বিশ্ব গণমাধ্যমে পদ্মা সেতুর খবর

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন

বর্ণিল উৎসবের মধ্য দিয়ে দেশের দীর্ঘতম ও বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বুক চিড়ে বয়ে চলা প্রমত্তা পদ্মার বুকে শনিবার স্বপ্নের এই সেতুর উদ্বোধন করেন তিনি। সেতুর উদ্বোধন ঘিরে সারা দেশের মানুষের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। আর সেই উৎসবের খবর বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমেও ফলাও করে প্রকাশ ও প্রচার করা হয়েছে।

মার্কিন বার্তা সংস্থা এসোসিয়েট প্রেস (এপি) ‘বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতুর উদ্বোধন’ শিরোনামে এক প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার দেশের দীর্ঘতম সেতুর উদ্বোধন করেছেন। রাজনৈতিক সংঘাত আর দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যে এই সেতু তৈরি করতে সময় লেগেছে আট বছর।

এপি লিখেছে, জনসাধারণের জন্য রোববার খুলে দেওয়া হবে সেতুটি। এর মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলার দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার কমে যাবে।

ঢাকা থেকে ৩১ কিলোমিটার দূরে মাওয়া প্রান্তে সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এই সেতু বাংলাদেশের জনগণের। এটি আমাদের আবেগ, সৃজনশীলতা, সাহস, সহনশীলতা এবং অধ্যবসায়ের ফল।’

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেছে, দুর্নীতির অভিযোগ, মানব বলির গুজব ছড়িয়ে পিটুনির মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডসহ নানা ঘটন-অঘটনের পর শনিবার রাজধানী ঢাকার কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু খুলে দিয়েছে বাংলাদেশ।

আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির দীর্ঘতম পদ্মা বহুমুখী সেতুর উদ্বোধন করা হয়েছে। নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার প্রায় আট বছর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি মূল অবকাঠামো নির্মাণের লক্ষ্য পূরণ হয়েছে।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের এই প্রকল্পে কর্মকর্তাদের ঘুষের অভিযোগে কানাডিয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম এসএনসি-লাভালিনকে এক দশকের জন্য বিশ্বব্যাংকের প্রকল্পে দরপত্রে অংশ নেওয়া থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত কানাডার প্রসিকিউটররা এই কোম্পানির নির্বাহীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের প্রমাণ পাননি।

পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা বলি দিতে হবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন গুজব ছড়িয়ে ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ৮ জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ধরনের নানা ঘটনার পর বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জনগণের দীর্ঘদিনের এক স্বপ্নের দুয়ার খুলেছে শনিবার।

‘বাংলাদেশের দীর্ঘতম রেল-সড়ক সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

এতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার দেশের দীর্ঘতম এবং সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেছেন। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের সড়ক-রেল সেতুটি রাজধানী এবং অন্যান্য অঞ্চলের সাথে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সংযোগকারী পদ্মা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে।

বহুমুখী সড়ক-রেল সেতুটি বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। এনডিটিভি লিখেছে, বাংলাদেশের এই সেতুর উদ্বোধন অনেক তাৎপর্য বহন করে। অনেক অর্থনৈতিক বিশ্লেষক বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেও তা উড়িয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে।

সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কারও বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই। তবে আমি মনে করি যারা পদ্মা সেতু নির্মাণ পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন এবং এটাকে ‘পাইপ ড্রিম’ বলেছিলেন, তাদের আত্মবিশ্বাসের অভাব রয়েছে। আমি আশা করি এই সেতু তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া ট্যুডে বলছে, শনিবার পদ্মা নদীর ওপর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার রেল-সড়ক সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিশাল পরিবর্তনের গল্পের শুরু হয়েছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর এটি বাংলাদেশের এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প।

এছাড়াও ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়া, হিন্দুুস্তান টাইমস, আনন্দবাজার, দ্য হিন্দু, মধ্যপ্রাচ্যের গালফ নিউজ, খালিজ টাইমস, মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে বাংলাদেশের বৃহত্তম পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের খবর প্রকাশ করা হয়েছে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

বিষয়:
এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!