নারীদের উচ্চশিক্ষা বন্ধ: কাবুলে বিক্ষোভ, ছাত্রদের পরীক্ষা বর্জন, অধ্যাপকদের পদত্যাগ

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন
একদল আফগান নারী তাঁদের অধিকারের জন্য বিক্ষোভ করছে। ফাইল ছবি

বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের নিষিদ্ধ করেছে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় থাকা “কট্টরপন্থী” তালেবান সরকার। উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পথ বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বিক্ষোভ করেছেন নারী। বিক্ষোভ থেকে পাঁচ নারীকে গ্রেপ্তার করেছে তালেবান।

বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিস এক প্রতিবেদনে জানায়, সেইসঙ্গে তিনজন সাংবাদিককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাখার প্রদেশেও এ নিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে বলে জানা গেছে।

গত মঙ্গলবার তালেবান সরকারের উচ্চশিক্ষামন্ত্রী এক চিঠিতে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নারীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে না দেওয়ার নির্দেশনা জারি করেন। তিনি বলেছেন, এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে।

এই নিষেধাজ্ঞার ফলে তালেবান শাসনে আফগানিস্তানে নারীদের শিক্ষার সুযোগ আরও সীমিত হয়েছে। দেশটিতে মাধ্যমিক পর্যায়ের বেশিরভাগ স্কুলে আগেই ছাত্রীদের পড়ানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

মেয়েদের উচ্চশিক্ষার পথ বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে হওয়া বিক্ষোভে পুরুষরাও সমর্থন দিয়েছেন। সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মিলিয়ে প্রায় ৫০ জন অধ্যাপক প্রতিবাদ স্বরূপ পদত্যাগ করেছেন। সেইসঙ্গে বেশ কয়েকজন পুরুষ শিক্ষার্থী প্রতিবাদ হিসেবে পরীক্ষায় অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

এছাড়া তালেবানের এই ঘোষণা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, কাতার, সৌদি আরবসহ বেশ কিছু মুসলিম দেশ এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে।

বিবিসি জানায়, মঙ্গলবার ওই নিষেধাজ্ঞা জারির পর বুধবারই দেশটির বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শত শত নারীকে ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা দেন নিরাপত্তারক্ষীরা।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজন নারী বিবিসিকে বলেন, বিক্ষোভে সময় তালেবান প্রশাসনের নারী কর্মকর্তারা তাদের মারধর করেছেন এবং কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, “তাকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। শেষ পর্যন্ত কোনো রকমে পালিয়ে তিনি গ্রেপ্তার হওয়া এড়ান। আমাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন তালেবানের নারী সদস্য ঢুকে গিয়েছিল। তারা আমাদের কয়েকজনকে মারধর করে, কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।”

আরেকজন জানান, গ্রেপ্তারের পর দুইজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে আরও কয়েকজন এখনো আটক আছেন।

নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধের বিষয়ে তালেবানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, তাদের আলেমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম এবং পরিবেশ মূল্যায়ন করেছেন এবং “যথাযথ পরিবেশ তৈরি” না হওয়া পর্যন্ত নারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া নিষেধ থাকবে।

তালেবানের ভারপ্রাপ্ত উচ্চশিক্ষামন্ত্রী নিদা মোহাম্মদ নাদিম আফগান রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম আরটিএকে বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীরা উপযুক্ত ইসলামিক পোশাক না পরা এবং বিভিন্ন লিঙ্গের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ওঠাবসাসহ বেশ কয়েকটি সমস্যা এই সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাব রেখেছে। নারী শিক্ষার্থীরা হিজাব (ইসলামী পোশাক কোড) পালন করেনি, তারা এমন পোশাক পরে আসছিল যা বেশিরভাগ নারীরা বিয়ের অনুষ্ঠানে পরেন।”

২০২১ সালে আগস্টে “অভ্যুত্থানের মাধ্যমে” পশ্চিমা সমর্থিত সরকারকে উৎখাত করে দ্বিতীয়বারের মতো আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। সেসময় তারা বলেছিল, যুগের আধুনিকায়নের সঙ্গে তাল মেলাতে তারা এবার তাদের কট্টর শাসন ব্যবস্থার অনেক নিয়মই শিথিল করবেন।

কিন্তু তারা সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। বরং দিন দিন তারা তাদের আগের শাসন ব্যবস্থাতে ফিরে যাচ্ছে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!