ভ্লাদিমির পুতিন কোথায়? ওয়াগনার গ্রুপের নাটকীয় বিদ্রোহের পর তাদের সামরিক বহর যখন মস্কোর দিকে ছুটছে, তার দুদিন পর সোমবার সারাটা দিন আমাদের মাথায় এই প্রশ্নটাই ঘুরছিল।
শনিবার অনেক রাতে মি. পুতিনের একজন মুখপাত্র ওয়াগনার গ্রুপের বিদ্রোহের অবসানের লক্ষ্যে একটি সমঝোতার ঘোষণা দেন। কিন্তু এই বিতর্কিত সমঝোতা নিয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনের নিজের মন্তব্য কখন জানা যাবে?
এই সমঝোতাটি বিতর্কিত, কারণ ওয়াগনার গ্রুপের ভাড়াটে সেনারা শুধু বিদ্রোহই করেনি, তারা বেশ সহজে অনেক সামরিক স্থাপনা দখল করেছে এবং এরপর মস্কোর দিকে রওনা দিয়েছে। এই বিদ্রোহের সময় রুশ বিমানবাহিনীর পাইলটরা নিহত হয়েছে।
কিন্তু তারপরও ক্রেমলিন ওয়াগনার বিদ্রোহীদের এবং তাদের নেতা ইয়েভগেনি প্রিগোশিনের বিচার করা হবে না বলে রাজী হয়েছে, বিনিময়ে মি. প্রিগোশিনও বিদ্রোহ থামিয়ে তার সেনাদের ফিরিয়ে এনেছেন।
রাশিয়ায় এই বিদ্রোহের পর গত এক সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে একের পর এক অনেক কটি অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে দেখা গেছে। এগুলো ছিল বেশ ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠান, যার সবগুলোই টেলিভিশনে প্রচার করা হয়েছে। মনে হচ্ছিল এসবের লক্ষ্য যেন এটা প্রমাণ করা যে সবকিছুই তার নিয়ন্ত্রণে আছে।
সোমবার: জাতির উদ্দেশে ভাষণ
![বিদ্রোহের পর কয়েকটি প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে গিয়ে যে বার্তা দিতে চাইছেন পুতিন 38 Untitled 2 3 বিদ্রোহের পর কয়েকটি প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে গিয়ে যে বার্তা দিতে চাইছেন পুতিন](http://www.samoyiki.com/wp-content/uploads/2023/07/Untitled-2-3.jpg)
সোমবার আমরা মি. প্রিগোশিনের কথা শুনতে পাই। অনলাইনে পোস্ট করা এক অডিও বার্তায় তিনি তার দিকের কাহিনীর বর্ণনা দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, তার বাহিনীর সদস্যরা মস্কোর পথে রওনা হয়েছিল যাতে করে, তার ভাষায়, ইউক্রেন যুদ্ধে ‘ভুলের’ জন্য যারা দায়ী, তাদের জবাবদিহি করা যায়।
এরপর সেই সন্ধ্যায় একটি ঘোষণা দেয়া হলো: “প্রস্তুত থাকুন, প্রেসিডেন্ট পুতিন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন।” তখন মনে হচ্ছিল ক্রেমলিনের এই নেতা যেন কিছুটা দেরিতে এখন ঘটনার সঙ্গে তাল মেলানোর চেষ্টা করছেন।
রাত দশটার পর প্রেসিডেন্ট পুতিনকে দেখা গেল টেলিভিশনের পর্দায়। অনেক রাতে জাতির উদ্দেশে এরকম ভাষণ বেশ অস্বাভাবিক একটা ব্যাপার। সোশ্যাল মিডিয়ায় এরকম অনেক গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়লো যে তার এই ভাষণে হয়তো “রাশিয়ার ভাগ্য নির্ধারিত হবে।” প্রেসিডেন্টের ভাষণ শোনার জন্য যখন আমরা টেলিভিশন অন করলাম, তখন আমাদের বুক অজানা আশংকায় ধুকপুক করছিল।
তবে শীঘ্রই এটা পরিষ্কার হয়ে গেল যে, প্রেসিডেন্ট পুতিনের ভাষণে আসলে রাশিয়ার ভাগ্য নির্ধারিত হবে না। কারণ ভাষণে কোন বড় ঘোষণা ছিল না। কিন্তু যে পাঁচ মিনিটের ভাষণ তিনি দেন, তাতে এরকম অনেক ইঙ্গিতই ছিল, ক্রেমলিন এখন কিভাবে এসব নাটকীয় ঘটনাবলীকে তাদের সুবিধে-মত ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করবে।
পুতিন তার ভাষণে এমন এক চিত্র তুলে ধরলেন, যেন ওয়াগনারের নেতার বিশ্বাসঘাতকতাকে মোকাবেলা করতে পুরো রাশিয়া ঐক্যবদ্ধ।
তিনি সবাইকে তার পক্ষে আনার চেষ্টা করলেন: তিনি রাশিয়ার জনগণকে ধন্যবাদ দিলেন, ধন্যবাদ জানালেন রাশিয়ার সরকারী কর্মকর্তা, ধর্মীয় নেতা এবং সশস্ত্র বাহিনীকে, তার নিরাপত্তা বাহিনীকেও।
তিনি ওয়াগনার বাহিনীর নিয়মিত সদস্যদেরকে বিদ্রোহের নেতাদের থেকে আলাদা করে দেখালেন। তাদেরকে তিনি দেশপ্রেমিক বলে প্রশংসা করলেন। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা, তিনি নিজেকে এমন এক নেতা হিসেবে উপস্থাপন করলেন, যিনি বড় ধরণের রক্তপাত এড়াতে পেরেছেন।
“যখনই এসব ঘটনা ঘটতে শুরু করেছিল, আমার নির্দেশ মেনে এমন সব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে যাতে করে রক্তপাত এড়ানো যায়।”
সমঝোতা নিয়ে যে বিতর্কের কথা আমি বলছিলাম, সেটা মনে করে দেখুন। মি. পুতিন কিন্তু সে সম্পর্কে কোন কথাই বলেননি। কিন্তু, এটা সত্যি, রাশিয়া একেবারে খাদের কিনার থেকে ফিরে এসেছে। সেটাই হচ্ছে আসল কথা।
মঙ্গলবার: সৈন্যদের মুখোমুখি
![বিদ্রোহের পর কয়েকটি প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে গিয়ে যে বার্তা দিতে চাইছেন পুতিন 39 Untitled 3 3 বিদ্রোহের পর কয়েকটি প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে গিয়ে যে বার্তা দিতে চাইছেন পুতিন](http://www.samoyiki.com/wp-content/uploads/2023/07/Untitled-3-3.jpg)
সোমবার প্রেসিডেন্ট পুতিন আসলে ঘটনার সঙ্গে তাল মেলানোর চেষ্টা করছিলেন। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে তিনি তার কর্তৃত্ব পুন-প্রতিষ্ঠার জন্য পূর্ণ উদ্যমে নেমে পড়লেন।
তাড়াহুড়ো করে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেন রুশ কর্তৃপক্ষ- সেখানে বিরাট জাঁক-জমকের ব্যবস্থা করা হলো। ক্রেমলিনের ক্যাথেড্রাল স্ট্রিটে জড়ো করা হলো আড়াই হাজার সেনা, রুশ গার্ড এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তা। রুশ সাম্রাজ্য শাসনকারী জারদের অভিষেক বা শেষকৃত্যানুষ্ঠান হতো যে রাস্তায়, সেই রাস্তায় লাইন ধরে দাঁড়ালেন তারা।
এরপর দেখা দিলেন প্রেসিডেন্ট পুতিন: বিরাট শান-শওকতের সঙ্গে ক্রেমলিনের অনেক সিঁড়ি বেয়ে তিনি নেমে এলেন এই স্কোয়ারে। তার পুরো পথে লাল কার্পেট পাতা। এরপর ক্রেমলিনের ক্যাথেড্রালের পেঁয়াজ-আকৃতির গম্বুজ পেছনে রেখে প্রেসিডেন্ট এবং সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক পুতিন সৈন্যদের উদ্দেশে তার ভাষণ দিলেন।
কিন্তু প্রেসিডেন্ট পুতিন কথা বলা শুরু করার আগেই এই ছবি যেন সব কথা বলে দিচ্ছিল। এখানে সবাই এক জায়গায় সমবেত: অর্থোডক্স চার্চ, ক্রেমলিন, প্রেসিডেন্ট এবং সেনাবাহিনী। এটি আমাকে পুরনো রুশ সাম্রাজ্যের শ্লোগানের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছিল: “ধর্মের জন্য, জারের জন্য এবং পিতৃভূমির জন্য।”
অন্য কথায় বলতে গেলে, এখানে এরকম দৃশ্য তৈরির মাধ্যমে যেন এমন এক বার্তা দেয়া হচ্ছে, ভ্লাদিমির পুতিনের পেছনে পুরো রাশিয়া ঐক্যবদ্ধ। রাশিয়ার জনগণকে যেন তারা বলছেন, চার্চ, সেনাবাহিনী এবং প্রেসিডেন্ট কেবল পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্তই নন, তারা আসলে একটি একক সত্ত্বার অংশ।
প্রেসিডেন্ট পুতিন তার সংক্ষিপ্ত ভাষণে আবার দাবি করলেন, ওয়াগনার বিদ্রোহের পর রাশিয়া আবার ঐক্যবদ্ধ। তবে তাঁর ভাষণের বেশিরভাগ অংশ জুড়ে ছিল আসলে “একটি গৃহযুদ্ধ থামানোর” জন্য সামরিক বাহিনীর প্রশংসা।
বিদ্রোহের সময় বিমানবাহিনীর যে পাইলটরা নিহত হয়েছিলেন, তাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। প্রেসিডেন্ট পুতিন তার শ্রদ্ধা জানালেন। কিন্তু এসব মৃত্যুর জন্য ওয়াগনার যোদ্ধাদের কেন বিচার করা হবে না, সেই প্রশ্নের কোন উত্তর তিনি দিলেন না।
পুতিনের ভাষণ শেষ হলো: এরপর জাতীয় সঙ্গীত বাজলো, তোপধ্বনি করা হলো।
সার্বিক বার্তাটা যেন এরকম: সবকিছু যে প্রেসিডেন্টের নিয়ন্ত্রণে কেবল তা নয়, রুশ সেনাবাহিনী এবং রুশ জনগণের সহায়তায় তিনি মাত্রই এক বিরাট বিজয় অর্জন করেছেন।
বুধবার: জনতার ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে
![বিদ্রোহের পর কয়েকটি প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে গিয়ে যে বার্তা দিতে চাইছেন পুতিন 40 Untitled 4 2 বিদ্রোহের পর কয়েকটি প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে গিয়ে যে বার্তা দিতে চাইছেন পুতিন](http://www.samoyiki.com/wp-content/uploads/2023/07/Untitled-4-2.jpg)
এ সপ্তাহে এটিই সম্ভবত প্রেসিডেন্ট পুতিনের সবচেয়ে অবাক করা ভিডিও- বা সম্ভবত পুরো বছরের। কারণ এই ভিডিওতে যে পুতিনকে আমরা দেখি, তাকে সচরাচর সেরকম দেখা যায়না। তিনি জনতার ভিড়ে গিয়ে তাদের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে যাচ্ছেন, তাদের সঙ্গে একান্ত ব্যক্তিগত ভাব বিনিময় করছেন।
প্রেসিডেন্ট পুতিন দাগেস্তানে গিয়েছিলেন পর্যটন বিষয়ক এক সভায় সভাপতিত্ব করতে। এটাই ছিল সরকারি অনুষ্ঠান।
কিন্তু সেদিন রুশ টেলিভিশনে মূল খবর কিন্তু এটা ছিল না, খবরে প্রধান হয়ে উঠেছিল এই অনুষ্ঠানের শেষে পুতিনকে ঘিরে যে উন্মাদনা দেখা গেছে সেটি।
টেলিভিশনে দেখানো হলো, ডারবেন্ট শহরে ক্রেমলিনের এই নেতাকে উৎসুক জনতার ভিড়। তার সান্নিধ্যে আসার জন্য ভক্তরা পাগলপ্রায়।
ভ্লাদিমির পুতিন যাদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করেন, তাদের সঙ্গে তিনি বেশ দূরত্ব বজায় রাখেন, এটাই আমরা দেখতে অভ্যস্ত। ক্রেমলিনের সেই দীর্ঘ টেবিলগুলোর কথা নিশ্চয়ই মনে আছে, যার একমাথায় নিরাপদে বসতেন প্রেসিডেন্ট পুতিন, আর তার অতিথিরা অন্য মাথায়?
কিন্তু সেই দূরত্ব এখানে নেই। দাগেস্তানে তিনি শিশুদের চুমু দিচ্ছেন, নারীদের আলিঙ্গন করছেন, করমর্দন করছেন, ছবি তোলার জন্য পোজ দিচ্ছেন।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বেশ ফলাও করে এসব দৃশ্য দেখানো হলো।
একটি টেলিভিশন চ্যানেলের জনপ্রিয় এক টক শোর উপস্থাপক বললেন, “তারা খুশিতে চিৎকার করছিল, হাততালি দিচ্ছিল। রকস্টারদেরও এভাবে অভ্যর্থনা জানানো হয় না। প্রিগোশিনের বিদ্রোহের পর প্রেসিডেন্ট নাকি দুর্বল হয়ে গেছেন, এই বলে পশ্চিমারা ব্যঙ্গ করছে। কিন্তু এই দৃশ্য প্রমাণ করে ঘটনা আসলো পুরো উল্টো।”
পুতিনের আচরণও যেন তার চরিত্রে সঙ্গে একেবারেই ব্যতিক্রম। তবে অন্য দিক থেকে ভাবলে, রাশিয়ায় তো এখন আর কোন কিছুই স্বাভাবিক নয়।
রুশ প্রেসিডেন্ট মাত্রই একটি সশস্ত্র বিদ্রোহ থেকে বেঁচে গেছেন। হয়তো তিনি অনুভব করছেন যে, দেশের কাছে, রাজনৈতিক এলিটদের কাছে, এবং তার নিজের কাছে এটা প্রমাণ করা দরকার যে, তার এখনো বহু সমর্থক আছে। কাজেই জনগণ যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে তার প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ দেখাচ্ছে- এটি সেই উদ্দেশ্য হাসিল করবে।
আমি যখন এসব দৃশ্য দেখছিলাম, তখন হঠাৎ আমার মনে হলো, গত সপ্তাহান্তে বিদ্রোহ নিরসনে সমঝোতা হওয়ার পর কী ঘটেছিল। মি. প্রিগোশিনের নেতৃত্বে ওয়াগনার সেনারা যখন রোস্তভ শহর ছাড়ছিল, তখন রাস্তায় তাদের দেখে এভাবেই উল্লাস করে সমর্থন জানিয়েছিল জনতা।
ভ্লাদিমির পুতিন কি সেসব দৃশ্য দেখেছেন? তার কি মনে হয়ে, এরকম একটি ‘বীরোচিত’ মূহুর্ত তারও দরকার?
আমরা হয়তো কখনোই এ প্রশ্নের উত্তর জানতে পারবো না।
বৃহস্পতিবার: দাঁড়িয়ে উষ্ণ অভিনন্দন
![বিদ্রোহের পর কয়েকটি প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে গিয়ে যে বার্তা দিতে চাইছেন পুতিন 41 Untitled 5 2 বিদ্রোহের পর কয়েকটি প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে গিয়ে যে বার্তা দিতে চাইছেন পুতিন](http://www.samoyiki.com/wp-content/uploads/2023/07/Untitled-5-2.jpg)
মস্কোতে রুশ ব্রান্ডগুলোর এক ব্যবসায়িক সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। এটি ঠিক সেধরণের কোন অনুষ্ঠান নয় যেখানে তাকে ঘিরে মাতামাতির আরেকটি ‘রকস্টার মুহূর্ত’ আমরা দেখবো।
কিন্তু তিনিই যে রাশিয়ার সর্বময় কর্তৃত্বে, তিনি যে সক্রিয়, এবং তার পেছনে যে জনগণের সমর্থন আছে, তার সব সুযোগই যেন কাজে লাগানো হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট পুতিন হলঘরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে করতালি দিয়ে তাকে স্বাগত জানানো হলো। তিনি তার আসনে বসলেন। উদ্যোক্তাদের একজন তার উদ্বোধনী ভাষণ দিলেন।
“ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ, ২৪ জানুয়ারির বিদ্রোহের সময় আপনি এবং পুরো দেশের সঙ্গে আমরাও উদ্বিগ্ন সময় কাটিয়েছি। আমরা সবাই আপনার সঙ্গে আছি এবং আমরা আপনাকে সমর্থন করি,” বললেন এই নারী।
যেন এই কথা প্রমাণ করার জন্যই সাথে সাথে দর্শকদের সবাই একসঙ্গে উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিতে শুরু করলেন।
এই একই অনুষ্ঠানের আরেকটি ভিডিও আমরা দেখতে পাই, যেটি একটু অদ্ভুত। প্রেসিডেন্ট পুতিন একটি সাদা বোর্ড ডুডল আঁকছেন।
তিনি যা এঁকেছিলেন তা আসলে কার্টুন চরিত্রের মতো একটি লাল মুখ, যার মাথায় তিন গোছা চুল। বার বার রাজনৈতিকভাবে বেঁচে যাওয়ার কৌশল যিনি রপ্ত করেছেন, সেরকম এক নেতার কাছ থেকে এক কৌতূহলোদ্দীপক ছবিই বটে।
সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো অনুগত সেনাদল, গান স্যালিউট, উল্লসিত সমর্থকদের চিৎকার এবং দাঁড়িয়ে উষ্ণ অভিনন্দন- এধরণের ছবির মাধ্যমে ক্রেমলিনের এই নেতা বার্তা দিতে চাইছেন- তিনিই এখনো সবকিছুর নিয়ন্ত্রণে।
তিনি এমনকি ডুডল আঁকার সময়ও পাচ্ছেন। তিনি মনে হয় বেশ আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছেন।
বিদ্রোহের পর এ সপ্তাহে আমরা নতুন উদ্যম এবং প্রাণশক্তিতে ভরপুর এক পুতিনকে দেখেছি। তাকে এখানে, ওখানে, সবখানে দেখা গেছে। মনে হচ্ছিল যেন তিনি পুন-নির্বাচিত হওয়ার জন্য তার প্রচারাভিযান শুরু করে দিয়েছেন (তার প্রেসিডেন্ট পদের মেয়াদ শেষ হবে সামনের বছর)।
কিন্তু এরকম ইতিবাচক ছবি দিয়ে তো আর এই বাস্তবতা বদলানো যাবে না যে, এই বিদ্রোহ ক্রেমলিনকে চমকে দিয়েছিল। এটা ছিল একটা হুমকি। বিদ্রোহের অবসানের আগে বিদ্রোহী সৈন্যরা তো মস্কোর দিকে অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছিল। প্রেসিডেন্ট পুতিনের কর্তৃত্বের জন্য এটা ছিল এক অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জ।
এই বিদ্রোহের দীর্ঘমেয়াদী পরিণতি কী হবে সেটা এখনো অস্পষ্ট।
সূত্র: বিবিসি বাংলা