শেষ বিচার

চন্দন মিত্র
চন্দন মিত্র
2 মিনিটে পড়ুন

সালিশি সভা বসেছে হরিণপাড়া প্রাইমারি স্কুলে। বিচারক মোহনবাবু উক্ত স্কুলের হেড মাস্টার। সালিশি সভা এবং রাজনীতি করে করে চুল পাকিয়ে ফেলেছেন তিনি। যখন যে পার্টি ক্ষমতায় তখন তিনি সে পার্টির অবিসংবাদী গ্রামীণ নেতা। তাঁর নিত্য সহচর পচা, ধনু, মিলু, পালু, কনু নামের মারকুটে কয়েকজন চ্যালা গুরুকে অনুসরণ করে বর্তে যায়। এরা আবার সালিশি সভারও অপরিহার্য অঙ্গ। পাড়ার জনাছয়েক ছেলে পাচু মণ্ডলের পোড়ো বাঁশঝাড় থেকে খানকতক বাঁশ কেটে ভাস্করদের পুকুর পাড়ে আড্ডা দেওয়ার জন্য কুঁড়ে বাঁধছিল। সে খবর জানাজানি হওয়ার সুবাদেই রোববার সকালের এই সালিশি সভার আয়োজন।
ছেলেদের অভয় দিয়ে এগিয়ে আসে দলের পাণ্ডা মিন্টু। ছেলেরা বসে থাকে স্কুল লাগোয়া বটতলায়। তারা জানত জরিমানা তো হবেই, সঙ্গে জুটবে নাকে খত দেওয়ার মতো বিশ্রী সাজা। আর শেষপাতে লাথি-কিল-চড় তো থাকবেই। কিন্তু মিন্টু জানত অন্য কথা। সে সটান সভায় ঢুকে সপ্রতিভভাবে জানতে চায়, ‘আচ্ছা! এই সভার বিচারক কে?’ খেঁকিয়ে ওঠে যমদূতচেহারার ধনু হালদার, ‘কেন রে নবাববাচ্ছা! মোহনবাবুকে চিনিস না বুঝি?’ মিন্টু ঘাবড়ায় না। সে বেশ সরস ও উচ্চকণ্ঠে তারিয়ে তারিয়ে বলে, ‘ও মোহনবাবু বিচারক! তা উনি যে নিজের বউছেলে ছেড়ে মানুখুড়ির বাড়িতে রাতের পর রাত পড়ে থাকেন তার বিচার কে করবে?’ সালিশি দেখতে আসা ছেলে-বুড়ো-মেয়ে-মদ্দ হাসিতে ফেটে পড়ে। যে কথা সকলের জানা কিন্তু এতদিন কেউ উচ্চারণ করার সাহস পায়নি, সেই কথার ধাক্কায় ত্রাসের সভা তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে। মিন্টু হাসতে হাসতে বেরিয়ে আসছে দেখে ছেলেরা যথেষ্ট অবাক হয়।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!