বিচারহীনতায় বাংলাদেশে বাড়ছে শিশু ধর্ষণের ঘটনা

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন
ছবি: প্রতীকী

বাংলাদেশে শিশু ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলেছে। আইন, প্রচার, সচেতনতা কোনো কিছুই কাজে আসছে না। আর এই ধর্ষণের ঘটনায় বিচারও পাওয়া যাচ্ছে না। ধর্ষকেরা যেন অপ্রতিরোধ্য।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিবার এবং পরিচিত পরিবেশেই শিশুরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে বেশি। এই পরিস্থিতির উন্নতি না হলে শিশুদের ধর্ষকদের হাত থেকে রক্ষা করা কঠিন। আর এই শিশুরা পরবর্তী জীবনে দুঃসহ মানসিক এবং শারীরিক কষ্ট নিয়ে বেড়ে উঠছে।

সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম জানায়, এ বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৫৭৪ জন কন্যা শিশু। এছাড়া যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে আরও ৭৬ জন কন্যাশিশু। এই শিশুরা পাঁচ থেকে ১৮ বছর বয়সের। তবে অধিকাংশের বয়সই ১২ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ধর্ষণের বিচার ১৮০ দিনের মধ্যে শেষ করার বিধি থাকলেও কার্যকর হয় না।

- বিজ্ঞাপন -

জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি বলেন, “এটা পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে হিসেব। কিন্তু বাস্তব চিত্র আরও ভয়াবহ। সামাজিকসহ নানা কারণে অনেক ঘটনায়ই মামলা হয় না। অনেক ঘটনা প্রকাশও করা হয় না।”

এদিকে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের হিসেব বলছে, ২০২১ সালে সারা দেশে ৮১৮ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। যা ২০২০ সালের তুলনায় যা ৩১% বেশি। বেশির ভাগ শিশু ধর্ষণের ঘটনা পারিবারিক পরিবেশে পরিচিতদের মাধ্যমেই হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তারাও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতেই এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

এ বছরের প্রথম আট মাসে গড়ে ৭২ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। যা হারের দিক থেকে ২০২১ সালের চেয়ে বেশি।

অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি বলেন, “সোমবার গাইবান্ধায় পাঁচ বছরের একটি শিশুকে ৫৫ বছর বয়সের এক পুরুষ ধর্ষণ করেছে। এর আগেও সে আরও তিনবার ধর্ষণের দায়ে গ্রেপ্তার হয়েছে। ছাড়া পেয়ে আবারও ধর্ষণ করছে। তাহলে এটা থেকেই বোঝা যায় শিশু ধর্ষণ কেন বাড়ছে। আইন আছে, বিচার নেই। আবার শিশুরা পরিচিত পরিবেশে, পরিবারের মধ্যেই ধর্ষণের শিকার হয় বেশি। এটা অনেক সময়ই প্রকাশ হয় না। প্রকাশ হলেও নানা দিক বিবেচনা করে শেষ পর্যন্ত আপস হয়। ফলে শিশু ধর্ষণ বাড়ছেই।”

তিনি বলেন, “শিশুরা সবচেয়ে দুর্বল। তারা বুঝতেও পারে না। পরিবার থেকে এ ব্যাপারে তাদের সচেতনও করা হয় না। আর পরিবারের লোকজন পরিচিতদের বিশ্বাস করে। যার পরিণতি নেমে আসে শিশুদের ওপর।”

- বিজ্ঞাপন -

শিশুদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর নেটওয়ার্ক অপরাজেয় বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ওয়াহিদা বানু বলেন, “২০১৪ সালের জরিপে দেখা যায় ধর্ষণের ৬০% ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ করে না। ২০১৬ সালে দেখা যায় মেয়েদের ৮০% মামলা করতে যায় না।”

তিনি বলেন, “যে যত বেশি দুর্বল তারাই তত বেশি ধর্ষণের শিকার হয়। তাই শিশু এবং প্রতিবন্ধীরা ধর্ষণের শিকার হয় বেশি। আর পরিচিত পরিবেশ এবং পরিবারের মধ্যে ধর্ষণ বেশি হওয়ার কারণ ধর্ষক জানে এই পরিবেশে শিকার বানানো সহজ। সে এটার সুযোগ নেয়।”

তার মতে, “পারিবারিক শিক্ষা এর জন্য জরুরি। শিশুকে বিষয়টি বুঝাতে হবে। আর তারা আগে মায়ের কাছেই বলে। মা-ও সামাজিক পরিস্থিতির কারণে অনেক সময় তা প্রকাশ করেন না।”

- বিজ্ঞাপন -

তিনি বলেন, “থানা মামলা নিতে চায় না। আর মামলা নিলেও বিচার পাওয়া যায় না। উচ্চ আদালতে ধর্ষণ এবং যৌন হয়রানির ১১ লাখ মামলা ঝুলে আছে। আর নারীদের করা নানা ধরনের মামলা আছে ৩৩ লাখ।”

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

একটি অ্যাকাউন্ট নেই? নিবন্ধন করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!