গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযানে লক্ষ্য পূরণ হবে?

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
9 মিনিটে পড়ুন
একটি ট্যাংকের মধ্যে বসে আছেন এক ইসরায়েলি সেনা।ছবি রয়টার্স

ইসরায়েলের নেতারা হামাসকে পৃথিবী থেকে মুছে ফেলার ঘোষণা দিয়েছেন। গাজাও আর আগে যা ছিল সে অবস্থায় ফেরত যাবে না, বলেছেন তারা।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়। এছাড়াও ২২৪ জনকে ইসরায়েল থেকে ধরে গাজায় নিয়ে জিম্মি করেছে হামাস।

ওই হামলার পর থেকেই হামাসকে নির্মূল করতে গাজা অবরুদ্ধ করে রেখে নির্বিচারে বিমান থেকে বোমা হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসের ‘সন্ত্রাসের কারখানা’ এবং রাজনৈতিক কাঠামো গুঁড়িয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।

এই লক্ষ্য হাসিল করতে গাজায় ইসরায়েল বৃহত্তর স্থল অভিযান শুরু করবে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচেছ। ইসরায়েল ইতোমধ্যে গাজায় স্থল অভিযানের পরিসর বাড়াচ্ছে বলে ঘোষণাও দিয়েছে।

হামাস পরাজিত হয়েছে বলে একবার সন্তুষ্ট হয়ে গেলে ইসরায়েল গাজা থেকে পুরোপুরি সরে আসবে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেখানে নতুন একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন এবং গাজার দৈনন্দিন জীবনে ইসরায়েলের আর কোনও দায়-দায়িত্ব থাকবে না বলেও জানিয়েছেন।

কিন্তু ইসরায়েলের এ লক্ষ্য কি বাস্তবসম্মত? কমান্ডাররা কীভাবে এ লক্ষ্য পূরণ করবেন? ইসরায়েলের সেনা বেতারেরর সামরিক বিশ্লেষক আমির বার শ্যালোম মনে করেন, ইসরায়েল প্রত্যেক হামাস সদস্যকে নির্মূল করতে পারবে না। তবে যতটা সম্ভব হামাসকে দুর্বল করে দিতে পারবে, যাতে গোষ্ঠীটির আর কোনও হামলা চালানোর সক্ষমতা না থাকে।

দলটিকে পুরোপুরি নির্মূল করার চাইতে তাদেরকে দুর্বল করাটাই বেশি বাস্তবসম্মত হতে পারে। ইসরায়েল এরই মধ্যে হামাসের সঙ্গে চারটি যুদ্ধ লড়েছে। প্রতিবারই হামাসের রকেট হামলা ঠেকাতে ইসরায়েল ব্যর্থ হয়েছে।

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস এর মুখপাত্র বলেছেন, তাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে হামাসের সামরিক সক্ষমতা বিনাশ করা, যাতে তারা হুমকি না হয় এবং ইসরায়েলিদেরকে হত্যা করতে না পারে।

হামাস-ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চাই না: যুক্তরাষ্ট্র
একটি ট্যাংকের উপর পতাকা লাগাচ্ছেন এক ইসরায়েলি সেনা। ছবি রয়টার্স

তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যালেস্টাইন স্টাডিজ এর প্রধান মাইকেল মিলস্টেইনও একমত প্রকাশ করে বলেছেন, হামাসকে ধ্বংস করা অনেক কঠিন হবে। কারণ, বিশ্বজুড়ে ইসলামপন্থি আন্দোলনকে প্রভাবিত করা ইসলামপন্থি আদর্শবাদী দল হামাসকে নির্মূল করা যাবে- এমন বিশ্বাস করাটা ধৃষ্টতা।

হামাস রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলকে ধ্বংসের লক্ষ্য ঘোষণা করেছে। কারণ, তারা মনে করে ফিলিস্তিনি ভূমিতে অন্যায়ভাবে ইসরায়েল রাষ্ট্র তৈরি হয়েছে। এ সংগঠনটি এক সময় মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুডের একটি শাখা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সশস্ত্র এই সংগঠন মূলত ইরানের বিপ্লব থেকে উদ্দীপ্ত। ইরান ছাড়াও সিরিয়া ও লেবাননের হিজবুল্লাহর সমর্থন পাচ্ছে তারা।

হমাসের সশস্ত্র শাখার আছে ২৫ হাজার যোদ্ধা। তাছাড়া,সমাজকল্যাণ কাঠামো বা ‘দাওয়া’র অংশ হিসাবে হামাসের রয়েছে আরও ৮০ থেকে ৯০ হাজার সদস্য।

স্থল অভিযানে আছে পদে পদে ঝুঁকি:

গাজায় ইসরায়েল স্থল অভিযান চালাতে গেলে কয়েকটি বিষয় আছে, যেগুলোর কারণে অভিযান পরিকল্পনামতো নাও এগুতে পারে।

হামাসের সশস্ত্র শাখা আল কাসাম ব্রিগেড ইসরায়েলের হামলার জন্য প্রস্তুত থাকবে। বিস্ফোরক ডিভাইস পেতে রাখবে এবং চোরাগোপ্তা হামলা চালানোর পরিকল্পনা করবে। তারা ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর হামলায় তাদের ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে থাকা সুড়ঙ্গপথগুলো ব্যবহার করতে পারে।

২০১৪ সালে গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলের পদাতিক বাহিনী ট্যাংক-বিধ্বংসী মাইন, স্নাইপারের গুলি এবং চোরাগোপ্তা হামলার কারণে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছিল। লড়াইয়ে বেসামরিক মানুষের প্রাণহানিও হয়েছিল প্রচুর।

ফলে এবার ইসরায়েল উত্তর গাজা থেকে লোকজনকে দক্ষিণে সরে যেতে বলেছে। তারা দীর্ঘমেয়াদি লড়াই হবে বলে সতর্কও করেছে। লড়তে ডেকে পাঠিয়েছে রেকর্ড ৩ লাখ ৬০ হাজার রিজার্ভ সেনাকেও।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, গাজায় অবরুদ্ধ অবস্থায় মানুষের মৃত্যু বাড়তে থাকার পাশাপাশি সেখানে মানবিক বিপর্যয় ঘনিয়ে আসা নিয়ে জাতিসংঘের সতর্কবার্তা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুদ্ধবিরতি করার জন্য চাপ জোরদার হতে থাকার মধ্যে ইসরায়েল কতক্ষণ অভিযান চালাতে পারবে?

গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযানে লক্ষ্য পূরণ হবে?
গাজার দিকে গোলাবর্ষন করছে ইসরায়েলি বাহিনী। ছবি রয়টার্স

ইসরায়েলের নেতৃস্থানীয় এক নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বিষয়ক সাংবাদিক ইয়োসি মেলম্যান বলেছেন, সরকার এবং সেনাবাহিনী মনে করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের পক্ষে আছে -অন্তত পশ্চিমা দেশগুলো। তাই তারা অপাতত তাদের হাতে অনেক সময় আছে মনে করে সেনা জড়ো করছে।

কিন্তু ইয়োসি মনে করেন, খুব শিগগিরই কিংবা পরে যখনই হোক না কেন ইসরায়েলের মিত্রদেশগুলো গাজায় মানুষের দুর্দশা দেখলে তখন অভিযানে রাশ টানার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে। তাছাড়া, হতাহতের ঘটনা বাড়তে থাকলেও ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়বে।

জিম্মিদের রক্ষা করা:

গাজায় হামাস যোদ্ধাদের হাতে জিম্মিদের অনেকেই ইসরায়েলি। তবে তাদের মধ্যে একটা বড় অংশই আছে বিদেশি নাগরিক এবং দ্বৈত নাগরিক। মানে হচ্ছে, তারা অন্য দেশেরও নাগরিক- এসব দেশের মধ্যে আছে ‍যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য। ইসরায়েল অভিযান চালালে এই জিম্মিদের নিরাপদে মুক্ত করার বিষয়টিও ঝুঁকির মুখে পড়ে যাবে।

ফ্রান্সের এক পরিকল্পনাবিদ বলেন, ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) এর সোজাসাপ্টা পথ দুটোই আছে। এক হল, জিম্মিদের জীবন বাঁচাতে সংযত থাকা কিংবা আরেকটি হচ্ছে, হামাসের যতটা সম্ভব ক্ষতি করা।

জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা হামাসের হাতে বন্দি স্বজনদের বাঁচানোর জন্য হৃদয়নিঙড়ানো যে আকুতি জানাচ্ছে, তাতে ইসরায়েলি নেতাদের ওপর চাপ বাড়ছে।

২০১১ সালে ইসরায়েল হামাসের হাতে পাঁচ বছর ধরে বন্দি থাকা মাত্র একজন ইসরায়েলি সেনা গিলাদ শালিতের মুক্তির জন্য ১১০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছিল।

তবে ইসরায়েল আরেকবার এমন বেশি সংখ্যক ফিলিস্তিনি মুক্তির পদক্ষেপ নিতে গেলে দুবার ভাববে। কারণ, গতবারের বন্দি বিনিময়ের সময় মুক্তি পেয়েছিলেন ইয়াহিয়া সিনোয়ার, যিনি তখন থেকেই গাজায় হামাসের রাজনৈতিক নেতা হয়ে গেছেন

গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযানে লক্ষ্য পূরণ হবে?
হামলার হাতে জিম্মিদের ছবিযুক্ত পোস্টারের মাঝে দাঁড়িয়ে দুজন আলিঙ্গন করছেন। ছবি এএফপি

প্রতিবেশী দেশগুলো নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি নজরে রাখছে:

গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযান কতদিন চলবে এবং এর ফল কি হবে সেটি নির্ভর করছে আরও একটি বিষয়ের ওপর। আর তা হচ্ছে, ইসরায়েলের প্রতিবেশী দেশগুলো কি প্রতিক্রিয়া দেখায় সেটি।

মিশরের রাফাহ সীমান্ত পারাপার এলাকাটি গাজায় মানবিক ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। এই সীমান্ত দিয়ে এখন সামান্য কিছু ত্রাণ গাজায় ঢুকছে। এপথে গাজা ছাড়ার অপেক্ষায় আছে বিদেশিরা এবং বিদেশি পাসপোর্টধারী ফিলিস্তিনিরা।

ইসরায়েলের ইন্সটিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজ এর গবেষক ওফির উইন্টার বলেন, “ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে গাজাবাসীরা যতবেশি দুর্ভোগে পড়বে মিশর ততই চাপে পড়বে। মিশর ফিলিস্তিনিদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়নি বলেই মনে হচ্ছে।

তবে তার মানে এই না যে, কায়রো দলে দলে গাজাবাসীদের উত্তরের সিনাইয়ে ঢুকতে দেবে। মিশরের প্রেসিডেন্ট ফাত্তাহ আল সিসি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, গাজাবাসীরা সিনাই উপদ্বীপে ঢোকার কোনওরকম চেষ্টা করলে মিশরীয়রা বিক্ষোভে রাস্তায় নামবে।”

জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ এরই মধ্যে গাজা থেকে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের না নেওয়ার ব্যাপারে ঘোষণা দিয়েছেন। সতর্ক করে তিনি বলেছেন, “জর্ডানে কোনও শরণার্থী নয়। মিশরে কোনও শরণার্থী নয়।”

ওদিকে,লেবাননের হিজবুল্লাহ তো ওঁত পেতে বসেই আছে। ইসরায়েলের সঙ্গে এরই মধ্যে সীমান্তে কয়েকদফা সংঘাতও হয়েছে গোষ্ঠীটির। ওদিকে, হিজবুল্লাহর প্রধান মদদদাতা ইরান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নতুন যুদ্ধ শুরুর হুমকি দিয়েই যাচ্ছে।

গাজায় ইসরায়েলের শেষ খেলা কি?

ইসরায়েলের অভিযানে হামাস যদি অতিশয় দুর্বল হয়েই পড়ে,তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে সেই জায়গায় তখন কে আসবে?

ইসরায়েল ২০০৫ সালে গাজা থেকে সব সেনা এবং হাজার হাজার বসতিস্থাপনকারীকে সরিয়ে নিয়েছিল। সেখানে আবার দখলদার বাহিনী হিসাবে ফেরার কোনও অভিপ্রায় ইসরায়েলের নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলছেন, “সেটি হবে বড় ধরনের ভুল।”

ক্ষমতায় শূন্যতা খুবই মারাত্মক ঝুঁকিও সৃষ্টি করতে পারে। একটি সমস্যা সমাধান করতে গেলে দেখা দিতে পারে নতুন আরও ১০ টি সমস্যা।

ইসরায়েলের ইন্সটিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজ এর ওফির উইন্টার মনে করেন, ক্ষমতায় রদবদল আবার ধীরে ধীরে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের (পিএ) ফিরে আসার পথ সুগম করতে পারে। যে কর্তৃপক্ষকে ২০০৭ সালে গাজা থেকে উৎখাত করেছিল হামাস।

পিএ বর্তমানে পশ্চিম তীরের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে সেখানে তাদের অবস্থান দুর্বল। তাদের আবার গাজায় ফেরানো অনেক কঠিন হবে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একটি অন্তর্বর্তীকালীন সমাধান দিতে পারে, যেমনটি তারা দিয়েছিল ১৯৯৯ সালে। সে সময় সার্বিয়া বাহিনী চলে যাওয়ার সময় জাতিসংঘের পরিচালনায় ছিল কসোভো। কিন্তু জাতিসংঘে ইসরায়েলের আস্থা নেই।

আরেকটি বিকল্প হতে পারে একটি প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করা, যেটি পরিচালনা করবে গাজার মেয়র, আদিবাসী, জাতিগোষ্ঠী এবং বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন এবং এতে মিশর, যুক্তরাষ্ট্র, পিএ এবং অন্যান্য আরব দেশগুলোরও সম্পৃক্ততা থাকবে।

মিশরের প্রেসিডেন্ট গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কোনও আগ্রহ দেখাননি। আর যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার অবকাঠামো আদতে যুদ্ধের আগে যেভাবে গড়ে তোলা হয়েছিল সেভাবেই পুনরায় গড়ে তুলতে হবে।

গাজায় কোনও কিছু ঢোকার ক্ষেত্রে ইসরায়েল কড়াকড়ি আরোপ করে রাখতে চাইবে। তাছাড়া, ইসরায়েলিদের সুরক্ষার জন্য গাজার বেষ্টনী বরাবর বাফার জোন সম্প্রসারণের আহ্বানও জানানো হয়ে আসছে।

তাই গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ফল যাই হোক, ইসরায়েল চাইবে হামাসের নজিরবিহীন হামলার মতো একই ধরনের হামলা যাতে আর কখনও না ঘটে সেটি নিশ্চিত করতে।

সূত্র: বিবিসি।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!