বাখমুতে গোলাবর্ষণ-বিমান হামলা বাড়িয়েছে রাশিয়া

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন
রুশ হামলার পর ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। ছবি সংগৃহীত

বাখমুতে গোলাবর্ষণ-বিমান হামলা বাড়িয়েছে রাশিয়া

টানা বেশ কয়েক মাস ধরে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় বাখমুত শহর দখলে নিতে লড়াই করছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। মূলত এই শহরটিকে দখলে নেওয়া গেলে তা রাশিয়ার জন্য বিরল সাফল্য বলে বিবেচিত হবে।

আর তাই বিমান হামলার পাশাপাশি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় এই শহরে ভারী কামান দিয়ে গোলাবর্ষণ বাড়িয়েছে রাশিয়া। যদিও এই শহরটিকে দখলের জন্য হাজার হাজার রুশ সৈন্যকে ইতোমধ্যেই প্রাণ দিতে হয়েছে। বুধবার (১৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

বাখমুতে গোলাবর্ষণ-বিমান হামলা বাড়িয়েছে রাশিয়া
বাখমুতে ভারী কামান ও বিমান হামলা বাড়িয়েছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। ছবি: এএফপি

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূর্ব ইউক্রেনের বিধ্বস্ত শহর বাখমুত দখলে নিতে রাশিয়ান বাহিনী তাদের ভারী কামানের ব্যবহার এবং বিমান হামলা বাড়িয়েছে বলে ইউক্রেনের স্থল বাহিনীর কমান্ডার মঙ্গলবার জানিয়েছেন। বিগত কয়েক মাস ধরে মূলত বাখমুত শহর ও এর আশপাশের অঞ্চলকে কেন্দ্র করে ইউক্রেনে যুদ্ধ চলছে।

ইউক্রেনের স্থল বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল ওলেক্সান্ডার সিরস্কি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘শত্রুরা বর্তমানে ভারী কামান দিয়ে গোলাবর্ষণ করার পাশাপাশি বিমান হামলার সংখ্যা বাড়িয়েছে। তারা (রুশ বাহিনী) এই শহরটিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করছে।’

তিনি বলেন, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় সামরিক আগ্রাসন শুরু করা রাশিয়া বাখমুতকে ‘যেকোনও মূল্যে’ দখলে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আর তাই যুদ্ধে এই শহরটি উল্লেখযোগ্য ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

রয়টার্স অবশ্য যুদ্ধক্ষেত্রের প্রকৃত পরিস্থিতি স্বাধীনভাবে নিশ্চিত করতে পারেনি। অন্যদিকে রাশিয়া বলছে, বাখমুতে ইউক্রেনের বাহিনীও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে।

এর আগে চলতি এপ্রিল মাসের শুরুতে রুশ ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনারের প্রধান দাবি করেছিলেন, তাদের সেনারা বাখমুত শহর দখলে নিয়েছে এবং তিনি শহরের নগর ভবনে রুশ পতাকা উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে ইউক্রেনের সরকারও জোর দিয়ে সেসময় জানায়, বাখমুত এখনও তাদের সৈন্যদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

বাখমুতে গোলাবর্ষণ-বিমান হামলা বাড়িয়েছে রাশিয়া
গত কয়েক মাস ধরে ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে বাখমুত। ছবি: এএফপি

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় এই শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিতে রাশিয়া গত সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ওয়াগনার বাহিনী নিজেদেরকে বেসরকারি প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে পরিচয় দিয়ে থাকে। রুশ ভাড়াটে এই বাহিনী বাখমুত যুদ্ধে বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে এবং এই যুদ্ধে তাদের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানিও হয়েছে।

মূলত রাশিয়ার বিভিন্ন কারাগার থেকে হাজার হাজার দণ্ডিত অপরাধীদের বের করে এনে ওয়াগনার বাহিনীতে ঢুকিয়ে অল্প প্রশিক্ষণ দিয়ে বাখমুতের রণাঙ্গনে পাঠানো হয়। তবে তাদের পাশাপাশি রুশ সৈন্যরাও বাখমুতে লড়াই করছে।

চলতি মাসের শুরুতে সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছিল, গত কয়েকমাস ধরে বাখমুতের দখল নিয়ে চলা রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে দুই পক্ষের হাজার হাজার যোদ্ধা মারা গেছে। ধারণা করা হয়, ইউক্রেনের চেয়ে রুশ পক্ষের প্রাণহানি বেশি হয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলোর বিভিন্ন গোয়েন্দা রিপোর্টেও বাখমুত দখলের যুদ্ধে ২০ থেকে ৩০ হাজার রুশ সৈন্য মারা গেছে বলে দাবি করা হয়েছে।

ইউক্রেনের ১২০০ মাইল রণাঙ্গনের মধ্যে বাখমুত ক্ষুদ্র একটি অংশ হলেও মাসের পর মাস ধরে দুই পক্ষই শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মরিয়া হয়ে লড়ছে। রুশ কমান্ডাররা মনে করছেন, বাখমুতের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলে এই শহরটিকে ভিত্তি করে ইউক্রেনের আরও এলাকা দখলের চেষ্টা সহজ হবে।

বাখমুতে গোলাবর্ষণ-বিমান হামলা বাড়িয়েছে রাশিয়া
বাখমুতে ইউক্রেনীয় প্যারাট্রুপার। ছবি: এপি

ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় গত বছরের ডিসেম্বরে এক বিশ্লেষণে বলেছিল, বাখমুতের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলে রাশিয়া পার্শ্ববর্তী ক্রমাতরস্ক এবং স্লোভিয়ানস্কের মতো বড় বড় শহরগুলোর ওপর হুমকি তৈরি করতে সক্ষম হবে।

তবে রুশ ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগানারের জন্য এই যুদ্ধে জেতা এখন মর্যাদার লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাহিনীর প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন মনে করছেন, বাখমুতের যুদ্ধে সাফল্য না দেখাতে পারলে ক্রেমলিনে তার প্রভাব এবং সুনাম ক্ষুণ্ন হবে।

ইউক্রেনের সেনাবাহিনী অবশ্য আগামী কয়েক সপ্তাহ বা মাসের মধ্যে রাশিয়ার দখল থেকে বেশ কিছু এলাকা পুনর্দখলের অভিযান শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!