বাঁচার জন্য ফের ছুটছে গাজাবাসী
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলের শহর খান ইউনিস থেকে বাসিন্দাদের পুনরায় সরে যেতে বলেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। গাজায় চলমান যুদ্ধের কারণে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি এই শহরে ঠাঁই নিয়েছিল।
বাসিন্দারা বলেন, গত রোববার রাত এবং গতকাল সোমবার সকালে খান ইউনিসের আশপাশে বিমান হামলা ও বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন তাঁরা। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এবার গাজার বাসিন্দাদের উপত্যকাটির আরও দক্ষিণে মিসর সীমান্তবর্তী এলাকায় চলে যাওয়ার জন্য প্রচারপত্র ফেলেছে। এরপরই খান ইউনিসে এমন হামলা হলো। বাসিন্দারা আরও বলেন, খান ইউনিসের ভেতরে এবং এর আশপাশের প্রায় ২৪টি শহরতলি খালি করার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল।
![বাঁচার জন্য ফের ছুটছে গাজাবাসী 38 বাঁচার জন্য ফের ছুটছে গাজাবাসী](https://www.samoyiki.com/wp-content/uploads/2023/12/Untitled-8.jpg)
চার সন্তানের মা হালিমা বলেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী প্রাণে বাঁচতে এক জায়গায় যেতে বলবে। এরপর সেখানেও বোমা ফেলবে। গাজায় আসলে কোনো এলাকাই নিরাপদ নয়। কারণ, তারা উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চল সব দিকেই হামলা করছে। ফলে যারা গাজার উত্তরাঞ্চল ছেড়ে দক্ষিণে যাচ্ছে, তারাও সম্ভবত একই পরিণতি ভোগ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির পর পুরো উপত্যকাতে হামলা হলেও বেশির ভাগ হামলা হচ্ছে গাজার উত্তরাঞ্চলে। গাজা সিটির বিস্তৃত এলাকা এবারের হামলা লক্ষ্যবস্তু।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা সিটির ঘরবাড়ি এবং এই শহরের পূর্ব দিকের সুজাইয়া ও তুফ্ফাহ এলাকা, জেইতুনের মসজিদ; গাজার উত্তরাঞ্চলের কামাল আদওয়ান হাসপাতালের প্রবেশপথ, বেইত হানুন ও বেইত লাহিয়ার ঘরবাড়িতে হামলা করেছে ইসরায়েল। এ ছাড়া হামলা হয়েছে গাজার মধ্যাঞ্চলের নুসেইরাত শরণার্থীশিবির ও দেইর এল-বালাহ এবং গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসের ঘরবাড়ি, বাণিজ্যিক কেন্দ্র এবং আল-জানিনা শহরতলিতেও।
![বাঁচার জন্য ফের ছুটছে গাজাবাসী 39 বাঁচার জন্য ফের ছুটছে গাজাবাসী](https://www.samoyiki.com/wp-content/uploads/2023/12/Untitled-7.jpg)
হামাসকে নির্মূলের কথা বলে গত ৭ অক্টোবর থেকে টানা প্রায় সাত সপ্তাহ গাজায় হামলা চালায় ইসরায়েল। এরপর এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির পর গত শুক্রবার থেকে হামলা আরও জোরদার করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে গত শনিবার থেকে উপত্যকায় আট শতাধিক প্রাণ ঝরেছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় বলেছে, চলমান যুদ্ধে ২৩ লাখ বাসিন্দার তিন-চতুর্থাংশই বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তবুও নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে দিগ্বিদিক পালিয়ে বেড়াচ্ছে তারা। যদিও উপত্যকার বেশির ভাগ এলাকাই আর বাসযোগ্য নেই।
![বাঁচার জন্য ফের ছুটছে গাজাবাসী 40 বাঁচার জন্য ফের ছুটছে গাজাবাসী](https://www.samoyiki.com/wp-content/uploads/2023/12/Untitled-6-1024x568.jpg)
এ প্রসঙ্গে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, যুদ্ধবিরতি শেষে শুক্রবার ইসরায়েল হামলা শুরুর করার পর শত শত লোক হতাহত হয়েছে। বেশির ভাগই এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে। গতকাল পর্যন্ত গাজার তিন লাখের বেশি ঘরবাড়ি ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা উপত্যকার মোট বাড়িঘরের ৬০ শতাংশের বেশি।