গাজার হাসপাতালে শুধু লাশের গন্ধ, এক কবরে রাখা হলো শিশুসহ ১৭৯ জনকে
গাজার আল-শিফা হাসপাতালে শিশুসহ ১৭৯ জনকে গণকবর দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার হাসপাতালটির পরিচালক আমিরাত-ভিত্তিক দ্য ন্যাশনালকে এ খবর জানিয়েছেন। গত শনিবার জ্বালানি সরবরাহ শেষ হয়ে গেলে এই হাসপাতালেই ৩৪ জনের মৃত্যু ঘটেছিল।
হাসপাতালের চিকিৎসক মোহাম্মদ জাকাউত জানিয়েছেন, আশপাশে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী অবস্থান করায় তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে গণকবরের খনন শুরু হয়। তবে কবরটি খননের জন্য স্বেচ্ছাসেবীদের কাছে উপযুক্ত কোনো সরঞ্জাম না থাকায় তারা অনেক কসরত করে কবর খনন করছেন।
![গাজার হাসপাতালে শুধু লাশের গন্ধ, এক কবরে রাখা হলো শিশুসহ ১৭৯ জনকে 38 গাজার হাসপাতালে শুধু লাশের গন্ধ, এক কবরে রাখা হলো শিশুসহ ১৭৯ জনকে](http://www.samoyiki.com/wp-content/uploads/2023/11/Untitled-2-35.jpg)
দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকায় গাজা থেকে রাফাহ সীমান্ত দিয়ে মিশরে পা রাখেন আল-শিফা হাসপাতালের ভাসকুলার সার্জন মোহাম্মদ জাকাউত। দ্য ন্যাশনালকে তিনি জানান, মৃতদেহের দুর্গন্ধ এখন পুরো হাসপাতালজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
হাসপাতালের পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এই হাসপাতালে রোগীদের কোনো চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে চিকিৎসক হয়েও কাউকে সাহায্য করা যাচ্ছে না। আমরা যা-ই করি না কেন, রোগীরা মারা যাচ্ছে। প্রচুর রক্তের প্রয়োজন হলেও কাউকে রক্ত দেওয়াও যাচ্ছে না। এমনকি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হলেও কোনো ব্যবস্থা নেই। আমি বসে বসে আমার রোগীদের মৃত্যু দেখতে পারি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখনো যারা বেঁচে আছে—ঈশ্বর তাদের সহায়তা করুন।’
চিকিৎসক জানান, আল-শিফা হাসপাতালে ইনকিউবেটর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ইতিমধ্যে তিন নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। আরও ৩৬ শিশুকে যেভাবে রাখা হয়েছে তা অস্বাভাবিক।
![গাজার হাসপাতালে শুধু লাশের গন্ধ, এক কবরে রাখা হলো শিশুসহ ১৭৯ জনকে 39 গাজার হাসপাতালে শুধু লাশের গন্ধ, এক কবরে রাখা হলো শিশুসহ ১৭৯ জনকে](http://www.samoyiki.com/wp-content/uploads/2023/11/Untitled-4-18.jpg)
গাজার ৩৪টি হাসপাতালের মধ্যে প্রায় ২৫ টিতে এখন আর কোনো পরিষেবা নেই। নেই কোনো অ্যাম্বুলেন্সও। কারণ অ্যাম্বুলেন্সগুলো ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠেছে। ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, তাদের ১৮টি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে এখন অবশিষ্ট আছে মাত্র ৫ টি।
![গাজার হাসপাতালে শুধু লাশের গন্ধ, এক কবরে রাখা হলো শিশুসহ ১৭৯ জনকে 40 গাজার হাসপাতালে শুধু লাশের গন্ধ, এক কবরে রাখা হলো শিশুসহ ১৭৯ জনকে](http://www.samoyiki.com/wp-content/uploads/2023/11/Untitled-3-15.jpg)
হাসপাতালটি ঘিরে রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ফলে এখান থেকে পায়ে হেঁটে পালানোর চেষ্টা করেও অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ইসরায়েলি স্নাইপারদের গুলির ভয়ে হাসপাতালে অবস্থান করা মানুষেরা জানালার কাছেও যাচ্ছেন না।