ঈদের আগে পোশাক কারখানায় বেতন বোনাস নিয়ে বিশৃঙ্খলার শঙ্কা

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন

ঈদের আগে দেশের সব পোশাক কারখানায় বোনাস এবং এপ্রিল মাসের বেতনের অন্তত অর্ধেক পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তবে শ্রমিকদের দাবি, ঈদ মে মাসে হওয়াতে এপ্রিল মাসের পুরো বেতন দিতে হবে।

এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে এখনও আলোচনা চলছে। তবে প্রায় ১৫০টি কারখানায় এখনও মার্চ মাসের বেতনই হয়নি। ফলে এই অল্প সময়ের মধ্যে তারা কিভাবে মার্চের পুরো বেতনের পাশাপাশি এপ্রিলের অর্ধেক বেতন এবং বোনাস পরিশোধ করবে, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। আর এ থেকেই এই ফ্যাক্টরিগুলোতে বিশৃঙ্খলার শঙ্কা রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল পুলিশের পুলিশ সুপার শোয়েব আহমেদ বলেন, “আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে তাতে ফেব্রুয়ারি মাসে ৬০টি গার্মেন্টসে বেতন হয়নি। এরপর দেড়শ’র মতো গার্মেন্টসে এখনও মার্চ মাসেরও বেতন হয়নি। ফলে সরকার যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে সেটা বাস্তবায়নে কিছুটা শঙ্কা তো আছেই। আমাদের তথ্য অনুযায়ী কিছু কারখানায় বিশৃঙ্খলা হতে পারে। আমরা সেই রিপোর্ট সরকারের কাছে আগে ভাগেই দিয়ে রেখেছি।”

গত সপ্তাহেই সাভারের শ্রীপুর বাসস্ট্যান্ডে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পাশে শ্রমিকরা মানববন্ধন করেছেন। সেখানে তারা ২০ রমজানের আগে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ভাতা ও ঈদ বোনাস পরিশোধের দাবি করেছেন।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ড্রাষ্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি কল্পনা আক্তার বলেন, “এখন ব্যবসা ভালো, অনেক অর্ডার আসছে। এখনও যদি মালিকেরা বেতন দিতে টালবাহানা করেন তাহলে কীভাবে হবে? আমরা পরিস্কার বলে দিয়েছি, পুরো এপ্রিল মাসের বেতন দিতে হবে। সবাই এখন আমাদের আশ্বাস দিচ্ছেন, তারা দিয়ে দেবেন। আসলে পরিস্থিতি কি দাঁড়াবে সেটা আসলে ২৭ এপ্রিলের পর বোঝা যাবে। ইতোমধ্যে কিছু কিছু করে বেতন দেওয়া শুরু হয়েছে। আমরাও শঙ্কা প্রকাশ করছি, কিছু গার্মেন্টসে বিশৃঙ্খলা হতে পারে। অনেকেই বেতন-বোনাস নিয়ে টালবাহানা করতে পারে আমরাও আশঙ্কা করছি।”

এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএর সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, “আমরা সবাইকে বলে দিয়েছি, শ্রমিকদের বেতন বোনাস নিয়ে কোনো ছাড় নেই। সবাই ঈদের আগেই সরকারের দেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এপ্রিল মাসের অর্ধেক বেতন এবং বোনাস পরিশোধ করবে। কোনো প্রতিষ্ঠানের সমস্যা থাকলে তাদের আমরা আগেই ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমাধানের কথা বলেছি। কেউ কোথাও আটকে গেলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগের কথাও বলেছি। আমাদের একটা সার্ভিলেন্স টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে। আশা করি সমস্যা হবে না।”

তবে বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “আমরা গত দুই মাস ধরে নানা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। বিশেষ করে নিটওয়্যারগুলো কঠিন সময় পার করছে। এই দুই মাসে গ্যাস সংকটের কারণে নিটওয়্যারগুলোতে যে পরিমাণ রপ্তানি করা যেত তার এক তৃতীয়াংশ রপ্তানি করা যায়নি। ফলে আমরাও ভালো নেই। আবার করোনার শুরুতে শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস দেওয়ার জন্য সরকার আমাদের যে ফান্ড দিয়েছিল, তার কিস্তি দিতে হচ্ছে। এখন আমাদের হাতে তো আলাদিনের চেরাগ নেই, যে একবারে সব করে ফেলব। তারপরও বলছি, শ্রমিকদের বেতন বোনাস নিয়ে কোন ছাড় নেই। এটা আমরা সঠিক সময়েই দেব। আমাদের সদস্যদের আমরা এব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছি।”

শ্রমিকদের এপ্রিল মাসের পুরো বেতন ও বোনাস দেওয়া উচিত জানিয়ে সিপিডির গবেষণা পরিচালক গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, “এখন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা যেভাবে অর্ডার পাচ্ছেন এবং ডলারের দাম যেভাবে উর্ধ্বমুখী তাতে কোনভাবেই তাদের সংকটে পড়ার কথা না। কেউ যদি সঠিক সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন বোনাস না দেন তাহলে সেটা খুবই দুঃখজনক হবে। আমরা মনে করি, তারা ভালো ব্যবসা করছে, সেটা এই শ্রমিকদের দিয়েই। ফলে শ্রমিকদের সঠিক সময়ে বেতন ভাতা দেওয়াটা তাদের দায়িত্ব।”

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!