আফগানিস্তানে তীব্র খাদ্য সংকট, ঈদের আনন্দও ম্লান

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন

লাখ লাখ আফগান নাগরিকের জীবনে ঈদ যেন কোনো আনন্দই বয়ে আনতে পারেনি। খুশি বা আনন্দ আসবেই বা কিভাবে? দিন কাটছে খাবারের অভাবে। একবেলা ঠিক মতো খাবার না জুটলে ঈদের আনন্দও তখন ফিকে হয়ে যায়।

গত রোববার (১ মে) ঈদ উদযাপন করেছে আফগানিস্তানের মানুষ। কিন্তু লাখ লাখ মানুষের মধ্যে ঈদের কোনো আমেজ দেখা যায়নি। প্রায় প্রতিদিনই তিনবেলা খাবারের জন্য তাদের লড়াই করতে হচ্ছে।

জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ তীব্র খাদ্য সংকটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। ৩৮ বছর বয়সী এক আফগান নাগরিক জানান, দিন দিন সেখানকার পরিস্থিতি আরও খারাপ আকার ধারণ করছে। তার পরিবারে ১৭ জন সদস্য। বাড়ির কাছের একটি বেকারি থেকে তিনি তার পরিবারের জন্য মাত্র কয়েক টুকরো রুটি জোগাড় করতে পারেন। পরের বেলা কি খাবেন সেটাও তারা জানেন না। সেজন্য ওই সামান্য রুটি থেকেও তাদের কিছু রেখে দিতে হয়। যদি কোনো বন্ধু-বান্ধব বা স্বজন কখনও কিছু দেয় তাহলে তাতে বেশ উপকার হয়। কিন্তু সেটা তো সব সময় হয় না।

তিনি বলেন, ঈদে এর চেয়ে বেশি কিছু পাওয়ার আশাও আমরা করি না। কারা আমাদের সাহায্য করবে বা টাকা দেবে? পুরো শহরের মানুষইতো ক্ষুধা আর দরিদ্র অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। তিনি বলেন, আমি যে শরণার্থী শিবিরে বড় হয়েছি সেখানেও এত খারাপ পরিস্থিতি দেখিনি। এর আগে তিনি পাকিস্তানের একটি শরণার্থী শিবিরে ছিলেন বলে জানান।

এর আগে তিনি একটি সরকারি চাকরি করতেন। কিন্তু পুরো রমজানজুড়েই তিনি কাজের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরেও কোনো ব্যবস্থা করতে পারেননি। সেহেরি বা ইফতারে একটু খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য তিনি দিনরাত এখানে সেখানে কাজ খুঁজেও ব্যর্থ হয়েছেন।

তিনি জানান, এবারের রমজান মাস তার জীবনে সবচেয়ে খারাপ কেটেছে। এর আগে কখনও তাকে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি। গত রমজানেও তিনি তার পরিবার নিয়ে নামাজ পড়েছেন, ঘরে খাবার ছিল, খুব বেশি কিছু না থাকলেও বেশ শান্তি ছিল। কিন্তু এবার কিছুই নেই।

তিনি বলেন, এই রমজান ছিল সবচেয়ে খারাপ সময়। শুধু যে আমরা খাবারের কষ্ট করছি তা নয়, এখন কারও মধ্যে কোনো ঐক্যও নেই। সম্প্রতি মসজিদে হামলার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন আমরা শান্তিতে নামাজ আদায়ও করতে পারছিনা।

তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর চাকরি হারান জামাল (ছদ্মনাম)। তিনি বলেন, আমি সব সময়ই চেয়েছিলাম দেশের জন্য কাজ করতে। আমি সামরিক বাহিনীতে ছিলাম না বা কোনো রাজনৈতিক গ্রুপেও ছিলাম না। কিন্তু তারপরেও তারা (তালেবান) আমার চাকরি কেড়ে নিয়েছে।

পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম এই ব্যক্তি কাজ হারানোয় তার পরিবার মহা বিপদে পড়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের পথে বসতে হয়েছে। তিনি বলেন, তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমার পরিবারের সদস্যরা কখনও পেট ভরে খাবার খেতে পারেনি। এই পুরো রমজানেই আমরা ইফতার করেছি শুধু পানি আর রুটি দিয়ে। ঈদেও কোনো কিছু বদলায়নি। আমাদের জীবনে এখন আর ঈদের কোনো আনন্দ নেই।

তিনি বলেন, গত রমজানের শেষের দিকে আমরা শিশুদের জন্য এবং পরিবারের সদস্যদের জন্য কেনাকাটা করেছি। এমনকি পরিবার নিয়ে ইফতারও বাইরে করেছি। আর এবার আমরা ক্ষুধায় মারা যাচ্ছি।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!