চট্টগ্রামে তরুণীকে গণধর্ষণ, ৯৯৯-এ রিকশাচালকের ফোন

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন
প্রতীকি ছবি

চট্টগ্রামে রিকশা থেকে নামিয়ে এক তরুণীকে (৩০) গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। পরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ এক রিকশাচালকের ফোন পেয়ে তাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ছয় যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রবিবার (১৭ জুলাই) দিবাগত রাত দুইটার দিকে নগরের খুলশী থানার জিইসি বাটা গলি এলাকায় আখতারুজ্জামান চৌধুরী উড়ালসড়কের নিচে এ ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তার ছয়জন হলেন ফারুক হোসেন, আবদুর রহমান, মো. আরিফ, সাইফুল ইসলাম, আবদুল খালেক ও মোহাম্মদ হোসেন ।

ভুক্তভোগী ওই তরুণী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে খুলশী থানায় একটি মামলা করেছেন।

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।

তিনি জানান, রিকশায় করে নগরের জিইসি মোড় থেকে বায়েজিদ বোস্তামী এলাকার নিজ বাসায় ফিরছিলেন ওই তরুণী। রিকশাটি জিইসি বাটা গলি এলাকায় উড়ালসড়কের নিচে পৌঁছালে গতিরোধ করা হয়। পরে ওই তরুণীকে রিকশা থেকে নামিয়ে কাছের একটি টং দোকানের পাশে নিয়ে ধর্ষণ করেন ছয় যুবক।

ওই তরুণীকে বহনকারী রিকশার চালক মো. রাকিবের কাছে কোনো মোবাইল ছিল না। বিষয়টি তিনি আরেক রিকশাচালক আব্দুল হান্নানকে জানান। পরে হান্নান ৯৯৯-এ ফোন করেন। খবর পেয়ে খুলশী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে আবদুল হান্নান জানান, প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা না থাকলেও কোনো রকমে বাংলা পড়তে পারেন তিনি। বিভিন্ন গাড়ির পেছনের লেখাগুলো খুব মনোযোগ দিয়ে পড়েন। এভাবেই তিনি ৯৯৯–এ ফোন করলে পুলিশের সাহায্য পাওয়ার বিষয়ে জানতে পারেন।

তিনি বলেন, “ওই নারীর জায়গায় আমার বোন, মা, স্ত্রী কিংবা কোনো আত্মীয় হতে পারতেন। ইজ্জত বাঁচানোর জন্য ফোন দিয়েছি।”

ঘটনার বিবরণে তিনি জানান, গভীর রাত হওয়ায় রাস্তায় লোকজন ছিল না। দু-একটি গাড়ি মাঝেমধ্যে চলাচল করছিল। অভিযুক্তরা সংখ্যায় বেশি থাকায় ওই নারীকে উদ্ধার করতে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও কাছে যাননি তিনি। এছাড়া ওই যুবকরা মাদকাসক্ত ও ভয়ংকর হিসেবে পরিচিত। তাই তিনি দূর থেকে তিনি তাদের ওপর নজর রাখেন। ৯৯৯–এ ফোন করার ১৫ মিনিট পর খুলশী থানা-পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলের পাশে এসে তাকে ফোন করে।তিনি তখন নগরের খুলশী থানার জিইসি বাটা গলি এলাকায় আখতারুজ্জামান চৌধুরী উড়ালসড়কের নিচে টংদোকানের ঠিকানা দেন পুলিশকে।

এরপর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ফারুক হোসেন, আবদুর রহমান ও মো. আরিফ নামের তিন যুবককে গ্রেপ্তার করে। বাকি তিনজন পালিয়ে যান। পরদিন সোমবার রাতে সাইফুল ইসলাম, আবদুল খালেক ও মোহাম্মদ হোসেন নামের আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ওই নারীকে বহনকারী রিকশার চালক মো. রাকিব জানান, পথ আটকে ওই নারীকে ধরে নিয়ে তাকে চলে যেতে বলেন যুবকেরা। বিষয়টি তিনি একটু দূরে গিয়ে রিকশাচালক হান্নানকে জানান।

তিনি বলেন, “ঘটনা শোনার পরপরই হান্নান মুঠোফোন থেকে পুলিশকে ফোন করেন। তার কিছুক্ষণ পরে পুলিশ আসে। বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এখন থেকে কোনো যাত্রী বিপদে পড়লে আমিও ৯৯৯–এ ফোন করব।”

এ বিষয়ে খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, “সময়মতো রিকশাচালক ৯৯৯–এ ফোন না করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে আসামিদের ধরতে পারত না। একজন রিকশাচালকের সচেতনতায় ওই নারীকে উদ্ধার করতে পেরেছে পুলিশ। তাকে পুলিশের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করা হবে।”

তিনি আরও বলেন, “কেউ ঘটনার শিকার হলে ভুক্তভোগী কিংবা আশপাশের লোকজন রিকশাচালক আবদুল হান্নানের মতো ৯৯৯–এ ফোন করতে পারেন। তাতে পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে পারবে।”

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী ওই নারী এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে খুলশী থানায় ছয়জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!