শিকল বন্দি মশিউর ৪ বছর ধরে

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
2 মিনিটে পড়ুন

চার বছরের বেশি সময় ধরে পায়ে লোহার শিকল নিয়ে বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন মশিউর রহমান (২২)। তিনি নীলফামারী সদরের রামনগর ইউনিয়নের বাহালীপাড়া মাস্টারপাড়া গ্রামের সালেহ উদ্দিন ওরফে টন্না মামুদের ছেলে।

তিন ভাইবোনের মধ্যে মশিউর দ্বিতীয়। বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। মশিউরের ছেলেবেলা ভালো কাটলেও চার বছর আগে হঠাৎ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। সামনে যা পেতেন তাই ভাঙচুর করতেন এবং পরিবারের লোকদের মারধর করতেন। মাঝে মাঝে বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতেন।

স্থানীয়রা জানান, মশিউরের বাবার ভিটাবাড়ি ছাড়া কিছুই নেই। অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা পান তাই দিয়ে কোনো রকমে ছেলেমেয়ের মুখে খাবার তুলে দেন। বছর চারেক আগে মানসিক ভারসাম্য হারানোর পর স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু সুস্থ হননি। এরপর দিন দিন অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকেন। হুট হাট বাড়ি থেকে চলে যেতেন। এ কারণে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে।

বাবা সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘পরের জমিতে কৃষিকাজ করে যা পাই, তা দিয়ে কোনো রকমে খেয়ে না খেয়ে সংসার চালাই। ছেলের চিকিৎসার টাকা কই পাবো? সে বন্দি জীবন কাটালেও সরকারি কিংবা বেসরকারি ভাতা জোটেনি। চেয়ারম্যান-মেম্বারদের পেছনে ঘুরতে ঘুরতে চিকিৎসা ও সাহায্যের আশা ছেড়ে দিয়েছি।’

মা মর্জিনা বেগম বলেন, ‘অভাবের কারণে লেখাপড়া করতে না পেরে মশিউর বাবার সঙ্গে মানুষের বাড়িতে কাজ করতো। হঠাৎ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। স্থানীয় হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, উন্নত চিকিৎসার জন্য মশিউরকে বাইরে নিতে হবে। টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা হচ্ছে না।’

মশিউরের বড় চাচা আব্দুল হক জানান, চার বছরের বেশি সময় ধরে শিকলবন্দি মশিউর। টাকার অভাবে দরিদ্র পরিবারের পক্ষে তাকে উন্নত চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি।

তিনি আরও জানান, ভালো চিকিৎসা পেলে মশিউর হয়তো সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন। সরকারি-বেসকরারি কোনও প্রতিষ্ঠান তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিলে হয়তো সুস্থ হতেন। তাকে পুনর্বাসনের আওতায় আনতে দাবি জানান আব্দুল হক।

নীলফামারী সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক এমদাদুল হক প্রামানিক বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। তবে তার পরিবারের পক্ষে আবেদন করা হলে তদন্তপূর্বক চিকিৎসা ও ভাতা প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!