দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের দণ্ড নিয়ে বিদেশ সফর শেষে দেশে ফিরে এসেছেন হাজী সেলিম।
বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেন তিন।
হাজি সেলিমের ব্যক্তিগত সহকারী মহিউদ্দিন মাহমুদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মহিউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘দেশে ফিরেই নির্বাচনী এলাকা লালবাগের শাহানি বেগম নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার জানাজায় অংশ নেন।
এর আগে গত ২ মে সোমবার বিদেশে যান পুরান ঢাকার সংসদ সদস্য হাজী সেলিম। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় ১০ বছর দণ্ডিত আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্যের ঈদের পর বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের কথা ছিল। তবে গত শনিবার সন্ধ্যায় কঠোর গোপনীয়তার সঙ্গে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে তিনি থাইল্যান্ডের ব্যাংকক যান।
জানা গেছে, হাজী সেলিম শনিবার বিকালে তিনটি গাড়ির একটি বহর নিয়ে আজিমপুর কবরস্থানে যান। সেখানে কবর জিয়ারত করে যান শাহজালাল বিমানবন্দরে।
হাজী সেলিমের ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছিল, ওই গাড়ির বহরে তার সঙ্গে পরিবারের কেউ ছিলেন না। হাজি সেলিম নিয়মিত যে গাড়ি ব্যবহার করেন ওইদিন সেটিতে চড়েননি। এমনকি চালকেরাও জানতেন না তাদের গন্তব্য।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে এক যুগ আগে বিচারিক আদালতের রায়ে সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের ১৩ বছরের কারাদণ্ড হয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাজি সেলিম হাইকোর্টে আপিল করেন।
এই আপিলের শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ৯ মার্চ বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ বিচারিক আদালতের দেয়া ১৩ বছর সাজা কমিয়ে ১০ বছর কারাদণ্ড বহাল রাখেন।
এরপর গত ১০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে হাজি সেলিমকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এ আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
গত ২৫ এপ্রিল হাজী সেলিমের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, হজি সেলিম ঈদুল ফিতরের পর বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন। কিন্তু জামিনে থাকা পুরান ঢাকার এই সাংসদ আত্মসমর্পণ না করেই গোপনে দেশত্যাগ করলেন বলে খবর আসে।
প্রসঙ্গত, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন এবং ৫৯ কোটি ৩৭ লাখ ২৬ হাজার ১৩২ টাকার তথ্য গোপনের অভিযোগে মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। লালবাগ থানায় দায়ের করা ওই মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল পৃথক দুটি ধারায় হাজী সেলিমকে ১০ বছর ও তিন বছর কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।