সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন

সিলেটে বন্যার আট দিন পেরিয়ে গেলেও সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। বরং ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, বুধবার ও বৃহস্পতিবার রাতে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শুক্রবার ভোর থেকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

টানা ৮ দিন ধরে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেট নগরসহ জেলার ১৩টি উপজেলায় প্লাবিত হওয়া হাজার হাজার গ্রাম পানিতে থৈ থৈ করছে। এতে হাজার হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

অন্যদিকে, ঘরে মজুত করা খাবারও শেষ হয়ে গেছে। অনেকেই নিজের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ কেউ ঘরের ভেতরে মাচা বানিয়ে থাকছেন। এমন হাহাকারের মাঝে বন্যাদুর্গত মানুষ পর্যাপ্ত ত্রাণ পাচ্ছেন না বলেও অনেকে অভিযোগ করেছেন।

স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সিলেটে কমপক্ষে ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি আছেন।
সিলেট নগরের বন্যাক্রান্তরাও খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সংকটে পড়েছেন বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন।

নগরের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া অনেকে বলছেন, তারা প্রয়োজনীয় খাবার সহায়তা পাচ্ছেন না। খাবার সংকটের কারণে তাদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রয়োজনের তুলনায় ত্রাণ বরাদ্দ একেবারেই কম। এ অবস্থায় মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন তারা। একইসঙ্গে বিশুদ্ধ পানিও পাচ্ছেন না তারা। বৃষ্টির পানি জমিয়ে খাবার চাহিদা মেটাচ্ছেন। তাদের প্রশ্ন, “এভাবে আর কতদিন চলবে?”

সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাইদ আহমদ চৌধুরী জানান, রবিবার পর্যন্ত সিলেটে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস আছে। রবিবার দিবাগত রাত থেকে বৃষ্টিপাত কমে পরের দিন সোম ও মঙ্গলবার আকাশ পরিষ্কার হবে। এরপর ফের বৃষ্টিপাত হতে পারে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ওই দিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিপৎসীমার ১.৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় ওই পয়েন্টে পানি ছিল ১৩.৮৫ সেন্টিমিটার। ওই পয়েন্টের বিপৎসীমার ছিল ১২.৭৫ সেন্টিমিটার।

কুশিয়ারা নদীর পানি বুধবার বেলা তিনটা পর্যন্ত বিপৎসীমার ১.৭৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ওই পয়েন্টে বেলা তিনটা পর্যন্ত পানি ছিল ১৭.১৭ সেন্টিমিটার। শেওলা পয়েন্টে ছিল ১৩.৬২ সেন্টিমিটার। সেখানে বিপৎসীমা ১৩.৫ সেন্টিমিটার।

সারি নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। বৃহস্পতিবার বেল ৩টা পর্যন্ত নদীতে পানি ছিল ১১.৪৮ সেন্টিমিটার। ওই নদীর বিপৎসীমার ১২.৩৫ সেন্টিমিটার।

জানা গেছে, ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে গত ৮ দিনে ২ হাজার ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেখান থেকে নেমে আসা ঢলেই বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।

সিলেটে ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে বোরো ধান। বোরোর পর এবার আউশেও আঘাত হানলো বন্যা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের হিসেবে, চলমান বন্যায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আউশ ধানের বীজতলা এক হাজার ৩০১ হেক্টর, বোরো ধান এক হাজার ৭০৪ হেক্টর এবং গ্রীষ্মকালীন সবজির এক হাজার ৪ হেক্টর পানিতে তলিয়ে গেছে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!