ভয়াবহ খরায় চরম খাদ্যসংকটে দুই কোটি আফ্রিকান

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন

দক্ষিণ ইথিওপিয়া থেকে উত্তর কেনিয়া ও সোমালিয়া পর্যন্ত। প্রায় দুই কোটি আফ্রিকান ভয়াবহ খরায় চরম খাদ্যসংকটে পড়েছেন।

এএফপি বলছে, ‘‘হর্ন অব আফ্রিকা” হিসেবে পরিচিত এ অঞ্চলে পরপর তিনটি বর্ষা মৌসুম অনাবৃষ্টিতে গেছে। এর ফলে এখানে ১৯৮১ সালের পর থেকে সবচেয়ে শুষ্ক অবস্থা বিরাজ করছে।

জাতিসংঘ বলছে, ইথিওপিয়ায় ১২ মিলিয়ন, সোমালিয়ায় ৫.৬ মিলিয়ন এবং কেনিয়ার ৪.৩ মিলিয়ন মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।

২০২২ সালের শুরুতে সংখ্যাটি ১৩ মিলিয়ন থেকে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

গত ২৩ জানুয়ারি জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি এক প্রতিবেদনে এমনটি দাবি করছে।

এতে বলা হয়, এই অঞ্চল জুড়ে ১.৭ মিলিয়ন মানুষ পানি ও চারণভূমির অভাবের কারণে বাড়িঘর ছেড়ে গেছে।

জলবায়ুর প্রভাব

জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের মধ্যে একটি ‘‘হর্ন অব আফ্রিকা”।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক জলবায়ু ঝুঁকি কেন্দ্রের তথ্য অনুসারে, ২০১৬ থেকে ১৩টি বর্ষা ঋতুর মধ্যে আটটিতেই ব্যাপক বৃষ্টিপাত দেখা গেছে।

জাতিসংঘের মতে, ২০১১ সালে সোমালিয়ায় সর্বশেষ দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা হয়েছিল। ওই সময় ২৬০,০০০ মানুষ যার মধ্যে অর্ধেক ছয় বছরের কম বয়সী শিশু ক্ষুধার কারণে মারা যায়। এর কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যথাযথ তৎপরতাকেও দায়ী করা হয়েছিল।

ওই সময় অঞ্চলটিতে দুটি বন্যা দেখা দিয়েছিল।

এছাড়া ২০১৯ ও ২০২১ সালে পঙ্গপালের আক্রমণে তাদের ফসল নষ্ট হয়েছিল।

নভেম্বরে জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা ওসিএইচএ জানায়, আফ্রিকায় ৯.৫ মিলিয়ন গবাদি পশু মারা গেছে।

এছাড়া ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে এ অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে।

সোমালিয়া: কেন্দ্রস্থল

‘‘হর্ন অব আফ্রিকা”র মূল কেন্দ্রস্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে সোমালিয়া। যেখানে খরায় অন্তত জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি প্রায় ৭.৮৫ মিলিয়ন মানুষের জীবন প্রভাবিত হয়েছে।

ডিসেম্বরে ওসিএইচএ বলেছে, সাহায্য সংস্থা এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়ার জন্য দেশটি প্রযুক্তিগতভাবে এখনও পূর্ণ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েনি।

তবুও সেখানে খাদ্য ঘাটতি রয়েছে। সহায়তা না বাড়লে এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে দক্ষিণ সোমালিয়ায় দুর্ভিক্ষ আসতে পারে।

বিপদে শিশুরা

জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফের মতে, ইথিওপিয়া, কেনিয়া এবং সোমালিয়া জুড়ে প্রায় দুই মিলিয়ন শিশুর গুরুতর তীব্র অপুষ্টির জন্য জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন। যা ক্ষুধার সবচেয়ে মারাত্মক রূপ।

সেপ্টেম্বরে সংস্থাটি জানায়, সোমালিয়ায় পুষ্টি কেন্দ্রগুলোতে জানুয়ারি থেকে জুলাইয়ের মধ্যে ৭৩০ শিশু মারা গেছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা সম্ভবত অনেক বেশি।

এতে বলা হয়, প্রায় ২.৭ মিলিয়ন শিশু স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

সাহায্যের আবেদন

ব্রিটিশ দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন-এর ইথিওপিয়ার পরিচালক জেভিয়ার জুবার্ট বলেন, ক্ষুধার সংকটের কোনো শেষ নেই। সব আশা ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, জরুরিভাবে আরও তহবিল প্রয়োজন।

বর্তমানে সংকট মোকাবেলায় জাতিসংঘের কাছ থেকে চাওয়া ৫.৯ বিলিয়ন ডলারের মাত্র ৫৫.৫% অর্থায়ন করা হয়েছে।

২০১৭ সালে প্রাথমিক মানবিক পদক্ষেপের কারণে সোমালিয়ায় দুর্ভিক্ষ এড়াতে পেরেছিল।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

বিষয়:
এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!