বিধ্বস্ত গাজার মসজিদে মুয়াজ্জিনের আজানের ধ্বনি

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন
গাজায় ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে বিধ্বস্ত একটি মসজিদ। ছবি রয়টার্স

বিধ্বস্ত গাজার মসজিদে মুয়াজ্জিনের আজানের ধ্বনি

গাজায় ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে বিধ্বস্ত একটি মসজিদের কংক্রিটের স্ল্যাবের বেঁকে যাওয়া রড বেরিয়ে আছে, গম্বুজের একটি অবশিষ্টাংশ ৪৫ ডিগ্রিতে হেলে পড়েছে। এগুলোকে পেছনে রেখে মাথায় চুপি পরা তরুণ মুয়াজ্জিন মুসলিমদের নামাজে আসার আহ্বান জানাচ্ছেন।

মুয়াজ্জিনরা সাধারণত মিনারে দাঁড়িয়ে আজান দেন। মসজিদটির মিনার এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে, কিন্তু বিপজ্জনক অবস্থায়। উপরের একটি অংশ নেই, নিচের অংশটুকু ধ্বংস্তস্তূপে মিশে গেছে। এই চিত্র গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসের আল-তৌবা মসজিদের।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৪৭ মসজিদ, ৭ গির্জা ধ্বংস
গত ৭ অক্টোবর থেকে চালানো অবিরাম হামলায় এসব মসজিদ ও গির্জা ধ্বংস হয়। ছবি সংগৃহীত

হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধে গাজার যে-সব মসজিদে বোমা আঘাত হেনেছে, এটি সেগুলোর একটি। ইসরায়েলের অভিযোগ, সুড়ঙ্গে প্রবেশ, ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ও অপর স্থাপনাকে আড়াল করতে হামাস মসজিদকে ব্যবহার করছে।

ইসরায়েলের অভিযোগ অস্বীকার করে হামাস দাবি করেছে, মসজিদ ও গির্জায় হামলা চালিয়ে বেসামরিকদের হত্যার ন্যায্যতা দিতে এমন মিথ্যা অভিযোগ করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

হামাস-ইসরায়েল অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির ষষ্ঠ দিনে খান ইউনিসের তিনটি মসজিদের ড্রোন ফুটেজ রেকর্ড করেছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এসব ফুটেজে বোমাবর্ষণে ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর ধ্বংসের ভয়াবহতা উঠে এসেছে।

বহুতল আল-তৌবা মসজিদের গম্বুজ অদৃশ্য। একমাত্র যে অংশটি এখনও চেনা যায় তা হচ্ছে একটি বৃত্তাকার ভিত্তি। ধসে পড়া ছাদের পাশে রয়েছে তা। এখানেই দাঁড়িয়েছেন মুয়াজ্জিন

গাজায় যুদ্ধবিরতি: বিধ্বস্ত ঘরে ফিরছে ফিলিস্তিনিরা
ইসরায়েলি হামলার ধ্বংসস্তুপে পরিনত গাজা । ছবি রয়টার্স

শহরের ভিন্ন অংশে অবস্থিত আল-আনসারি মসজিদ। এটি পরিণত হয়েছে সিমেন্ট ও নুড়ি পাথরে পূর্ণ একটি কক্ষে, এগুলোর মধ্যে ধুলোময় জায়নামাজ দেখতে পাওয়া গেছে। ধসে পড়া ও হেলে পড়া দেয়ালের ফাঁকে লোহার রেলিং ও আরবি লেখাযুক্ত টাইলস দৃশ্যমান।

উভয় মসজিদ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত। পাশেই রয়েছে কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবন।

তৃতীয় মসজিদটির নাম আল-আমিন মোহাম্মদ। এটির হলুদ রঙের গম্বুজের একাংশ রয়েছে। কিন্তু চূড়ায় বড় একটা গর্ত তৈরি হয়েছে। গম্বুজটি হেলে পড়েছে একপাশে। কারণ নিচের ছাদ ধসে পড়েছে।

মসজিদটির পাশে বালুময় প্রান্তরে একটি তাঁবুতে গৃহহীন মানুষেরা অবস্থান করছেন। পরে রয়েছে কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্ট ও ভূমধ্যসাগর।

বিধ্বস্ত গাজার মসজিদে মুয়াজ্জিনের আজানের ধ্বনি
বিমান হামলা রাস্তাগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, অ্যাম্বুলেন্স এবং উদ্ধারকারী যানবাহনগুলো পৌঁছানো কঠিন করে তুলেছে। ছবি এপি

৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় এই সংঘাতের সূত্রপাত। ইসরায়েলের দাবি, ওই হামলায় ১২০০ নিহত ও ২৪০জনকে জিম্মি করেছে হামাস যোদ্ধারা। হামাসকে নির্মূলের অঙ্গীকারে ঘনবসতিপূর্ণ গাজায় বিমান হামলা ও স্থল অভিযান পরিচালনা করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, এখন পর্যন্ত ১৫ হাজারের বেশি নিহত হয়েছেন। এদের ৪০ শতাংশ শিশু। নিখোঁজ রয়েছে আরও সাড়ে ছয় হাজার। আশঙ্কা করা হচ্ছে তারা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন।

গাজার দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এখন বেশিরভাগ খান ইউনিসসহ দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থান করছেন। ইসরায়েল ছোট্ট উপকূলীয় ছিটমহলটির উত্তরাঞ্চল খালি করতে বলার পর বেশিরভাগ দক্ষিণে আশ্রয় নিয়েছেন। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস গাজার পরিস্থিতিকে মানবিক বিপর্যয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

সূত্র: রয়টার্স

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!