রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও কলেজের প্রভাষক লতা সমাদ্দারকে টিপ পরার কারণে হেনস্তা করেন পুলিশের ইউনিফর্ম পরা এক ব্যক্তি। তবে এ ঘটনায় এখনও কাউকে চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ কর্মকর্তাদের ভাষ্য, বেশ কিছু ভিডিও সংগ্রহ করা হলেও এখন পর্যন্ত “স্পষ্ট কিছু মেলেনি”।
শনিবার (২ এপ্রিল) শেরেবাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন হেনস্তার শিকার হওয়া তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক লতা সমাদ্দার।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের (তেজগাঁও-জোন) অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার রুবাইয়াত জামান বলেন, “আমরা বিষয়টি ‘খুবই গুরুত্বের সঙ্গে’ দেখছি। আমরা এ নিয়ে কাজ করছি, তবে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি।”
শেরেবাংলা নগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সংগ্রহ করা ভিডিওটিতে স্পষ্ট কিছু বোঝা যাচ্ছে না, তবে প্রাথমিকভাবে পুলিশ সদস্য বলে মনে হচ্ছে। আমরা তদন্ত করছি, আদৌ উনি পুলিশ সদস্য কি না, নাকি অন্য কোনো সংস্থার লোক।”
শেরে-বাংলা নগর থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া বলেছেন, গাড়ির লাইসেন্স নাম্বারের কয়েকটি ডিজিট বলতে পেরেছিলেন লতা সমাদ্দার, কিন্তু তা থেকে গাড়িটি শনাক্ত করা যায়নি। তিনি বলেন, “আমরা এখন বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি দিয়ে যাচাই-বাছাই করছি। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি নজরদারি করছেন। তদন্তের আলোকে অপরাধ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।”
এদিকে থানায় অভিযোগ করার সময় শিক্ষক লতা সমাদ্দার পুলিশকে যে মোটরসাইকেলের নম্বর দিয়েছেন তা নিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই নম্বরের “ল” সিরিজের একটি এবং “হ” সিরিজের আরেকটি মোটরসাইকেল আছে।
প্রসঙ্গত, শনিবার সকালে কর্মস্থলের দিকে হেঁটে যাওয়ার সময় পুলিশের পোশাক পরা একজন ব্যক্তি তাকে “টিপ পরছোস কেন” বলে কটূক্তি করেন। তিনি তখন প্রতিবাদ জানালে গায়ের ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন ওই পুলিশ সদস্য।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে লতা সমাদ্দার বলেন, “আমি ঠিক পেছনে তাকিয়ে দেখি, একজন পুলিশ একটা বাইকের ওপর বসে আছে। আমি তার প্রতিবাদ করলে সে নোংরা ভাষায় গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে সে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে আমার শরীরের ওপর চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমি সটকে যাই, কিন্তু তার বাইরের চাপা আমার পায়ে লাগে। আমার পা ইনজ্যুরড (আহত)।”