ষড় কবিতা: স্বাতী সাহা

স্বাতী সাহা
স্বাতী সাহা
3 মিনিটে পড়ুন

জীবন ছবি

টাপুর টুপুর বৃষ্টি পড়ে নদে এলো বান
শিব ঠাকুরের বিয়ে হলো তিন কন্যা দান
এক কন্যা সতীন নিয়ে ঘর করলো
সতীত্ব তকমা নিয়ে চিতায় গেল
এক কন্যা রাঁধতে রাঁধতে জীবন যখন মাঝ বয়সে
স্বামী কাপড়ে আগুন ধরিয়ে পালালো শেষে
এক কন্যা শ্বশুর বাড়ির অত্যাচারের পালালো পর পুরুষের সাথে
আখ্যা পেলে কুলটা বলে সমাজ হতে
টাপুর টুপুর বৃষ্টি পড়ে নদে এলো বান
শিব ঠাকুরের বিয়ে হলো তিন কন্যা দান।

উপেক্ষিত বীর

শ্রীকৃষ্ণের বরে কলিযুগে খাটু শ্যামজি নামে হলেন পূজিত
মহাকাব্যে উপেক্ষিত বীর বারবারিক চরিত্র
যুদ্ধবিদ্যা শেখান মাতা আহিল্যাবতী
ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিকতায় জীবনে পূর্ণতা আনেন হিড়িম্বা পিতামহী
তিন বর পেলেন মহাদেবের সাধনায়
সফল হলেন আরাধনায়
বেজে উঠল কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধের ভেরী
বারবারিক তাঁর অমোঘ অস্ত্র নিয়ে চললেন যুদ্ধে তড়িঘড়ি
শ্রীকৃষ্ণ ছদ্মবেশে বারবারিকের সন্মুখে হলেন উপস্থিত
করিলেন প্রভু বারবারিকের বাণের কার্যকারিতা পরীক্ষা
প্রভু স্তম্ভিত হলেন দেখে বাণের পরীক্ষা নীরিক্ষা
প্রভুর অনুরোধে অজন্ম কাল লালিত স্বপ্ন হলো পূরণ মোক্ষ লাভে
ছিন্ন মস্তক দেখল কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ কেশবের আর্শীবাদে
প্রভু শুনালেন যুদ্ধ শেষে
হে বারবারিক কে বীর শ্রেষ্ঠ
হে কৃষ্ণ হে মধুসূদন তুমিই শ্রেষ্ঠ
প্রভু দিলেন বর
দুষ্টের দমন করবে তুমি কলিযুগে
খাটু শ্যামজি নামে নেবে চিনে
বীর তুমি বারবারিক যদিও মহাকাব্যে উপেক্ষিত
স্বার্থ ত্যাগ করে রয়ে গেল এভাবে ই উপেক্ষিত বীর চরিত্র।

খেলা

আমার নানা রঙের ফুল গুলো সব ঝরে গেল
আজ বসন্ত বেলায়
কেন এলে ঝড়ের বেশে
নিখিল আমার মুখ লুকিয়ে কাঁদে নোনা সাগর তীরে বসে।

প্রয়োজনে প্রিয় জন

বাইরে ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়ছে
গাছের পাতা থেকে টুপটুপ করে জল পড়ছে
যেন কোন নারী বসে কাঁদছে
যারা ছিল তাঁর প্রিয় জন
সবাই ছেড়ে চলে গেছে
প্রয়োজনে প্রিয় জন বুঝিয়ে দিয়ে গেছে
হাই,এখন প্রিয় জন কোথা পায়
পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যায়
তবু মন মানেনা
দুটি হাত বাড়িয়ে খোঁজে প্রিয় জন
হাই, প্রিয় জন কোথা পায়।

উপেক্ষা

গুছিয়ে সংসার করার তখনও বয়স হয়নি
বুদ্ধিও হয়নি
সংসার কাকে বলে কিছুই বুঝতাম না
স্বামীকে আগলে রাখার কৌশল ও জানতাম না
পুতুল খেলার ঘর থেকে সোজা সংসারে
বারে বারে ভুল হয়ে যেত
ক্ষমার পাহাড় জমে যেত
সংসারের জটিলতা বুঝতাম না
এই এক বড় রাজনীতির ময়দান বুঝতাম না
তাই বারে বারে হেরে গিয়েছি
এক কথায় আউট হয়ে গিয়েছি
তাসের ঘরের মতন ভেঙে গেছে সবকিছু
এখন যা আছে লোক দেখানো সবকিছু
খুব সরল ছিলাম তাই সব কিছু হারিয়ে ফেলেছি
নাটকগুলো বুঝতে অনেক দেরি করে ফেলেছি
ভালোবেসে পেয়েছি শুধুই উপেক্ষা
আজ আর কিছুই জোড়া লাগানো যাবে না
তাই শুধুই বিসর্জনের অপেক্ষা।

ডাক আসে না

পলাশ গাছটা যখন কেটেই দিলে
বসন্ত কোকিল ডাকবে কোথায় বলো?

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
জন্ম আসানসোল ১৯৭৯ সালে। বড় হয়ে ওঠা সিউড়ি শহরে। পিতা বনবিহারী সাহা, মা মঞ্জু রানী সাহা।পড়াশোনা করেছেন সিউড়ি আর্টি গার্লস স্কুল থেকে তারপর বিদ্যাসাগর কলেজ। বিবাহ সূত্রে ১৯৯৮ সালে শান্তিনিকেতনে আসা। ছোটবেলা থেকেই কবিতা লেখার হাতেখড়ি। প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় স্কুল ম্যাগাজিনে। তারপর ২০১২ সালে হোমানল পত্রিকায়। বর্তমানে শান্তিনিকেতন আকাশবাণী আনন্দধারার সঙ্গে যুক্ত। এছাড়া নিখিল বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলন বোলপুর শাখার সঙ্গে যুক্ত।কবিতা লিখে প্রথম পুরস্কার মেডেল জামতারা ঝাড়খন্ড থেকে। প্রথম কাব্যগ্রন্থ মন পাখি।
১ টি মন্তব্য

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!