গাজায় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ অবসানে ৩ পর্বের নতুন পরিকল্পনা মিসরের

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন
জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ। ছবি সংগৃহীত

গাজায় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ অবসানে ৩ পর্বের নতুন পরিকল্পনা মিসরের

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস এবং ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে চলমান যুদ্ধ অবসানে নতুন তিন পর্বের নতুন পরিকল্পনা প্রস্তুত করেছে মিসর। তবে এই যুদ্ধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতরা সেই পরিকল্পনা গ্রহণ করবে কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়।

এ যুদ্ধের শুরু থেকেই হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে মধ্যস্ততা করে আসছে মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ মিসর এবং কাতার। মিসরের নতুন পরিকল্পনাটি হলো—

১. প্রথম পর্যায়ে হামাস এবং ইসরায়েলি বাহিনী অন্তত এক বা দুই সপ্তাহের জন্য সামরিক অপারেশন বন্ধ রাখবে এবং এই সময়ে নিজেদের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যে অন্তত ৪০ জনকে মুক্তি দেবে হামাস। এই চল্লিশজনের মধ্যে অবশ্যই নারী ও বয়স্কদের প্রাধান্য দিতে হবে।

২. চল্লিশ জিম্মিকে মুক্ত করার পর হামাসের কাছে যেসব ইসরায়েলি যোদ্ধা এবং ইসরায়েলি বাহিনীর কাছে যেসব হামাস যোদ্ধার মৃতদেহ রয়েছে, সেসব বিনিময় হবে। সেই সঙ্গে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে অন্তত ৬ হাজার জনকে মুক্তি দেওয়া হবে।

৩. পরিকল্পনার প্রথম দু’টি পর্যায় সফলভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব হলে তৃতীয় পর্যায়ে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকায় যাবতীয় সামরিক অভিযান বন্ধ করবে এবং উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার করে নেবে।

ইসরায়েলের বিমান হামলায় বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি জিম্মির মৃত্যু
ইসরায়েলি বিমান হামলার পর আগুনের কুন্ডলি ও শিখা বের হচ্ছে। ছবি সংগৃহীত

একই সময়ে গাজায় একটি টেকনোক্র্যাট সরকার গঠন করা হবে। এই সরকারের সঙ্গে হামাসের কোনো সম্পর্ক থাকবে না এবং যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতার এই সরকারকে সমর্থন করবে।

মিসরের সরকারের উচ্চপর্যায়ের দু’টি সূত্র এই পরিকল্পনার তথ্য নিশ্চিত করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে। এ ব্যাপারে আরও বিস্তারিত জানতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছিল সিএনএন, তবে কোনো কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এদিকে সোমবার জরুরি বৈঠক ছিল ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার। এই সভার সঙ্গ সংশ্লিষ্ট দু’টি সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছে, এ ধরনের কোনো প্রস্তাব এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে তারা পাননি।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

গাজায় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ অবসানে ৩ পর্বের নতুন পরিকল্পনা মিসরের
ইসরায়েলি হামলায় নিহত কযেকজনের মৃতদেহ গনকবর দেয়া হচ্ছে। ছবি সংগৃহীত

ইসরায়েলি বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছেন অন্তত ২০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী, শিশু,অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরী এবং বয়স্ক লোকজন।

সেই সঙ্গে আহত হয়েছেন আরও ৫২ হাজার ৫৮৬ জন এবং এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ৬ হাজার ৭০০ জন।। এছাড়া হাজার হাজার পরিবার বাড়িঘর-সহায় সম্বল হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন স্কুল, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে।

অন্যদিকে, হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। পাশাপাশি, ইসরায়েলের ভূখণ্ড থেকে ২৪২ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের সেদিন জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে গিয়েছিল হামাস যোদ্ধারা।

প্রতি ১০ মিনিটে গাজায় এক শিশু নিহত: ডব্লিউএইচও
গাজায় প্রতি ১০ মিনিটে গড়ে এক শিশু নিহত হচ্ছে। ছবি আনাদোলু এজেন্সি

এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১০৪ জন। বাকি ১৩৬ জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, রাশিয়াইউক্রেনের নাগরিকরা রয়েছেন; এবং রয়েছেন শিশু, নারী, তরুণ-তরুণী এবং বৃদ্ধ-বৃদ্ধা— সব বয়সী মানুষ।

টানা দেড় মাস ভয়াবহ যুদ্ধ শেষে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে নতিস্বীকার করে গত ২৫ নভেম্বর অস্থায়ী বিরতি ঘোষণা করে হামাস-ইসরায়েলি বাহিনী। পরে ১ ডিসেম্বর দু’পক্ষের পারস্পরিক হামলার শুরুর মধ্যে দিয়ে শেষ হয় সেই বিরতি।

৭ দিনের অস্থায়ী বিরতির সময় নিজের কব্জায় আটক জিম্মিদের মধ্যে থেকে ১১৮ জনকে মুক্তি দিয়েছে হামাস; বিপরীতে এই সময়সীমায় ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ১৫০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে।

সিএনএন

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!