নীল শালুক নদীর ধারে

কামাল কাদের
কামাল কাদের
13 মিনিটে পড়ুন

মফস্বল শহর। তারই মাঝ দিয়ে এঁকে বেঁকে চলে গেছে ‘নীল শালুক’ নদী। নদীটির প্রস্থতা দেখে যে কেউ বলতে পারে, এটা নদী নয়- খাল। নীল শালুক নদী অজানা অতীতকে পিছনে ফেলে শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত হয়ে সোজা গিয়ে মিশে গেছে এক আরেকটি নদীর পেটের ভিতর। স্থানীয় লোকরা বলাবলি করে, দেশে কত নদীই তো শুকিয়ে চর হয়ে গেছে, কিন্তু আমাদের নীল শালুক আজও মৌন হয়ে কতজনের সুখ-দুঃখের জীবন কাহিনী নিয়ে বয়ে চলেছে।
সম্প্রতি শামসুর রহমান সাহেব এই শহরে সুপারিন্টেন্ড অব পুলিশ (এসপি) হয়ে এসেছেন। বদলীর চাকরি। ঢাকা শহর থেকে প্রমোশন পেয়ে এখানে এসেছেন। লোকে বলে, তিনি একজন জাদরেল পুলিশ অফিসার। ভীষণ রাশভারী লোক। উনার মুখের হাসি দেখা মানে অমাবস্যার চাঁদ দেখার মতো।প্রতিবেশীদের ধারণা তিনি বেশীরভাগ সময় অপরাধীদের সংস্পর্শে থাকার ফলে বোধ হয় উনার মুখমণ্ডলে এই গম্ভীর ভাবের লক্ষণ প্রতিফলিত হয়।
অরণ্য রহমান এসপি সাহেবের একমাত্র সন্তান। তাই স্বভাবতই আদরের কোনো কমতি নাই, ফলে ভরা যৌবনের বেপরোয়া ভাবটা ওর চরিত্রে প্রবলভাবে প্রকাশিত। নীল শালুক নদীর তীর ঘেঁষেই পুলিশ কোয়ার্টারগুলি গড়ে উঠেছে। তার পাশেই সারি সারি বড় বড় কাঠবাদাম গাছগুলি যেন ছাতি মেলে দাঁড়িয়ে আছে। ভোরবেলায়, সূর্যের কিরণ ছড়ানোর আগেই সবুজ টিয়া পাখীদের কিচির মিচির মিষ্টি শব্দে ওখানকার মানুষের ঘুম ভেঙ্গে যায়। অরণ্য প্রতিদি সকালে তার বেডরুমের জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখে টিয়া পাখীগুলি দল বেঁধে মাটিতে নেমে গাছ থেকে ঝরে পড়া বাদামের রসালো মিষ্টি নরম ছোলা মাটি থেকে কুড়িয়ে নিয়ে খায়। আবার কখনও কখনও বাদামের ছোলার ভাগাভাগি নিয়ে পাখীদের মধ্যে তুমুল ঝগড়াও হয়ে যায়। এরকম প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে অরণ্য খুব উপভোগ করে। কখনো কখনো কৌতূহলবশত সে দৌড়ে গিয়ে কিছু বাদাম কুড়িয়ে নিয়ে আসে। আবার কখনো কখনো ভোরে ঘুম থেকে জেগে আনমনে নদীর পানে চেয়ে থাকে। অসংখ্য নৌকা পাল তুলে এদিক থেকে ওদিক চলাচল করছে। কেউবা ঘাটের তীরে নৌকা ভিড়িয়ে মাল উঠানো নামানো করছে। রাজধানীতে বেড়ে ওঠা এই ছেলেকে নীল শালুকের প্রকৃতি যেন আশ্চর্য রকমের ভাললাগার ভিন্ন এক আমেজে ডুবিয়ে রাখে। নতুন এক ভিন্ন রকমের জীবনের স্বাদ এনে দিয়েছে।
ছোট্ট শহর, তাই এসপি সাহেবের ছেলেকে সবাই চেনে এবং সমীহ করে চলে। অরণ্যও সেটা উপলব্ধি করতে পারে। সে রাস্তাঘটে বাবুয়ানার মতো চলাফেরা করে। অনেক দোকানে কোন টুকিটাকি জিনিসপত্র কিনতে গেলে দোকানীরা পয়সা নিতে চায়না- বলে “আরে এসপি সাহেবের ছেলে আপনি। আপনার কাছ থেকে পয়সা নেব! ছি! ছি! কি যে মনে করেন আমাদেরকে।” ফলে লজ্জায় অনেক দোকান থেকে তার কেনাকাটা করা সম্ভব হয়ে উঠে না। তাছাড়া অনেক দোকানী গরীব লোক। সে বুঝতে পারে তাদের কাছ থেকে পয়সা না দিয়ে কোনো কিছু নেয়াটা ভালো দেখায় না।
অরণ্যের নীল শালুকের এই মফস্বল শহরে জীবন সুখে আর আনন্দে চলে যাচ্ছে। সে এখানকার একটি লোকাল কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হয়েছে। কলেজে যাতায়াত করার জন্য তার বাবা একটা হোন্ডা মোটর সাইকেল কিনে দিয়েছেন। ইতোমধ্যে সেখানকার বেশকিছু লোকাল বন্ধুবান্ধব জুটে গেছে তার। দৈনিক কলেজে যাওয়া আসা ছাড়াও নিয়মিত বন্ধু বান্ধবদের সাথে মোটর সাইকেল নিয়ে সারা শহর দাপিয়ে বেড়ায়। একসময় কিছু বন্ধুর পাল্লায় পড়ে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ে অরণ্য। তবে এসপি সাহেবের ছেলে হওয়ার সুবাদে আসন্ন বিপদ থেকে পার পেয়ে যায়। কখনো কখনো সে নিজেকে প্রশ্ন করে, “কেন আমি এমন আজে বাজে কাজ করি!?
অরণ্যদের প্রথম শ্রেণীর পুলিশ কোয়ার্টারের অদূরেই দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের কোয়ার্টার। তারই মাঝখানে বড় একটি খেলার মাঠ। সেখানে প্রতিদিন ভোরবেলায় পুলিশ এবং আনসার বাহিনীর সদস্যরা প্যারেড করে আর বিকেল বেলায় ফুটবল, ভলিবল খেলে।
ফুটবল অরণ্যের প্রিয় খেলা। ঢাকায় থাকতে সে নিয়মিত ফুটবল খেলতো। একসময় নামকরা ফুটবল খেলোয়াড় হবার শখ হয়েছিল তার। কিন্তু সে শখ আর অপূর্ণ থেকে গেছে। কারণ বাড়ী থেকে লেখাপড়ার দিকে মনোযোগ দেয়ার নির্দেশ ছিল বেশী। মাঠে প্রতিদিন পুলিশ এবং আনসার সদস্যদের খেলা দেখে ফুটবল খেলার তার আগ্রহটা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠলো। একদিন মাঠে গিয়ে ক্যাপ্টেন সাহেবের কাছে তার ফুটবল প্রীতির কথা জানালো। শুনে ক্যাপ্টেন সাহেব বলল, “আরে, আপনি আমাদের সাথে খেলবেন, এ যে আমাদের সৌভাগ্য! তবে ঐ যে ওখানে লম্বা মতো সুন্দর চেহারার ভদ্রলোক- যার হাতে বলটি দেখছে, আর মুখে বাঁশি রয়েছে তার সাথে আপনাকে কথা বলতে হবে। উনি আমাদের লিডার। তিনি বয়সে আমাদের বাবা-চাচা সম। কিন্তু সবার কাছে ্তিনি ‘মুন্সী ভাই’ বলে পরিচিত। পেশায় তিনি একজন পুলিশ সার্জেন্ট।”
অরণ্য ক্যাপ্টেনকে জিজ্ঞাসা করলো, ”মুন্সী ভাই মানুষ কেমন? দেখে তো মনে হয় আমার বাবার মতো রাশভারী লোক।”সঙ্গে সঙ্গে ক্যাপ্টেন সাহেব উত্তর দিলেন, “আরে না না, উনি একজন মাটির মানুষ, কথা বললেই বুঝতে পারবেন।” অরণ্য মুন্সী ভায়ের সামনে গিয়ে বললো, ”মুন্সী ভাই, আমি আপনাদের সাথে ফুটবল খেলতে চাই। আমাকে দলে নেবেন?”
মুন্সী ভাই হেসে বললেন, “আরে তুমি না আমাদের স্যারের ছেলে, কি নাম জানি তোমার?”
আমার নাম অরণ্য রহমান।
“বেশ সুন্দর নাম। তারপর একটু থেমে বললেন, বাহ্! তোমার ফিগার তো একেবারে আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের মতো। তোমাকে দেখে আমাদের সময়ের স্বনামধন্য খেলোয়াড় ‘নবী চৌধুরীর’ কথা মনে পড়ে গেলো। উনিও পুলিশ দলে খেলতেন। সে যাই হউক ওসব অনেক দিন আগের কথা। তুমি কাল থেকে লেগে পড়ো, আমি ক্যাপ্টেনকে বলে দেবো। তোমাদের মতো তরুণদের আমাদের দলে দরকার।
রোজকার মতো সকালে নীল শালুক নদীর কলতান আর তার সাথে সবুজ টিয়াপাখীর কিচির মিচির শব্দে অরণ্যের ঘুম ভেঙ্গে গেল। বিকেলে পুলিশ এবং আনসার সদস্যদের সাথে ফুটবল খেলে। আজকাল দিনগুলো ভারী সুন্দর কাটছে অরণ্য’র। ইতোমধ্যে মুন্সী ভাইয়ের অমায়িক ব্যবহারের ফলে অরণ্য’র সাথে শ্রদ্ধাসুলভ বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।

একদিন ভোরবেলায় অরণ্য নদীর তীরে তাকিয়ে আছে, এমন সময় দেখতে পেল ৮/৯ বছরের ছেলে বাদাম গাছের নীচে থেকে বাদাম কুড়িয়ে তাদের কোয়ার্টারের কাঁটাতারের বেড়া ডিঙ্গিয়ে ওপারে চলে গেলো- যেখানে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীরা থাকে। প্রতিদিনই ছেলেটি এভাবে কাঁটাতার ডিঙ্গিয়ে বাদাম কুড়িয়ে চলে যায় ওপারে। বেড়ার ওপারে দাঁড়িয়ে থাকে ১৫/১৬ বছরের হালকা- পাতলা গড়নের এক সুন্দরী মেয়ে। বাদাম ওই কুড়িয়ে নিয়ে মেয়েটির হাতে তুলে দেয়।
বেশ কয়েকদিন ধরে জানালার পাশে অলক্ষ্যে দাঁড়িয়ে বাদাম কুড়ানো দেখছিল অরণ্য। একদিন মজা করার জন্য অরণ্য বাদাম কুড়ানো ছেলেটির হাত খপ করে ধরে ফেললো। ভয় পেয়ে কাঁদতে শুরু করলো ছেলেটি আর কুড়ানো বাদামগুলি তার হাত থেকে খসে মাটিতে পরে গেল।
কাঁদো কাঁদো সুরে ছেলেটি বললো, “আমাকে ছেড়ে দিন, আমি আর কখনও এখানে বাদাম কুড়াতে আসবো না।”
সে দূরে দাঁড়ানো তার বোনকে লক্ষ্য করে বললো, ওই যে দূরে আমার বড় বোন দাঁড়িয়ে আছে তার জন্য আমি প্রতিদিন বাদাম কুড়াতে আসি। সে কাঠ বাদাম খুব পছন্দ করে। প্রত্যেক দিন ভোর বেলায় সে আমাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দেয়, বাদাম কুড়াবার জন্য। এরপরে সাথে করে আমাকে এখানে নিয়ে আসে সে।”
ছেলেটির ভীরু ভীরু চেহারা দেখে অরণ্যের মায়া হলো। ছেলেটির হাত ছেড়ে দিয়ে অরণ্য বললো, “যাও, তোমার বোনকে এখানে নিয়ে এস।
ওরা যে জায়গাটিতে দাঁড়িয়ে ছিল সেখান থেকে ছেলেটি তার বোনকে উদ্দেশ্য করে চেঁচিয়ে ডাকতে শুরু করলো, “সুরভি আপু, সুরভি আপু, তোমাকে উনি ডাকছেন।”
এবার অরণ্য মেয়েটির দিকে একটু ভালো করে তাকালো, মনে হলো রাগে তার ফর্সা মুখখানি লাল হয়ে গিয়েছে। মফস্বলের শাড়ী পড়া মেয়েটিকে দেখে কবির ভাষায় বলা যায়, “ওই রাগী চেহারার মাঝেও যেন এক মাধুর্য ছড়িয়ে রয়েছে।”
তারের বেড়া ডিঙ্গিয়ে মেয়েটি অরণ্যের সামনে এসে সোজা তীক্ষ্ন ভাষায় প্রশ্ন করলো, “আমার ছোট ভাইটিকে আটকে রেখেছেন কেন?”
“বাদাম চুরি করেছে তাই,” অরণ্যের স্বাভাবিক উত্তর।
“আমার ভাই বাদাম চুরি করে নাই, মাটিতে পড়ে ছিল তা কুড়িয়ে নিয়েছে।” সুরভি দৃঢ়তার সাথে বললো।
“ওই একই হলো” অরণ্যের আপোষহীন মন্তব্য।
“কেন এক হবে?” সুরভির পাল্টা প্রশ্ন, “ওই বাদাম গাছগুলির মালিক কি আপনি?”
নাহ, অরণ্য হালকা ভাবে জবাব দিলো।
তা হলে আর্থিক দিক থেকে আমার ভাই তো আপনাদের কোনো ক্ষতি করে নাই। আপনি কোন আক্কেলে এটাকে চুরি বলছেন? ধরলাম আমার ভাই বাদাম চুরি করেছে, তাহলে আপনাকেও আমি চোর বলতে বাধ্য হবো। কারণ আমরা আপনাকেও বাদাম কুড়াতে দেখেছি। বাদাম কুড়াবার আগে আপনিও কি কারো কাছ থেকে অনুমতি চেয়ে নিয়েছিলেন? নিশ্চয়ই না!- এক নাগাড়ে কথাগুলি বলে সুরভি হুট করে ভায়ের হাত ধরে চলতে শুরু করলো। এদিকে অরণ্য হতভম্বের মতো হাঁ করে দাঁড়িয়ে তাদের হেঁটে চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।
ওই ঘটনার পর থেকে অরণ্য নিজের মনের অজান্তে নীল শালুক নদীর আশে পাশে তাকিয়ে থাকে- ভাইবোনকে এক পলক দেখার আশায়। কিন্তু দেখা মেলে না। মনটা সব সময়ে বিষন্ন থাকে। মনের এই আকুতির উত্তর সে খুঁজে পায় না। সে কি হারিয়েছে কিছু! নাকি খুঁজছে নতুন কিছিউ- তা সে নিজেও জানে না।
দিন চলে যায়। রোজকার মতো অরণ্যের ও দিন চলে যাচ্ছে। তবে তার কাছে সব সময়ে মনে হয় কি যেন তার জীবন থেকে হারিয়ে গেছে। একদিন ফুটবল খেলতে গিয়ে এক বিরাট কান্ড ঘটে গেল। প্রতিপক্ষের “ফুলব্যাকের” একটা বলের শট সোজা অরণ্যের পেটের মধ্যে আঘাত করলো। বলের প্রচন্ড আঘাতে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেললো। তারপর তার আর কিছুই মনে রইলোনা। যখন তার চোখ খুললো তখন দেখতে পেলো সে মুন্সী ভাইয়ের বাসায় এক চৌকির উপর শুয়ে আছে। তার দিকে উদ্বিগ্ন চোখে তাকিয়ে আছে মুন্সী ভাই ওনার স্ত্রী এবং খুঁজে ফেরা সেই দুই ভাই বোনকে।
অরণ্য পরে জানতে পেরেছে ব্যপারটা কি হয়েছিল। সে যখন ফুটবলের আঘাত গেল অজ্ঞান হয়ে গেল, তখন সবাই মিলে তাকে ধরাধরি করে মুন্সী ভাইয়ের বাসায় নিয়ে এলো। মুন্সী ভাইয়ের কোয়ার্টারটি ঠিক মাঠের পাশেই। মুন্সী ভাইয়ের পরিবারের সেবায় অরণ্য বেশ সুস্থবোধ করছে।
যখন অরণ্যের জ্ঞান ফিরলো তখন মুন্সী ভাই অরণ্যকে জিজ্ঞাসা করলো ,” অরণ্য, এখন কেমন বোধ করছো?”
অরণ্য মলিন মুখে অস্ফুট স্বরে উত্তর দিলো, ভালো।
বাবার দিকে তাকিয়ে সুরভি ভর্ৎসনার সুরে বললো, উনার নাম অরণ্য হতে যাবে কেন? এতো সুন্দর নামের উনি যোগ্যই নন। উনার নাম অরণ্য না হয়ে ‘জঙ্গল’ হওয়া যুক্তিযুক্ত।
মুন্সী ভাই সুরভির দিকে চেয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, তুই ওকে চিনিস নাকি? সুরভি তাচ্ছিল্যর সাথে জবাব দিলো, উনাকে চিনবোনা, উনি তো এসপি সাহেবের একমাত্র আদুরে ছেলে।
সুরভির খোঁচা দেয়া কথাটি শুনে অরণ্যের মন ব্যথিত হলো। তার আর বুঝতে বাকি রইলোনা, সুরভির সাথে সেদিনের ব্যবহারের সে উচিত জবাব পেয়ে গেল। মনে মনে নিজেকে অনেক হেয় ভাবতে শুরু করলো। আজ তো ওদেরই সেবায় সে সুস্থ হয়ে উঠেছে।
সেদিনের ঘটনার পর বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হয়ে গেল। সব সময় অরণ্য আপনমনে নীল শালুক নদীর দিকে উদাস নয়নে হয়ে তাকিয়ে থাকে, হয়তো আবার দেখা পাবে এই ভরসায়। কিন্তু দেখা মিলছে না। হঠাৎ করে একদিন ভোর বেলায় সে দেখতে পেলো অদূরে নীল শালুক নদীর শান বাঁধানো ঘাটে সুরভি তার ছোট ভাইয়ের সাথে বসে আছে। অরণ্য চট করে গায়ে একটা শাল গড়িয়ে দ্রুত গতিতে ঘাটের দিকে এগিয়ে গেল। এরপর সুরভির মুখোমুখি দাঁড়ালো।
সুরভি অরণ্যকে দেখেই হকচকিয়ে গেল। জিজ্ঞাসা করলো, এসপি সাহেবের ছেলে যে! আজ আবার কোন মহাচোর ধরতে এসেছেন?
অরণ্য সুরভির চোখে চোখ রাখলো, গভীর ভাবে দেখলো সুরভির সন্দেহ ভরা চাহনি। “সেদিন তোমাদের বাড়ীতে সেই সোনাঝরা সন্ধ্যায় মহাচোর ধরা পড়ে গেছে। আজ তোমার কাছে সে নিজে এসে ধরা দিতে এসেছে। তুমি কি সেই মহাচোরকে তোমার হৃদয়ে একটু জায়গা করে নিতে পারবে?” বলল অরণ্য। এই বলে অরণ্য তার পকেট থেকে কুড়ানো বাদাম সুরভির একেবারে গায়ের কাছে এসে নত হয়ে বলল, “আমিই সেই মহাচোর!”
সুরভি হাত বাড়িয়ে বাদামগুলি অরণ্যের কাছ থেকে নিলো, তারপর অরণ্যের মুখের দিকে তাকিয়ে বললো, ” দেখ দেখ, নদীর ওপারে এক ঝাঁক নীল শালুক দল বেঁধে খাবারের অন্বষণে ঘোরাফেরা করছে, কি সুন্দরই না লাগছে, তাই না!
অরণ্য, নীল শালুক নদীর ওপারের দিকে তাকালো। প্রকৃতির সৌন্দর্যের সাথে ভোরের সদ্য তাজা ফুলের সুবাস মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে- তার হৃদয়ে এই প্রথম প্রেমের পরশে দুলে উঠলো।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!