ইউক্রেইনে যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাস্টার বোমা দেয়ার সিদ্ধান্তে মিত্রদের অস্বস্তি

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন
ক্লাস্টার বোমার ফাইল ছবি রয়টার্স

ইউক্রেইনে যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাস্টার বোমা দেয়ার সিদ্ধান্তে মিত্রদের অস্বস্তি

যুদ্ধে সামরিক সহায়তা হিসেবে ইউক্রেইনকে ক্লাস্টার বোমা দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত ওয়াশিংটন নিয়েছে তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোর মধ্যে অস্বস্তি বাড়ছে।

গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র বিতর্কিত ওই অস্ত্রটি ইউক্রেইনে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে। যেটিকে ‘খুবই কঠিন সিদ্ধান্ত’ বলে বর্ণনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাজ্য, কানাডা, নিউ জিল্যান্ড এবং স্পেন বলেছে, তারা সবাই বিতর্কিত ওই অস্ত্র ব্যবহারের বিরুদ্ধে।

বেসামরিক নাগরিকদের উপর ভয়াবহ বিপর্যয় নামিয়ে আনতে পারে বিধায় বিশ্বের শতাধিক দেশ ক্লাস্টার বোমার উৎপাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।

ক্লাস্টার বা গুচ্ছ বোমা হলো একটি বড় বোমার মধ্যে অসংখ্য ছোট ছোট বোমা যা বৃহৎ এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালাতে পারে।

যুদ্ধে এই অস্ত্রের ব্যর্থতা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। কারণ, একটি ক্লাস্টার বোমা থেকে অনেকটা গ্রেনেড আকৃতির যে ছোট ছোট বোমাগুলো বিস্তৃত এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে তার অনেকগুলিই অবিস্ফোরতি অবস্থায় থেকে যায়।

ইউক্রেইনে যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাস্টার বোমা দেয়ার সিদ্ধান্তে মিত্রদের অস্বস্তি
ক্লাস্টার বা গুচ্ছ বোমা। ছবি সংগৃহীত

ছোট ছোট ওইসব বোমা বছরের পর বছর ধরে মাটিতে অবিস্ফোরিত অবস্থায় পড়ে থাকে এবং যেকোনো সময় বিস্ফোরিত হয়ে বেসামরিক মানুষের প্রাণনাশের কারণ হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেইনকে ৮০ কোটি মার্কিন ডলার অর্থমূল্যের যে সামরিক সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তার অংশ হিসেবে ক্লাস্টার বোমা পাঠানো হচ্ছে।

শুক্রবার সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেন, এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি মিত্রের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।

তিনি বলেন, এ সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে নাকি হবে না সেটা নিয়ে তিনি দীর্ঘ সময় চিন্তা-ভাবনা করেছেন। ‘‘বাধ্য হয়েই আমাকে এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। কারণ, ইউক্রেইনের হাতে থাকা গোলাবারুদ দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।”

ইউক্রেইনে যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাস্টার বোমা দেয়ার সিদ্ধান্তে মিত্রদের অস্বস্তি
খারকিভের গাড়ির ছাদে একটি ক্লাস্টার অস্ত্রের হামলা। ছবি সংগৃহীত

বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ক্লাস্টার বোমা ‘সংঘাত শেষ হওয়ার অনেক পরও বেসামরিক মানুষের জীবনের জন্য বড় ধরণের হুমকির কারণ হয়ে থাকে’।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান সাংবাদিকদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেইনে যে ক্লাস্টার বোমা পাঠাতে যাচ্ছে সেগুলো ইতিমধ্যে যুদ্ধে রাশিয়ার ব্যবহার করা ক্লাস্টার বোমার চেয়ে ব্যর্থতার হার কম।

তবে যুক্তরাষ্ট্র তাদের এ সিদ্ধান্তের পেছনে যত সাফাই দিক না কোনো, বেশ কয়েকটি পশ্চিমা মিত্র দেশ তাদের এ সিদ্ধান্তে সমর্থন দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, ‘‘ক্লাস্টার যুদ্ধাস্ত্র বিষয়ক কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী ১২৩টি দেশের মধ্যে যুক্তরাজ্য একটি। আমরা এ জাতীয় অস্ত্র উৎপাদন বা ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছি।”

ইউক্রেইনে যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাস্টার বোমা দেয়ার সিদ্ধান্তে মিত্রদের অস্বস্তি
২০২৩ সালের এপ্রিলে ইউক্রেনের একটি মাঠে পাওয়া ক্লাস্টার বোমার অবশিষ্টাংশ। ছবি সংগৃহীত

স্পেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্গারিটা রবলেস আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেন, তার দেশ ইউক্রেইনে এ ধরণের অস্ত্র পাঠানোর ‘তীব্র বিরোধিতা’ করেছে।

কানাডা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা শিশুদের উপর এই বোমার সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে এই বোমা কখনো কখনো বহু বছর ধরে অবিস্ফরিত থেকে যায়।

‘‘কানাডা ক্লাস্টার বোমা ব্যবহারের বিরুদ্ধে ছিল এবং আমরা ক্লাস্টার যুদ্ধাস্ত্রের কনভেনশনের সব শর্ত পুরোপুরি মেনে চলি।”

যদিও ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এটিকে ‘সময়োপযোগী, বিস্তৃত এবং অত্যন্ত প্রয়োজনীয়’ সামরিক সহায়তা প্যাকেজ বলে বর্ণনা করে যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!