এভাবেও ভাল থাকা যায় (পর্ব ২৫)

মণিজিঞ্জির সান্যাল
মণিজিঞ্জির সান্যাল
4 মিনিটে পড়ুন
প্রতীকী চিত্র

শান্তিপূর্ণ বা উদ্বেগহীন জীবন পেতে হলে

উদ্বেগহীন জীবন বা শান্তিপূর্ণ জীবন কার না কাম্য? এমনটা হলে তাহলেই জীবন হবে শান্তিপূর্ণ। আমাদের জীবনে শুধু চাই চাই চাই, কি চাই? মনকে প্রশ্ন করলেই পাওয়া যাবে এর উত্তর। আচ্ছা আমরা শুধু পার্থিব জিনিসকেই কেন চাই? আমরা কি একটু ঐ আকাশকে ভালোবাসতে পারি না? কিম্বা ঐ সবুজকে? কিম্বা ঐ বৃষ্টিকে বা রাতের তারাদের? যাদের কাছে আমরা প্রতি মুহূর্তে ঋণী। ভালোবাসা চাই, ভালোবাসতে চাই। হ্যাঁ জীবনকে ভালোবাসো, জীবনও আমাদের ভালোবাসবে, গাছের পাতাকে কখনো ভালোবেসেছ? তাদের স্পর্শ করো, আদর করো, দেখবে ওরা তোমায় দুহাতে আগলে রেখেছে, জড়িয়ে ধরে বলছে এই তো আমি তোমার, আর এরই নাম ভালোবাসা।

জীবনকে ভালোবাসতে, জীবনকে শান্তিপূর্ণ রাখতে খুব বেশি টাকা পয়সা, প্রাচুর্য, প্রতিযোগিতার মধ্যে না যাওয়াই উচিত। মানুষের চাহিদার শেষ নেই। চাহিদার রূপকে একটু পালটে দিতে হবে। সেই চাহিদাগুলো হোক কিছু সুন্দর মুহূর্ত, সুন্দর অনুভূতি যা কাগজের টাকার চেয়ে অনেক বেশি মূল্যবান। জীবনে ভাল থাকতে হলে সুস্থতাও ভীষণভাবে প্রয়োজন, আর তার জন্যে খুব বেশি অর্থের প্রয়োজন নেই কারণ অতিরিক্ত অর্থই কিন্তু আমাদের জীবনের স্বাভাবিক ছন্দকে নষ্ট করে দেয়। আমাদের মধ্যে অ-সুখ জন্ম নেয়। হিংসা, রাগ ধীরে ধীরে সঞ্চারিত হয় প্রতিদিনের যাপনে। আমরা ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়ি। কিন্তু সুস্থতাই তো জীবনের প্রধান এবং পরম সম্পদ তাই না? সুস্থতার জন্যে প্রয়োজন নিয়মানুবর্তিতা,শারীরিক পরিশ্রম, আর? আর উৎকন্ঠাহীন জীবন। আর এই জীবন পেতে হলে কি নেই, কি আছে, কে কি পেল, কে কোথায় গেল, আমার কি নেই ….

এসব নিয়ে না ভেবে জীবন চলুক তার নিজস্ব ছন্দে, সহজ সরল জীবনই পারে আমাদের মনকে শান্ত রাখতে, ভাল রাখতে, সুস্থ রাখতে। আর হ্যাঁ প্রতিদিন নিয়ম করে ভাল কোনো কাজ করা, পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের জন্যে মঙ্গল প্রার্থনা করা, কেউ বিপদে পড়লে তার পাশে দাঁড়ানো।

আর একটা কথা অন্যকে দেখানোর জন্যে আমাদের জীবন নয়। আমাদের প্রত্যেকের জীবন আমাদের নিজেদের মতো আর সেই জীবনটাকেই যত্ন করতে হবে, পরিচর্যা করতে হবে, ভালোবাসতে হবে। এ কথাগুলো শুধু কথার কথা নয়। এগুলোই জীবনকে সুন্দরভাবে চলতে সাহায্য করবে। নিজেরই অজান্তে জীবন হয়ে উঠবে সুন্দর এবং শান্তিপূর্ণ।

যে যেভাবে ভাল থাকেন। এক একজনের ভাল থাকাটা এক এক রকম। কারো ঠাকুর ঘরে থাকলে মন শান্ত থাকে। এটাও একটা মেডিটেশন। ধ্যান আমাদের এই মন এবং শরীরকে সুস্থ রাখে। ঈশ্বরের কাছে বসলে উগ্রভাব কমে যায়। অনেক বিনয়ী হওয়া যায়। ঈশ্বর সে ঈশ্বর যেই হোন। স্বামী বিবেকানন্দ, মা সারদা, রামকৃষ্ণ, কবিগুরু, নেতাজী। পাশাপাশি সরস্বতী, দুর্গাও হতে পারে।

পুজোর মধ্যে দিয়ে সকলের মঙ্গল কামনা করা, পরিবারের সবার হাতে সেই প্রসাদ তুলে দেওয়া মনকে কেমন স্নিগ্ধ করে দেয় যা আজকের দিনে ভীষণ রকম জরুরি। একঘন্টা বা দশ মিনিট সেটা তার মনের ওপর বা তার কাজের ধারা অনুযায়ী নির্ভর করে। আগে মন, তারপর শরীর। মনে জোর থাকলে শরীরেও জোর পাওয়া যায়। পাশাপাশি শরীর চর্চাও করতে হবে। আমরা সবাই রূপচর্চা করি, শরীর চর্চা করি কিন্তু এই মন? এই মনের চর্চা তার কি হবে? মহাপুরুষের বই পড়লে মন ভীষণ রকম শুদ্ধ হয়। নিজের মনে পুজো করলে, ধ্যান করলে মনকে কতো সুন্দর রাখা যায়। তবে হ্যাঁ, পুজোর নামে যারা ভন্ডামি করে তারাই এই সমাজে সত্যিই ঘৃণার পাত্র।

(চলবে)

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
মণিজিঞ্জির সান্যাল, বাংলা সাহিত্যে এম.এ., ক্ল্যাসিক্যাল নৃত্য প্রভাকর; জন্মদিন: ২৯শে বৈশাখ, ইং ১৩ই মে; জন্মস্থান: ভারতবর্ষ, পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি। যে সব পত্র পত্রিকায় লিখেছেন: আনন্দবাজার, দেশ, সানন্দা, শুকতারা, কিশোর ভারতী, শিলাদিত্য, যুগ শঙ্খ, নন্দন, তথ্যকেন্দ্র, উত্তরবঙ্গ সংবাদ পত্রিকা, উত্তরের সারাদিন, স্টেটসম্যান, অন্যদিন পত্রিকা (বাংলাদেশ), এছাড়া অসংখ্য লিটিল ম্যাগাজিনে গল্প, উপন্যাস, কবিতা, ভ্রমণ কাহিনী প্রকাশিত হয়েছে। দেশের বাইরে কুয়েত, বাংলাদেশ, কানাডা, লন্ডন এমন অনেক বিদেশের পত্র পত্রিকায় নিয়মিত লেখা প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত বই: (১) একটুকু ছোঁয়া লাগে (কলকাতা থেকে প্রকাশিত) (২) স্বপ্নের পৃথিবী (কলকাতা থেকে প্রকাশিত) (৩) অতৃপ্ত আত্মার সঙ্গে (৪) সমুদ্র তোমার সঙ্গে (বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত) (৫) সম্পর্কের পরিচর্যা (বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত) (৬) কমলালেবুর রস নোনতা (কলকাতা থেকে প্রকাশিত) (৭) ভালোবাসার গোপন দরজা (৮) মাটির কাছাকাছি
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!