হামাস-ইসরায়েল সংঘাত: যুক্তরাষ্ট্র-ইরানসহ কারা কী বলছে

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
5 মিনিটে পড়ুন
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলার পর একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপ। ছবি এপি

হামাস-ইসরায়েল সংঘাত: যুক্তরাষ্ট্র-ইরানসহ কারা কী বলছে

ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস কয়েকদশকের মধ্যে গত শনিবার ইসরায়েলে সবচেয়ে বড় হামলা চালিয়েছে। বহু মানুষ এতে নিহত হয়েছে। অনেকে জিম্মিও হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গাজায় ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাঁতভাঙা জবাবে এর প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ইসরায়েল-ফলিস্তিনের চলমান এই সংঘাতময় পরিস্থিতিকে কোন দেশ বা আন্তর্জাতিক জোট কীভাবে দেখছে তা তুলে ধরেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স

হামাস-ইসরায়েল সংঘাত: যুক্তরাষ্ট্র-ইরানসহ কারা কী বলছে
গাজা থেকে নিক্ষেপ করা রকেটকে বাধা দেয় ইসরায়েলের আয়রন ডোম অ্যান্টিমিসাইল সিস্টেম। ছবি রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্র:

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলেছেন, “সন্ত্রাসের কখনও কোনও যৌক্তিকতা নেই। আমরা ইসরায়েল সরকার এবং জনগণের সঙ্গে একাত্মতার সঙ্গে তাদের পাশে আছি। হামলায় নিহত ইসরায়েলিদের জন্য আমাদের সমবেদনা জানাচ্ছি।”

ওদিকে, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেছেন, “আগামী দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর ইসরায়েলের নাগরিকদেরকে নির্বিচার সহিংসতা এবং সন্ত্রাস থেকে রক্ষায় ইসরায়েলের যা প্রয়োজন তা আছে কিনা সেটি নিশ্চিত করতে কাজ করে যাবে।”

জাতিসংঘ:

জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্য শান্তিদূত টর ওয়েনেসল্যান্ড বলেছেন, “পরিস্থিতি বিপজ্জনক। সব পক্ষকে খাদের কিনারা থেকে সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।”

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভলকার তুর্ক বলেছেন, “এই হামলা ইসরায়েলের নাগরিকদের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে…বেসামরিক নাগরিকরা কখনও হামলার নিশানা হওয়া উচিত না।”

হামাস-ইসরায়েল সংঘাত: যুক্তরাষ্ট্র-ইরানসহ কারা কী বলছে
ইসরায়েলের তেল আবিবে গাজা থেকে ছোড়া রকেট আঘাত হানার পর ২ জন ইসরায়েলি একটি ভবনের ধ্বংসাবশেশের পাশ দিয়ে হেটে যাচ্ছেন। ছবি এপি

সৌদি আরব:

সহিংসতা অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।

ফিলিস্তিন:

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, “ফিলিস্তিনের জনগণের অধিকার আছে ইহুদি বসতিস্থাপনকারী এবং দখলদার সেনাদের সন্ত্রাস থেকে নিজেদের রক্ষা করার।”

ইরান:

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনির উপদেষ্টা ইয়াহিয়া রাহিম সাফাভি শনিবার ইসরায়েলে হামলার জন্য হামাস যোদ্ধাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “ফিলিস্তিন এবং জেরুজালেমের স্বাধীনতা না আসা পর্যন্ত আমরা ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের পাশে থাকব।”

ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভিতে দেশটির পার্লামেন্ট সদস্যদেরকেও শনিবার তাদের আসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে ‘ইসরায়েল নিপাত যাক’, ‘ফিলিস্তিন বিজয়ী, ‘ইসরায়েল ধ্বংস হবে’ স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

চীন:

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে শান্ত, সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়াসহ পরিস্থিতির আরও অবনতি এড়াতে অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ করতে বলেছে। সমস্যা সমাধানের মূল পথ হিসাবে দ্বিরাষ্ট্র সমাধান এবং স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরামর্শ দিয়েছে তারা।

হামাস-ইসরায়েল সংঘাত: যুক্তরাষ্ট্র-ইরানসহ কারা কী বলছে
গাজায় একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপের পাশ দিয়ে রুটি বহনকারী একটি ছেলে হাঁটছে। ছবি এপি

জার্মানি:

জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে লিখেছেন, “ইসরায়েল থেকে ভীতিকর সংবাদ এসেছে। গাজা থেকে রকেট হামলা এবং সন্ত্রাস বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত। জার্মানি হামাসের এ হামলার নিন্দা জানায় এবং ইসরায়েলের পক্ষে আছে।”

ফ্রান্স:

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও হামাসের হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “নিহত এবং তাদের পরিবার ও স্বজনদের প্রতি আমি সর্বন্তকরণে একাত্মতা প্রকাশ করছি।”

মিশর;

সহিংসতার মারাত্মক পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে মিশর সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে যতটা সম্ভব সংযত থাকা এবং বেসামরিক মানুষদের আরও বিপদের মধ্যে ঠেলে না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

কানাডা:

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, তার দেশ ইসরায়েলে ঘটে যাওয়া ‘সন্ত্রাসী হামলার’ তীব্র নিন্দা জানায়। এমন সহিংস কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া যায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা ইসরায়েলের পাশে আছি এবং তাদের নিজেদেরকে রক্ষা করার অধিকারকে পরিপূর্ণভাবে সমর্থন করি। বেসামরিক মানুষদের জীবন অবশ্যই সুরক্ষিত রাখতে হবে।”

যুক্তরাজ্য:

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি বলেছেন, তার দেশ স্পষ্টভাবে ইসরায়েলে হামাসের ভয়াবহ হামলার নিন্দা জানায়। যুক্তরাজ্য সবসময়ই ইসরায়েলের নিজেদের সুরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করে যাবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন:

ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েনও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ইসরায়েলের হামাসের হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। ওদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈদেশিক নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বরেলও হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ভয়াবহ এই সহিংসতা অবিলম্বে বন্ধ হতে হবে। সন্ত্রাস,সহিংসতায় কোনও সমস্যার সমাধান হয় না।

হামাস-ইসরায়েল সংঘাত: যুক্তরাষ্ট্র-ইরানসহ কারা কী বলছে
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলার পর আগুন ও ধোঁয়া উঠছে। ছবি এপি

তুরস্ক:

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান সব পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

কাতার:

তুরস্কের মতো একই আহ্বান জানিয়েছে কাতারও।ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংঘাত বাড়িয়ে তোলার জন্য ইসরায়েলকেই এককভাবে দায়ী করেছে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।

কুয়েত:

ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে চলমান সংঘাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কুয়েত। যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য ইসরায়েলকে দোষারোপ করেছে দেশটি।

আফ্রিকান ইউনিয়ন:

আফ্রিকান ইউনিয়ন কমিশনের চেয়ারপার্সন মুসা ফাকি মাহামাত বলেছেন, “ফিলিস্তিনি জনগণের মৌলিক অধিকারের অস্বীকৃতি, বিশেষত- তাদেরকে স্বাধীন,সার্বভৌম রাষ্ট্র না দেওয়াই ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে স্থায়ীভাবে উত্তেজনা বিরাজ করার মূল কারণ।”

মাহামাত জরুরি ভিত্তিতে দুইপক্ষকে সামরিক সংঘাত পরিহার করে নিঃশর্তে আলোচনার টেবিলে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

বিষয়:
এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!