কাশ্মিরে বিদ্রোহীদের দমনে হিন্দু গ্রামবাসীকে অস্ত্র সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে ভারত

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন
প্রায় ৫ হাজার হিন্দু গ্রামবাসীকে অস্ত্র সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে ভারতীয় সামরিক বাহিনী। ছবি: পিটিআই

কাশ্মিরে বিদ্রোহীদের দমনে হিন্দু গ্রামবাসীকে অস্ত্র সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে ভারত

একটি বোল্ট-অ্যাকশন রাইফেল হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছেন সঞ্জিত কুমার। কাশ্মিরের ঢাংরি গ্রামের বেসামরিক বাসিন্দা তিনি। অল হিন্দু মিলিশিয়া ইউনিটের সক্রিয় সদস্যও সঞ্জিত। তার মতো এরকম প্রায় ৫ হাজার হিন্দু গ্রামবাসীকে অস্ত্র সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে ভারতীয় সামরিক বাহিনী। মূলত কাশ্মিরের বিদ্রোহীদের মোকাবিলা করতে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।

ভারতের দখলে থাকা কাশ্মীরের মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে ৫ লাখেরও বেশি ভারতীয় সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা আছে। কয়েক দশক ধরে চলমান এই বিদ্রোহ দমাতে এবার আরও কঠোর হচ্ছে ভারত সরকার।

কাশ্মিরে বিদ্রোহীদের দমনে হিন্দু গ্রামবাসীকে অস্ত্র সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে ভারত
পৃথিবীর স্বর্গ বলা হয় কাশ্মীরকে। ফাইল ছবি

গত বছর, নতুন এই মিলিশিয়া বাহিনী গঠনের ঘোষণা দেয় ভারত। সঞ্জিত কুমারের গ্রামের পাশেই এক ভয়াবহ হামলার পর এই বাহিনীতে যোগ দেন তিনি।

৩২ বছরের এই পৌরসভার কর্মী বলেন, ‘সেই হামলায় আমরা পুরোপুরি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম।’

- বিজ্ঞাপন -

নিজেকে হিন্দু কমিউনিটির সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করতে কপালে জাফরান রঙের একটি তিলক এঁকে রেখেছেন সঞ্জিত। তিনি বলেন, ‘জাতির সঙ্গে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করবে, তাদের দমন করাই আমার লক্ষ্য।’

প্রায় ৭৫ বছর আগে ভারত-পাকিস্তান বিভক্ত হওয়ার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে বিরোধপূর্ণ অঞ্চল কাশ্মির। দুই দেশই চায় অঞ্চলটির পূর্ণ দখল।

এদিকে কাশ্মিরের সার্বভৌমত্ব দাবি করে অঞ্চলটির বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো। সশস্ত্র সংঘাতে ইতোমধ্যে প্রাণ গেছে অঞ্চলটির হাজার হাজার মানুষের।

সেনাবাহিনী সমর্থিত নবগঠিত মিলিশিয়া সংগঠনটি মূলত বিদ্রোহীদের রোষ থেকে অঞ্চলটির হিন্দু জনগোষ্ঠীদের রক্ষার স্বার্থে গঠন করা হয়েছে। অঞ্চলটিতে মিলিশিয়া বাহিনী গ্রাম প্রতিরক্ষা গার্ড নামে পরিচিত।

কাশ্মিরে বিদ্রোহীদের দমনে হিন্দু গ্রামবাসীকে অস্ত্র সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে ভারত
ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি দল কাশ্মিরে । ফাইল ছবি

কাশ্মিরের হিন্দু জনগোষ্ঠী একদিকে নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে প্রতিরক্ষা নিয়ে সতর্ক, অপরদিকে সশস্ত্র সংঘাতের কারণে সমস্যা আরও বেড়ে যাওয়ার ভয়ে আতঙ্কিত সেখানকার মুসলিম জনগোষ্ঠী।

- বিজ্ঞাপন -

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মুসলিম বলেন, ‘শুধু এক সম্প্রদায়ের হাতে যেভাবে অস্ত্র তুলে দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে আমি আতঙ্কিত। তরুণদের হাতে হাতে অস্ত্র। এতে আর যাই হোক, ভালো কিছু হতে পারে না।’

ক্রোধ চেপে রেখেছেন ঢাংরি গ্রামের বাসিন্দারা। চোখের সামনে হাতে খুন হতে দেখেছেন ৭ প্রতিবেশীকে।

গ্রামটির ৫৫ বছরের বাসিন্দা মুরারি লাল শর্মা বলেন, ‘অস্ত্রসহ অথবা অস্ত্রহীন, সব অবস্থাতেই আতঙ্কিত থাকি আমরা। তবে এবার পাল্টা লড়াই হবে।’

- বিজ্ঞাপন -

এ বিষয়ে ভারতের তথ্যমন্ত্রী কাঞ্চন গুপ্ত বলেন, ‘এক্ষেত্রে উদ্দেশ্য হলো প্রতিরক্ষা, আক্রমণ করা নয়।’

কাশ্মিরে বিদ্রোহীদের দমনে হিন্দু গ্রামবাসীকে অস্ত্র সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে ভারত
রাজৌরির কোটরাঙ্কায় ভিডিসি সদস্যদের প্রশিক্ষণে ভারতীয় সেনা, ছবি: পিটিআই

এর আগে ১৯৯০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে কাশ্মিরের জম্মু অংশে ভারত সরকারের উদ্যোগে মিলিশিয়া বাহিনী গঠন করা হয়। সে সময় সশস্ত্র সংঘাতের তীব্রতা অনেক বেড়ে গিয়েছিল।

গ্রাম প্রতিরক্ষা কমিটির প্রায় ২৫ হাজার সদস্যের হাতে তখন অস্ত্র তুলে দিয়েছিল দেশটির সরকার।

পরবর্তীতে গ্রামের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নৃসংশতা চালানো শুরু করে এই কমিটির সদস্যরা। অন্তত ২১০টি হত্যা, ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া যায় এই কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে।

সূত্র: এএফপি

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

একটি অ্যাকাউন্ট নেই? নিবন্ধন করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!