সুদানে গণকবর থেকে নারী-শিশুসহ ৮৭ মরদেহ উদ্ধার

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন
নিহতদের সবাই ছিল বেসামরিক মানুষ। ছবি সংগৃহীত

সুদানে গণকবর থেকে নারী-শিশুসহ ৮৭ মরদেহ উদ্ধার

উত্তরপূর্ব আফ্রিকার দেশ সুদানের পশ্চিম দারফুর প্রদেশের দু’টি গণকবর থেকে নারী ও শিশুসহ অন্তত ৮৭ জনের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর। এই নিহতদের সবাই দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্টেড ফোর্সের (আরএসএফ) নিষ্ঠুরতার শিকার।

বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভোলকার টার্ক স্বাক্ষরিত সেই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে পাওয়া সংবাদ অনুযায়ী জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর নিশ্চিত হয়েছে যে, গত ২০ এবং ২১ জুন পশ্চিম দারফুরের এল জেনিয়ানা জেলার আল তুরাব আল আহমারের গ্রামাঞ্চলে অভিযান চালিয়েছিল আরএসএফ এবং নিহতদের সবাই ছিল বেসামরিক মানুষ।’

সুদানে বোমা হামলা বন্ধ না হলে শান্তি সংলাপে যাবে না আরএসএফ
সুদানের আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফের শীর্ষ কমান্ডার জেনারেল হেমেদি। ছবি এপি

বিবৃতিতে বলা হয়েছে ২০ জুন আল তুরাব আল আহমারের একটি গ্রামে অন্তত ৩৭ জন বেসামরিক গ্রামবাসীকে হত্যা করে গণকবর দেওয়া হয়েছিল, পরে ২১ জুন আরও ৫০ জনকে হত্যা করে কবর দেওয়া হয়েছিল প্রথমটি গণকবরটির কাছাকাছি এলকায়। দ্বিতীয় গণকবরটিতে অন্তত ৮ জন নারী ও ৮ জন শিশুর দেহাবশেষ মিলেছে।

নিহতদের বেশিরভাগই সুদানের সংখ্যালঘু মাসালিট জাতিগোষ্ঠীর অন্তর্ভূক্ত। এছাড়া অন্যান্য জাতিস্বত্ত্বার কয়েকজনও রয়েছে তাদের মধ্যে। পশ্চিম দারফুরের এল জেনিয়ানা এলাকাটি মূলত দেশটির সংখ্যালঘু বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী অধ্যুষিত।

হত্যাকাণ্ডের পর গ্রামবাসীকে জোর করে গণকবর দু’টি খোঁড়া ও লাশগুলো দাফন করতে বাধ্য করা হয়েছিল উল্লেখ করে বিবৃতিতে ভলগার টার্ক বলেন, ‘আমরা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ীদের প্রতি তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি। নিরীহ বেসামরিক লোকজনের সঙ্গে যে নিপীড়ন মূলক আচরণ করা হয়েছে, জোর করে নিজেদের আত্মীয় পরিজনদের জন্য কবর খুঁড়তে বাধ্য করা হয়েছে— সেজন্যও নিন্দা জানাচ্ছে জাতিসংঘ।’

যে গ্রামে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে, সেখান থেকে এল জেনিয়ানার পুলিশ সদরদপ্তরের দূরত্ব মাত্র ৬ কিলোমিটার।

সুদানে নিহত ছাড়ালো ৩০০, লড়াই বন্ধে কূটনৈতিক চাপ
সুদানে লড়াইয়ে বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতি, ছবি রয়টার্স

বেসামরিক লোকজন ও জাতিসংঘসহ দেশি-বিদেশী এনজিওর সহায়তাকর্মীদের সঙ্গে সহিংসতা বন্ধ করা এবং সেই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের জন্য দোষী যোদ্ধাদের শনাক্ত করা এবং তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে আরএসএফের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে ভলকার টার্ক বলেন, ‘আমরা আরএসএফের প্রতি বেসামরিক লোকজন ও জাতিসংঘসহ সুদানে সক্রিয় দেশি-বিদেশি এনজিও ও সেবাসংস্থার কর্মীদের প্রতি সহিংসতা ও নিপীড়ণ বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি।’

‘সেই সঙ্গে অবিলম্বে এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী যোদ্ধাদের গ্রেপ্তার ও তাদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।’

জাতিসংঘের বৃহস্পতিবারের এই বিবৃতির কোনো প্রতিক্রিয়া এখনও জানায়নি আরএসএফ।

সুদানে গণকবর থেকে নারী-শিশুসহ ৮৭ মরদেহ উদ্ধার
সুদানে সংঘাতে বাড়ছে বাস্তুচ্যুত মানুষ। ছবি রয়টার্স

ক্ষমতার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের জেরে গত ১৫ এপ্রিল থেকে সংঘর্ষ বাঁধে সুদানের সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে। দু’পক্ষের এই সংঘাতে ইতোমধ্যে হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া ও দক্ষিণ সুদানে আশ্রয় নিয়েছেন অন্তত ১ লাখ মানুষ। যুদ্ধ যদি আরও দীর্ঘায়ীত হয়, সেক্ষেত্রে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ৮ লাখ ছাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।

সুদানের গৃহযুদ্ধ থামাতে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েছে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, আফ্রিকান ইউনিয়ন, মিশর এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ। এসব উদ্যোগে গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকবার যুদ্ধবিরতিও ঘোষণা করেছে সেনাবাহিনী-আরএসএফ। কিন্তু এখন পর্যন্ত দেশটির সার্বিক পরিস্থিতি পুরোপুরি শান্ত হয়নি।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!