গাজায় অবরোধ আরোপ: শিগগিরই ‘ফুরিয়ে যাবে জ্বালানি, ওষুধ ও খাবার’

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
5 মিনিটে পড়ুন
সরবরাহের অনুমতি না দিলে গাজা উপত্যকা নতুন মানবিক সংকটের দ্বারপ্রান্তে চলে যাবে। ছবি রয়টার্স

গাজায় অবরোধ আরোপ: শিগগিরই ‘ফুরিয়ে যাবে জ্বালানি, ওষুধ ও খাবার’

ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার জবাবে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবরোধ আরোপ করার পর কর্তৃপক্ষ বলছে, পণ্য সরবরাহের অনুমতি না দিলে গাজা উপত্যকা নতুন মানবিক সংকটের দ্বারপ্রান্তে চলে যাবে।

বাসিন্দারা বলছেন যে, শনিবার থেকে গাজা উপত্যকায় কোন ত্রাণ পৌঁছেনি, এবং সোমবার ইসরায়েল এই অঞ্চলে “সম্পূর্ণ অবরোধ” ঘোষণা করেছে – তারা বলেছে যে বিদ্যুৎ, খাদ্য, জ্বালানী এবং পানি সরবরাহ বন্ধ রাখা হবে।

গাজায় অবরোধ আরোপ: শিগগিরই 'ফুরিয়ে যাবে জ্বালানি, ওষুধ ও খাবার'
বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে গাজা উপত্যকা। ছবি রয়টার্স

গাজায় প্রায় ২৩ লাখ মানুষ বসবাস করে, যাদের ৮০ শতাংশ সাহায্যের উপর নির্ভর করে।

ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় সেখানে ৫০০ জনের বেশি মানুষ মারা গিয়েছে।

ইসরায়েল, গাজার আকাশসীমা এবং এর উপকূল নিয়ন্ত্রণ করে, এবং কারা বা কী ধরণের পণ্য এর সীমানা অতিক্রম করতে পারবে তাও নিয়ন্ত্রণ করে।

মিশরও গাজার সীমান্ত দিয়ে মানুষ বা যেকোনো পণ্যের প্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে।

শনিবার সকালে হামলা শুরুর পর থেকে ইসরায়েল গাজায় খাদ্য ও ওষুধসহ সব ধরনের সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।

অনেকেই বর্তমানে বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট সেবা ছাড়াই আছেন এবং এরমধ্যে হয়তো প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পানি সরবরাহও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

কর্তৃপক্ষ সতর্ক করেছে যে, ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গাজা উপত্যকার জ্বালানি শেষ হয়ে যাবে। জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা ওসিএইচএ সতর্ক করে বলেছে যে, অবশিষ্ট জ্বালানি দিয়ে হাতে গোনা কয়েকদিন মাত্র চলা যাবে।

এমনকি সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞার আগেও, গাজার বাসিন্দারা আগে থেকেই ব্যাপক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, চলাচলে বিধিনিষেধ এবং পানির সংকটে ভুগছিল।

গাজায় অবরোধ আরোপ: শিগগিরই 'ফুরিয়ে যাবে জ্বালানি, ওষুধ ও খাবার'
গাজা উপত্যকার ৮০ শতাংশ মানুষ সাহায্যের ওপর নির্ভর করে। ছবি সংগৃহীত

সোমবার, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন যে তারা এই অঞ্চলে এখন “সম্পূর্ণ অবরোধ” আরোপ করবে।

“না বিদ্যুৎ, না খাবার, না পানি, না গ্যাস- সব বন্ধ থাকবে,” তিনি বলেন, “আমরা পশুদের সাথে লড়াই করছি এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি।”

ইসরায়েলি অবকাঠামোমন্ত্রী পরে গাজায় পানি সরবরাহ অবিলম্বে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন: “অতীতে যা ছিল তা ভবিষ্যতে আর থাকবে না।”

এই ঘোষণার আগে এক বিবৃতিতে, ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, ইসরায়েলের পদক্ষেপের কারণে হাসপাতালগুলো ওষুধ, চিকিৎসা সরবরাহ এবং জ্বালানির ঘাটতির মুখে পড়েছে।

তারা “বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু করা” সেইসাথে ওষুধ, জ্বালানি এবং পাওয়ার জেনারেটরের মতো জরুরি সেবা সরবরাহ করার জন্য ইসরায়েলকে চাপ দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, শনিবার থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল ব্যাপক প্রতিশোধমূলক বিমান হামলা শুরু করেছে, এতে অন্তত ৫১১ জন নিহত এবং ২৭৫০ জন আহত হয়েছেন।

রবিবার রাতে গাজা উপত্যকায় বড় ধরণের হামলা হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরে এটাই সবচেয়ে বড় পরিসরের হামলা। সারা রাত ধরে গাজা উপত্যকা জুড়ে একের পর এক বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

ভোরের আলো ফোটার পরও হামলা অব্যাহত থাকে, কালো ধোঁয়ায় আকাশ ছেয়ে যায়। বাতাসে ধসে পড়া ভবনের ধুলোর স্বাদও পাওয়া যাচ্ছিল।

গাজায় অবরোধ আরোপ: শিগগিরই 'ফুরিয়ে যাবে জ্বালানি, ওষুধ ও খাবার'
গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের নিক্ষেপ করা রকেটের দেখা যাচ্ছে। ছবি রয়টার্স

শনিবার সকালে হামাস গাজার পূর্বে সীমান্তের যে এলাকা থেকে হামলা চালানো শুরু করেছিল, ইসরায়েল সেই অঞ্চল লক্ষ্য করে কয়েক দফা হামলা চালায়।

ইসরায়েল এলাকাগুলোয় নিরাপত্তা জোরদার করার চেষ্টা করছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে জানা গিয়েছে, ইসরায়েলের সীমান্ত এলাকায় আর্টিলারি ফায়ার ব্যবহার করছে।

ইসরায়েল জানিয়েছে যে, তারা গাজায় হামাসের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছে, তবে ওই হামলায় বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে।

ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজার দুটি শরণার্থী শিবির – আল-শাতি (বিচ ক্যাম্প নামেও পরিচিত) এবং জাবালিয়া ক্যাম্পে – ইসরায়েল বিমান হামলা চালিয়েছে, এতে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

জাবালিয়া থেকে অনলাইনে শেয়ার হওয়া এক ভিডিওতে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা হতে দেখা যায়, যার মধ্যে একজন ব্যক্তির লাশ নিয়ে যেতে দেখা যায় যা রক্ত ও ধুলোয় ঢেকে ছিল।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, গাজায় জাতিসংঘের একটি স্কুলে বিমান হামলা চালানো হয়েছে যেখানে শিশু ও বৃদ্ধসহ শত শত বেসামরিক মানুষ অবস্থান করছিল।

জাতিসংঘ হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, স্কুলটি “মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে”, কিন্তু এতে কেউ নিহত হয়নি।

একটি মসজিদের পাশাপাশি বাড়িঘরও হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে।

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের মতে, গাজার দক্ষিণে রাফাহ শহরে হামলায় একই পরিবারের ১৯ জন সদস্য নিহত হয়েছেন।

জাতিসংঘ সোমবার জানিয়েছে, গাজার এক লাখ ২৩ হাজার ৫৩৮ জন মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই “ভয়, নিরাপত্তার আশঙ্কা এবং তাদের বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কারণে” আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন।।

জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা ওসিএইচএ আরও জানায়, বাস্তুচ্যুত মানুষদের মধ্যে ৭৩ হাজার মানুষকে আশেপাশে স্কুলে আশ্রয় দেয়া হয়েছে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!