সীতাকুণ্ড অগ্নিকাণ্ড : ডিপো কর্তৃপক্ষ যা বলছে

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের তিনদিন পর কর্তৃপক্ষ একটি বিবৃতি দিয়েছে। এতে তারা ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি কিছু বিষয়ে অভিযোগও তোলা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে রহস্যের ইঙ্গিতও।

সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকার এই বিএম কনটেইনার ডিপোটি স্মার্ট গ্রুপের মালিকানাধীন। ডিপোটি তৈরি করা হয় পোশাক ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যসহ বিভিন্ন আমদানি ও রপ্তানির কনটেইনার খালাস ও পরিবহনের জন্য।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে যে বিবৃতিটি এসেছে তাতে স্বাক্ষর রয়েছে স্মার্ট গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকীর। এতে বলা হয়েছে, কোনো মালিক কি চায় তার প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হোক? কোটি কোটি টাকা খরচ করে, হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে তৈরি করা সে ধরনের প্রতিষ্ঠান রক্ষায় মালিকেরই সবচেয়ে বেশি আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকে। এখন একতরফাভাবে কেউ যদি এ ধরনের দুর্ঘটনার জন্য কেবল মালিককেই দোষারোপ করেন, নানা অজুহাত খুঁজে একটি কোম্পানিকে ধ্বংস করতে চান তবে সেটা দুঃখজনক এবং সমগ্র ব্যবসায়ী সমাজের জন্য বড় অশনি সংকেত।

শনিবার রাতের এই অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। অনেকের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। পরিচয় শনাক্তে নিখোঁজদের স্বজনের নমুনা সংগ্রহ শুরু হয়েছে গতকাল থেকে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ দুর্ঘটনায় আমরা ব্যথিত ও মর্মাহত। সেই সাথে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আপনারা জানেন, কনটেইনার ডিপোর মূল কাজ হলো দৈনিক ভিত্তিতে কনটেইনারের জন্য জায়গা ভাড়া দেওয়া এবং তা আদায় করা। এখানে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের একটি অফিস আছে। তারা ডিপোতে আমদানি-রপ্তানি কাজে সার্বক্ষণিক তদারকি করেন। তাদের অনুমতি ব্যতীত কনটেইনার তো দূরের কথা এক কেজি পণ্যও ডিপোতে প্রবেশ কিংবা বের করা অসম্ভব। এমনকি যেকোনো কনটেইনার লক-আনলক করতেও তাদের অনুমতি প্রয়োজন হয়। ডিপোতে হাজার হাজার কনটেইনারের মধ্যে মাত্র একটি কনটেইনার বিস্ফোরণ হওয়া রহস্যজনক। ডিপো কর্তৃপক্ষ এ ঘটনার একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চায়।’

এই ডিপোর আগুন এত বিধ্বংসী হওয়ার জন্য হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডকে দায়ী করা হচ্ছে। পোশাক ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যসহ বিভিন্ন আমদানি ও রপ্তানির কনটেইনার খালাস ও পরিবহনের জন্য নির্মিত ডিপোতে রাসায়নিক মজুদ বা সংরক্ষণ করা হবে কেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

এ প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হাইড্রোজেন পার অক্সসাইড আমদানি-রপ্তানি পণ্য। দেশের ৬টি কোম্পানি এটি উৎপাদন করে। স্বাভাবিকভাবে অন্যান্য পণ্যের মতো এটিও ডিপোতে শুল্কায়ন শেষে বন্দরের মাধ্যমে রপ্তানি হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আমাদের ডিপোর মাধ্যমেও পণ্যটি রপ্তানি হয়ে আসছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, দুর্ঘটনার সাথে সাথে পাশ্ববর্তী ফিলিং স্টেশনে রাতযাপন করে আগুন নির্বাপন এবং উদ্ধার কার্যক্রম তদারকি করেন স্বয়ং ডিপো মালিক। সেখান থেকে দ্রুত ২০টি অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে আহতদের ঘটনাস্থল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরপর থেকে চিকিৎসকদের চাহিদা মতো সার্বক্ষণিক বিনামূল্যে নির্দিষ্ট চারটি দোকান থেকে ওষুধপত্রসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে। পাশাপাশি কোম্পানির কন্ট্রোল রুমের মনিটরিং টিম তাদের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছে। আর রোগী ও তাদের আত্মীয় স্বজনদের আর্থিক সহায়তাসহ প্রয়োজনীয় থাকা-খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বিবৃতিতে এমন দাবি করা হলেও রোববার সকালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে মালিকপক্ষের কাউকে পাচ্ছি না। মালিকদের কাউকে পেলে আমরা জানতে পারতাম কোন কনটেইনারে কী আছে। এটা আমাদের জানা নেই। এজন্য উদ্ধার কাজে বেগ পেতে হচ্ছে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!