নজিরবিহীন মানবিক দুর্যোগে গাজা

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন
খান ইউনিসের একটি স্কুলে জাতিসংঘ পরিচালিত একটি শিবিরে খাবারের জন্য লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে ফিলিস্তিনি শিশুরা। ছবি এএফপি

নজিরবিহীন মানবিক দুর্যোগে গাজা

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলছে ইসরায়েলের বর্বরোচিত বিমান হামলা ও স্থল অভিযান। ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানো ব্যাপকভাবে ব্যাহত হওয়ায় গাজার অর্ধেক মানুষই অনাহারে রয়েছে। গাজা পরিদর্শনের পর এ কথা বলেছেন জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) ডেপুটি ডিরেক্টর কার্ল স্কাউ।

গত শুক্রবার গাজা পরিদর্শন করেন কার্ল স্কাউ। এরপর সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, ‘এখানে পর্যাপ্ত খাবার নেই। মানুষ অভুক্ত থাকছে। প্রয়োজনীয় ত্রাণসহায়তার সামান্যই গাজায় ঢুকতে পারছে।’ দোহা ফোরামে কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, নজিরবিহীন মানবিক দুর্যোগে গাজা।

ইসরায়েলি হামলা গাজার ১০ লাখ শরণার্থীকে মিশরের দিকে ঠেলে দিতে পারে: জাতিসংঘ
ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছেন বাসিন্দারা। ছবি রয়টার্স

ডব্লিউএফপির তথ্যানুযায়ী, গাজার উত্তরাঞ্চলের ৯৭ শতাংশ পরিবার অপর্যাপ্ত খাদ্যগ্রহণ করে। মারাত্মক অনাহারে এই অঞ্চলের ৪৮ শতাংশ বাসিন্দা। বাসিন্দাদের প্রতি ১০ জনের নয়জনের ২৪ ঘণ্টা না খেয়ে থাকাও ডব্লিউএফপির নজরে এসেছে।

ডব্লিউএফপির তথ্যানুযায়ী, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের ৮৩ শতাংশ পরিবার অপর্যাপ্ত খাদ্যগ্রহণ করে। মারাত্মক অনাহারে ৩৮ শতাংশ বাসিন্দা। বাসিন্দাদের প্রতি তিনজনের মধ্যে দুজনের ২৪ ঘণ্টা না খেয়ে থাকার প্রমাণ পেয়েছেন তাঁরা।

ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার দিকে ইঙ্গিত করে কার্ল স্কাউ বলেন, ‘আমরা আমাদের সাধ্যমতোই ত্রাণ বিতরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু গাজার পরিস্থিতির কারণে ত্রাণ পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে।’

চলতি সপ্তাহে ডব্লিউএফপি দলের গাজা পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে কার্ল আরও বলেন, তাঁরা গুদাম ও বিতরণকেন্দ্রগুলোর সামনে হাজারো ক্ষুধার্ত মানুষকে মরিয়া হয়ে অপেক্ষা করতে দেখেছেন। সেখানকার দোকানগুলো ছিল খালি। আর শৌচাগারের সামনে ছিল দীর্ঘ সারি। তিনি বলেন, ‘এখানকার বাসিন্দাদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জনেরই প্রতিদিন খাবার জোটে না।’

নজিরবিহীন মানবিক দুর্যোগে গাজা
ইসরায়েলি হামলায় আহত এক শিশুকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি এপি

অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলছে, হামাসকে নির্মূল করতে এবং ইসরায়েলি বন্দীদের ফিরিয়ে আনতে গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যেতে হবে।

সংঘাত শুরুর পর শুধু মিসরের সীমান্তবর্তী রাফাহ ক্রসিং উন্মুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে সীমিত পরিমাণে সাহায্য গাজায় পৌঁছাতে পারছে।

গাজার দক্ষিণে অবস্থিত খান ইউনিস শহরের পরিস্থিতিও প্রচণ্ড ভয়াবহ। শহরের একমাত্র অবশিষ্ট স্বাস্থ্যকেন্দ্র নাসের হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি এবং বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. আহমেদ মোগরাবি খাবারের zঅভাব নিয়ে বিবিসির সঙ্গে কথা বলার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আমার তিন বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে। সে আমার কাছে কিছু মিষ্টি, কিছু আপেল, কিছু ফল চায়। আমি দিতে পারি না। আমি অসহায় বোধ করি। আপনি বিশ্বাস করতে পারেন? আমরা দিনে একবার, মাত্র একবার খাই!’

গাজার অর্ধেক জনসংখ্যা অনাহারে: জাতিসংঘ
গাজা উপত্যকার ৮০ শতাংশ মানুষ সাহায্যের ওপর নির্ভর করে। ছবি সংগৃহীত

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। ওই দিনই সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজায় ত্রাণসহায়তা প্রবেশেও বিধিনিষেধ আরোপ করে দেশটি। অবরুদ্ধ গাজার বাসিন্দারা এখন ত্রাণসহায়তার ওপরই সম্পূর্ণ নির্ভরশীল।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ১৮ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। নিহত ফিলিস্তিনিদের ৭০ ভাগই নারী ও শিশু। শুধু নিহত শিশুর সংখ্যাই ৭ হাজারের বেশি।

গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় এ পর্যন্ত জাতিসংঘের ১৩৩ কর্মী নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনাসংক্রান্ত সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ তথ্যটি নিশ্চিত করেছে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!