সূর্যের উদ্দেশে উড়াল দিলো ভারতের আদিত্য-এল ১

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন
আদিত্য এল১ স্পেসক্রাফটকে বহনকারী রকেট উৎক্ষেপণ এর সময়। ছবি এপি

সূর্যের উদ্দেশে উড়াল দিলো ভারতের আদিত্য-এল ১

সূর্যের কক্ষপথে পরিভ্রমণ ও এ সংক্রান্ত তথ্যের জন্য রওনা হয়েছে ভারতীয় নভোযান আদিত্য-এল ১। শনিবার স্থানীয় সময় বেলা ১২টার দিকে অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটা শহরের লঞ্চপ্যাড থেকে নভোযানটি উৎক্ষেপণ করা হয়।

এই শ্রীহরিকোটা লঞ্চপ্যাড থেকেই গত ১৪ জুলাই চাঁদের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল ‘চন্দ্রযান ৩’। যাত্রার ৩৯ দিন পর ২৩ আগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে অবতরণে সক্ষম হয় নভোযানটি।

Untitled 6 সূর্যের উদ্দেশে উড়াল দিলো ভারতের আদিত্য-এল ১
আদিত্য এল১ স্পেসক্রাফটকে বহনকারী রকেট উৎক্ষেপণ এর পর। ছবি এপি

সেই সাফল্যে ২ সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে সূর্যের কক্ষপথে আদিত্য-এল ১ নভোযানটি পাঠাল ভারত

আমাদের এই সৌরজগতের প্রাণকেন্দ্র সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব ১৪ কোটি ৯৬ লাখ কিলোমিটার। পৃথিবী থেকে উড়াল দেওয়ার পর ১৫ লাখ কিলোমিটার পর্যন্ত যাবে আদিত্য-এল ১, শতকরা হিসেবে যা পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্বের ১ শতাংশ পথ।

এই অভিযানের সার্বিক তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা ভারতের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইসরো জানিয়েছে, এই পথ পাড়ি দিতে আদিত্য-এল ১ সময় নেবে চার মাস।

সংস্কৃত ভাষায় সূর্যের আরেক নাম আদিত্য। সূর্যের কক্ষপথের উদ্দেশে পাঠানো নভোযানটির নাম তাই সূর্যের নামেই রাখা হয়েছে; আর এল ১ আসলে লেগ্রেঞ্জ পয়েন্ট ১’র সংক্ষিপ্ত রূপ। পৃথিবী থেকে রওনা হয়ে ১৫ লাখ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার পর যেখানে গিয়ে থামবে আদিত্য, সেই এলাকাটিকেই সূর্যের লেগ্রেঞ্জ পয়েন্ট বলে উল্লেখ করেছে ইসরো।

Untitled 3 5 সূর্যের উদ্দেশে উড়াল দিলো ভারতের আদিত্য-এল ১
গ্রাফিক্স বিবিসি

ইউরোপের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির সংজ্ঞানুযায়ী, লেগ্রেঞ্জ পয়েন্ট হলো মহাবিশ্বের এমন একটি এলাকা,যেখানে দুই বৃহৎ মহাজাগতিক বস্তু, যেমন সূর্য ও পৃথিবীর মহাকর্ষীয় শক্তি পরস্পরকে বিকর্ষণ করে। আদিত্য-এল ১ যদি তার নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে, তাহলে পৃথিবী যে গতিতে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে— সেই একই গতিতে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে সক্ষম হবে আদিত্যও।

ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরো জানিয়েছে, শ্রীহরিকোটার লঞ্চপ্যাড থেকে উৎক্ষেপণের পর লেগ্রেঞ্জ পয়েন্টে যাওয়ার আগে বেশ কয়েকবার পৃথিবীর কক্ষপথে পরিভ্রমণ করবে আদিত্য-এল ১। এতে সূর্যের কক্ষপথে পৌঁছাতে সুবিধা হবে নভোযানটির।

ইসরো জানিয়েছে, লেগ্রেঞ্জ পয়েন্টে পৌঁছানোর পর সূর্যের তিন স্তর সোলার করোনা (সূর্যের বহিরাবরণ) ফটোস্ফেয়ার (সূর্যের পৃষ্ঠ, খালিচোখে পৃথিবী থেকে আমরা এই অংশটি দেখি) এবং ক্রোমোস্ফেয়ার (ফটোস্ফেয়ার ও সোলার করোনার মধ্যবর্তী অর্ধতরল স্তর) পর্যবেক্ষণ ও এ সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করবে আদিত্য-এল ১। এই কাজের জন্য নভোযানটি প্রয়োজনীয় ৭টি বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম বহন করে নিয়ে যাচ্ছে।

এই অভিযানে ব্যয় কত হয়েছে, সেসম্পর্কিত কোনো তথ্য দেয়নি ইসরো; তবে সরকারি সূত্রে জানা গেছে— গোটা অভিযানের বাজেট ধরা হয়েছে ভারতীয় মুদ্রায় ৩৭৮ কোটি রুপি, অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৯৯ কোটি ২৪ লাখ ৬৯ টাকা।

Untitled 4 5 সূর্যের উদ্দেশে উড়াল দিলো ভারতের আদিত্য-এল ১
মিশনটি সূর্য সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক সক্ষমতার উন্নতি করতে সাহায্য করবে। ছবি বিবিসি

উল্লেখ্য, ১৯৮১ সালে জাপান সূর্যের কক্ষপথে প্রথম নভোযান পাঠিয়েছিল জাপান। সেই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ছিল সূর্যের আকার-আয়তন সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা নেওয়া।

জাপান নভোযান পাঠানোর পর ১৯৯০ সাল থেকে সূর্য অভিযান সংক্রান্ত গবেষণায় গুরুত্ব দেওয়া শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল অ্যারোনেটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা) এবং ইউরোপের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ)।

তাদের এই তৎপরতায় সাফল্য আসে ৩০ বছর পর, ২০২০ সালে। ওই বছর ফেব্রুয়ারি মাসে নাসা ও ইএসএ যৌথভাবে সূর্যের কক্ষপথে একটি নভোযান পাঠাতে সক্ষম হয়।

জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের পর চতুর্থ দেশ হিসেবে সূর্যের কক্ষপথে নভোযান পাঠাল ভারত।

সূত্র : বিবিসি

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!