গান্ধীজির এক জোড়া চশমার দাম ২ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা

সিদ্ধার্থ সিংহ
সিদ্ধার্থ সিংহ
3 মিনিটে পড়ুন
ছবি সংগৃহীত

দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর ধরে বাড়ির ড্রয়ারে অবহেলায় পড়ে ছিল চশমা দুটি। লকডাউনের সময় বাড়ি ঝাড়পোঁছ করতে গিয়ে চশমা দুটি প্রথম নজরে আসে ব্রিটেনের ম্যাঙ্গোসফিল্ড এলাকার এক বয়স্ক লোকের।

জানা গেছে, ১৯১০ থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার ব্রিটিশ পেট্রোলিয়ামে কাজ করতেন ওই বয়স্ক লোকটির এক খুড়তুতো ঠাকুর্দা। সেই ঠাকুর্দাকে ১৯২০ সাল নাগাদ মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী তাঁর এই চশমা দুটি উপহার দিয়েছিলেন।

শোনা যায়, গান্ধীজী প্রায়ই তাঁর ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র পরিচিতদের উপহার স্বরূপ দিতেন। ধারণা করা হয়, এই চশমা দুটিও তিনি হয়তো সেই উপহার হিসেবেই তাঁকে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই চশমাটির গুরুত্ব বুঝতে পারেননি তিনি। তাই সেই চশমা দুটি তিনি তাঁর ভাইপোর এই ছেলেকে দিয়ে দেন। ভাইপোর এই ছেলেও এটার কদর বুঝতে পারেননি। ড্রয়ারের এক কোণে ফেলে রেখেছিলেন। দেখতে দেখতে নয় নয় করে কেটে গেছে প্রায় ৫০টি বছর।

এত দিন বাদে বাড়ি পরিষ্কার করতে গিয়ে সেই চশমা দুটি দেখার পর উনি সেটা বিক্রির জন্য ইস্ট ব্রিস্টল অকশন হাউজের সর্বময় কর্তা অ্যান্ড্রু স্টোকে দেন। দেওয়ার সময় তিনি বলেছিলেন, এটা যদি বিক্রি করা না যায়, তা হলে ফেলে দেবেন। আসলে শুধু ঐতিহাসিক মূল্যই নয়, এটার যে কত দাম হতে পারে সে সম্পর্কেও তাঁর কোনও ধারনা ছিল না। যখন ওই নিলাম সংস্থার মালিক তাঁকে বলেন যে, এই চশমাটির দাম ১৫ হাজার পাউন্ড অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা হতে পারে।

তখন সেটা শুনে তাঁর প্রায় হার্ট অ্যাটাক হওয়ার মতো অবস্থা হয়। কিন্তু সেটা যে তারও সতেরো-আঠেরো গুণ দামে বিক্রি হতে পারে, তা তিনি ভাবতেই পারেননি। ভাবতে পারেননি নিলাম সংস্থার মালিকও।
তাই নিলাম হাউজের চিঠিপত্রের বাক্সে সাদা একটি খামের ভেতরে চশমা দুটি রেখে দিয়েছিলেন।

অ্যান্ড্রু স্টো নিজেই বলেছেন, ‘এটা এত অবহেলায় রাখা ছিল যে, যে কোনও সময় খুব সহজেই চুরি হয়ে যেতে পারত। অথবা ভেঙে যেতে পারত কিংবা আবর্জনার বাক্সেও চলে যেতে পারত।’

গান্ধীজির ব্যবহার করা চশমা শুনেই ফোনে মাত্র ৬ মিনিটের বার্তালাপেই আমেরিকান একজন সংগ্রাহক চশমা দুটি কিনে নেন। ২ লক্ষ ৬০ হাজার পাউন্ড মানে ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২ কোটি ৬০ লক্ষ টাকায়।

এই মহামূল্যবান চশমা দুটির চারটি ডান্ডাই সোনার জলে রং করা এবং কাচ চারটি যে পাত দিয়ে মোড়া ছিল, সেগুলোও সোনার জল করা। তবে না, সোনার জন্য নয়, এগুলো যদি হিরেখচিতও হত, এত দাম হত না। এই চশমা দুটি নিলামে ওঠার পরে এই পরিমান দাম ওঠার একটাই কারণ, আর সেটা হল— এর ঐতিহাসিক মূল্য আর সেটা গান্ধীজী পরতেন বলেই।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
২০২০ সালে 'সাহিত্য সম্রাট' উপাধিতে সম্মানিত এবং ২০১২ সালে 'বঙ্গ শিরোমণি' সম্মানে ভূষিত সিদ্ধার্থ সিংহের জন্ম কলকাতায়। আনন্দবাজার পত্রিকার পশ্চিমবঙ্গ শিশু সাহিত্য সংসদ পুরস্কার, স্বর্ণকলম পুরস্কার, সময়ের শব্দ আন্তরিক কলম, শান্তিরত্ন পুরস্কার, কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত পুরস্কার, কাঞ্চন সাহিত্য পুরস্কার, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা লোক সাহিত্য পুরস্কার, প্রসাদ পুরস্কার, সামসুল হক পুরস্কার, সুচিত্রা ভট্টাচার্য স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার, অণু সাহিত্য পুরস্কার, কাস্তেকবি দিনেশ দাস স্মৃতি পুরস্কার, শিলালিপি সাহিত্য পুরস্কার, চেখ সাহিত্য পুরস্কার, মায়া সেন স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার ছাড়াও ছোট-বড় অজস্র পুরস্কার ও সম্মাননা। পেয়েছেন ১৪০৬ সালের 'শ্রেষ্ঠ কবি' এবং ১৪১৮ সালের 'শ্রেষ্ঠ গল্পকার'-এর শিরোপা সহ অসংখ্য পুরস্কার। এছাড়াও আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত তাঁর 'পঞ্চাশটি গল্প' গ্রন্থটির জন্য তাঁর নাম সম্প্রতি 'সৃজনী ভারত সাহিত্য পুরস্কার' প্রাপক হিসেবে ঘোষিত হয়েছে।
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!