ভারত: উত্তরপ্রদেশ থেকে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে আসাম যাবে প্রমোদতরী

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন

ভারতের উত্তরপ্রদেশ থেকে আসাম পর্যন্ত নদীপথে বিলাসবহুল প্রমোদতরী চালানো শুরু করতে যাচ্ছে ভারত সরকার। আর এই প্রমোদতরীর ভ্রমণের একটি অংশ হবে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে। আগামী বছরের শুরুতেই এই পরিষেবা শুরু হতে পারে।

ইতোমধ্যেই এই প্রমোদতরী চালানোর প্রস্তাব করেছে ভারত সরকার। শুক্রবার (১১ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস নাউ, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এবং দ্য সেন্টিনেল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তরপ্রদেশের বারাণসী থেকে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে আসামের ডিব্রুগড় পর্যন্ত বিশ্বের দীর্ঘতম বিলাসবহুল নদী ক্রুজ বা প্রমোদতরী চালানোর প্রস্তাব করেছে ভারত সরকার। ভারতের অভ্যন্তরীণ নৌপথের উন্নয়নকে আরও এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে দেশটির সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে এবং আগামী বছরই এই পরিষেবা শুরু করার আশা করা হচ্ছে।

সংবাদমাধ্যম বলছে, একটি একক প্রমোদতরীর মাধ্যমে পর্যটকদের ধর্মীয় আগ্রহ পূরণের সুযোগের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি পর্যটন স্থানকে সংযুক্ত করার জন্য এই প্রকল্পটি ঘোষণা করা হয়েছে। ভারত সরকারের বন্দর, জাহাজ ও জলপথের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এই প্রমোদতরী চালানোর বিষয়টি সামনে এনেছেন।

ভারত সরকারের প্রস্তাবিত এই প্রমোদতরীর নাম ‘গঙ্গা বিলাস’। বিলাসবহুল এই প্রমোদতরীটির গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র এবং বঙ্গোপসাগরের মধ্য দিয়ে উত্তরপ্রদেশের বারাণসী থেকে আসামের ডিব্রুগড় পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে পঞ্চাশ দিন। এই প্রকল্পটি ভারতের পর্যটন এবং পানি-ভিত্তিক সংযোগ উভয় ক্ষেত্রেই যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সংবাদমাধ্যম লাইভমিন্টের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গঙ্গা বিলাস নামের বিলাসবহুল এই প্রমোদতরীটি আগামী বছরের ১০ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করবে এবং বারাণসী থেকে রওনা হয়ে ডিব্রুগড় পর্যন্ত ৪ হাজার কিলোমিটার যাত্রাপথ সম্পন্ন করতে ৫০ দিন সময় নেবে।

এতে আরও বলা হয়েছে, ১০ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করার পর আগামী ১ মার্চ গঙ্গা বিলাস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের ডিব্রুগড় জেলার বগিবিলে পৌঁছাবে। গন্তব্যে পৌঁছানোর আগে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ও বাংলাদেশের ঢাকার ভেতর দিয়ে ভ্রমণ করবে প্রমোদতরীটি।

ভারত সরকারের বন্দর, জাহাজ ও জলপথের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল সংবাদমাধ্যম লাইভমিন্টের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘গঙ্গা বিলাস প্রমোদতরীটি উত্তরপ্রদেশের বারাণসী থেকে আসামের ডিব্রুগড় পর্যন্ত ৫০ দিনের দীর্ঘ একটি ভ্রমণে ২৭টি নদী ব্যবস্থা কভার করবে এবং বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানসহ ৫০ টিরও বেশি পর্যটন স্থান পরিদর্শন করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি হবে বিশ্বের একক কোনো নদী প্রমোদতরীর এককভাবে বৃহত্তম নদী যাত্রা এবং প্রমোদতরীটি ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশের নদী দিয়েই ভ্রমণ করবে।’

সংবাদমাধ্যম বলছে, বারাণসী-ডিব্রুগড় রুটে এই প্রমোদতরীটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলে চালানো হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারতের অভ্যন্তরীণ জলপথ অথরিটি অব ইন্ডিয়া (আইডব্লিউএআই) এই উদ্যোগটির জন্য ইতোমধ্যেই অন্তরা লাক্সারি রিভার ক্রুজ এবং জেএম বাক্সি রিভার ক্রুজের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

গঙ্গা বিলাস প্রমোদতরীর টিকিটের মূল্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ ছাড়াই অপারেটররা নির্ধারণ করবে বলে লাইভমিন্টের রিপোর্টে বলা হয়েছে।

ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল ভরছেন, ‘বিলাসবহুল এই প্রমোদতরীর পরিষেবাটি সকল ধরনের পর্যটকদের সুবিধা দেবে। এছাড়া ভারতীয় ভেসেল অ্যাক্টের সংশোধনের কারণে এই প্রমোদতরীগুলো এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য জাতীয়ভাবে অনুমতি পাবে।’

সংবাদমাধ্যম টাইমস নাউ বলছে, গঙ্গা বিলাস নামের এই বিলাসবহুল প্রমোদতরীটি উত্তরপ্রদেশের বারাণসী থেকে যাত্রা শুরু করবে এবং বক্সার, রামনগর ও গাজিপুর হয়ে যাত্রা শুরুর ৮ম দিনে বিহারের রাজধানী পাটনায় পৌঁছাবে।

পরে প্রমোদতরীটি বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। এখান ফের ভারতে প্রবেশের আগে গঙ্গা বিলাস বাংলাদেশে প্রায় ১১০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করবে। ভারত-বাংলাদেশ প্রোটোকল রুটের অধীনে বাংলাদেশে চলাচল করবে এই প্রমোদতরী।

মূলত ভারত-বাংলাদেশ প্রোটোকল রুট ইতোমধ্যেই গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদীতে দুই দেশকে সংযোগকারী বাণিজ্য ও ট্রানজিট চ্যানেল উন্মুক্ত করে দিয়েছে বলে জানিয়েছে টাইমস নাউ।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!