গুনগুন স্বরে,
মৌমাছিরা ছুটে আসবে ঘরে আদর করবে,
সবরেণু ঝরে পড়বে তোমার উপরে এরপর ফিরে যাবে ওরা,
তারপর কি যে হবে, তা কি কোনদিনও ভেবেছো অন্তরে?

শোন তবে, মুঠো ভর্তি রংবেরয়ের স্বপ্ন আশা
একদিন ভাষা পেয়ে, ফুলের মতো ফুটবে,
তারপর দ্রুত মৌমাছিরা ছুটবে আনন্দে দিশেহারা হয়ে,
তাতে আবার তুমি কুঁকড়ে যেয়ো না ভয়ে।
সে কথা কি তুমি, জানতে চাও তবে?
কোথায়, কি ঘটবে জীবনে কবে?

আপেক্ষিক

জয় পরাজয় সব কিছুই আসলে ছিল আপেক্ষিক
এমন কি আমার ব্যক্তিগত প্রণয়ও।

কে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী?
এই ভেবে প্রতিনিয়ত দুঃখ পেয়েছি,
গাছের ছায়া এড়িয়ে গেছি অবহেলায়
প্রখর রৌদ্রে পুড়ে
খাঁটি সোনা করতে চেয়েছি নিজেকে।

অযথা ভালবাসার টানে
শিরা-উপশিরা ছিঁড়ে গেলেও
তার জন্য কষ্ট পাইনি,
ভেবেছি এটাই ভালবাসার জয়
অথচ ভালবাসতে চেয়ে
পরাজিত হয়েছি বারবার।

আসলে সব কিছুই ছিল আপেক্ষিক
এমন কি আমার ব্যক্তিগত প্রণয়ও।

অপেক্ষায়

পোষ মানাতে না পারলেই
বুকের আগল ভেঙে ভালবাসা ছুটে যায় দিক বিদিকে
আপোষহীন দুঃখের কাছে
কবিরাই সর্বদা ছুটে আসে সন্ধ্যায় আপোষ করতে।

আর খরস্রোতা নদীর বুকে অন্ধকার ঝুঁকে পড়ে
ঠোঁট রাখে নির্দিধায়,
অহংকারে বুকে তার ঢেউ ওঠে।

মনে পড়ে যৌবনের সন্ধিক্ষণে কাউকে বলেছিলাম ভালবাসি
অথচ হৃদয় খুলে তাকে দেখাতে পারিনি ভালবাসা
তৎক্ষণাৎ লোডশেডিংয়ে সারা পাড়া জুড়ে
নেমে এসেছিল অন্ধকার।
সে রমণী অন্ধকারে হারিয়ে গিয়েছিল,
ফিরে আসেনি আর
আমি অপেক্ষায় ছিলাম,আজও অপেক্ষায় আছি তার।

কবির কাজ

সুজন ছাড়া টেকে না সংসার
কারও জন্য ভাবে না কেউ আর,
অন্ধকারে বন্ধ থাকে দ্বার
বিপদকালীন কে আর বল কার?

সবাই বাঁচে স্বার্থ নিয়ে তার
এটাই এখন সংকট সভ্যতার
কেউ যে নেই পাশে দাঁড়াবার
তাই বিপদ বড় মানবিকতার।

দুর্জনের হাতে যে সমাজ
সেই সমাজে কবির বড় কাজ
ছিঁড়ে ফেলে মুখোশপরা সাজ
তুলে ধরা মানবিক আওয়াজ।

প্রলাপ

আমরা বসতাম যে বাগানে, সেখানে উঠেছে কত বাড়ি ,
তবু আমি এমন আনাড়ি
আতি-পাতি সেখানে তোমাকে খুঁজে ফিরি।
মাঝে মাঝে যাই,দেখে আসি,
তোমাকে যে ভালবাসি বলিনি কখনও
তবু দিন দিন আরও মায়াটান বেড়ে যায় যেন।

অনাদর ও উপেক্ষার ভাষা আছে
আমি তা শিখতে পারিনি বলে
আজও পথে হঠাৎ দেখা হলে পরে
একগাল হাসি নিয়ে সামনে দাঁড়াই।
অনায়াসে উপেক্ষার ভান করে তুমি যাও চলে
আমি যে কেন তা পারি না, তুমি দুঃখ পাবে বলে?

খোঁজা

বাহিরে আর রেখো না আমায়
অন্তরে লুকিয়ে রাখো শুধু,
যেন কেউ দেখতে না পায়।
ওই দেখ খাঁচা ছেড়ে পাখি উড়ে যায়
আমিও তো উড়ে যাব হায় দূরে কোথায়,
খুঁজে আর পাবে না তো তুমি।
বাইরে আর ডেকো না আমায়
রাখ তব জুড়ে মনোভূমি,
জানি না যে হারাব কোথায়
খুঁজে আর পাবে না যে তুমি।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!