বিচিত্র জীবনাচরণের একজন নুর-ই আলম

মাহাবুব খন্দকার
মাহাবুব খন্দকার - নাটোর প্রতিনিধি
3 মিনিটে পড়ুন
নূর-ই-আলম। ছবি: মাহাবুব খন্দকার।

নাম তার নূর-ই-আলম। কেউ বলে আলম পাগল, কেউ বলে নিখিল, কেউবা বলে আলম সাধু। জন্ম হয়েছিল কত সালে? কোথায়? কেউ জানে না, এমনকি তিনি নিজেও জানেন না! কে ছিলেন তার পিতা-মাতা, তা জানা না গেলেও ৬০ বছর যাবৎ নাটোর জেলার বিভিন্নস্থানে তার অস্তিত্বকে জানান দিচ্ছেন।

আনুমানিক বয়স তার প্রায় শতবর্ষী। নাটোর সদর উপজেলার ৩ নং দিঘাপতিয়া ইউনিয়নের বাকশোরঘাট ও দিঘাপতিয়া বাজারে প্রায় দেড় যুগ অবস্থান করার প্রমাণ মিলেছে। বাকশোর ঘাট মহাশ্মশান থেকে মরা মানুষের মাথার খুলি সংগ্রহ করে দীর্ঘকাল তাকে খাদ্য খেতে দেখা গেছে।

পথে-প্রান্তরে চলতে-ফিরতে চেনা অচেনা মানুষ তাকে স্বইচ্ছায় খাদ্য সহায়তা ও অর্থ দিয়ে থাকেন। তবে তিনি কোন ফকির বা কবিরাজ নন।মানুষের পাঁচড়া, চুলকানির সমস্ত স্থানে তিনি তার জিহ্বা দিয়ে চেটে দিলে, সেই ক্ষতস্থান শুকিয়ে যায়।

এই চিকিৎসার বিশেষত্ব জানতে গেলে তথ্য পাওয়া যায়, তিনি সুদীর্ঘ একযুগ শুধুমাত্র দূর্বা ঘাস খেয়ে জীবন যাপন করেছেন। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ বলছেন- তার দেহে একটি অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি হয়ে গেছে।

গালের চামড়া গুলো কিছুটা কুচকে গেলেও সুঠাম যুবকের মতন তিনি একাই চলাফেরা করেন। নির্ভীক ছুটে চলা এই পথিক নূর-ই আলম’এর প্রয়োজন হয়না কর্মের।সন্ধান করতে হয়না খাদ্যের। উত্তরবঙ্গ সহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে তার ভ্রমণ থাকে অব্যাহত।

শীত-বসন্ত কিংবা বৈশাখ-জৈষ্ঠ মাসের প্রচণ্ড তাপদাহে, তার অঙ্গে জড়ানো থাকে কমপক্ষে চার থেকে পাঁচটি বস্ত্র। তার মধ্যে গেঞ্জি, যুব্বা, কোট এবং সবার ওপরে মোটা তুলার কাপড়ের লংগ্রাউন।

গলায় পেঁচানো থাকে লাল সালু ও পরনে লাল লুঙ্গি। কখনো কখনো বিভিন্ন রঙ বে-রঙের কাপড়ের তৈরি লুঙ্গি ও যুব্বা পড়নে দেখা যায়। তবে তিনি কোন দিন গোসল করেছেন কিনা এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না।

মাথায় রয়েছে সুদৃশ্য বিশাল জট। যে কেউ তাকে দেখলে ভক্তি ভাব জাগ্রত হয়। অস্পষ্টভাষী এই মানুষটির সঙ্গে কথা বলে জানা যায় ‘১৯৯০ সালে তার মাথার জট কেটে দিয়েছিল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।’

তাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশভারত বর্ষের বেশ কয়েকটি গ্রাম অঞ্চলে প্রতি বছরে মেলা অনুষ্ঠিত হয়।আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। তবে মহামারি করোনাকালীন এই সময়ে সেই সমস্ত অনুষ্ঠান রয়েছে বন্ধ।

আমাদের জাগতিক জগতের এই মনুষ্যসমাজে এমন মানুষের সংখ্যা নেহায়েত কম বললেই চলে। আমাদের সমাজ ব্যবস্থার বাইরে হয়তো তার অন্য কোন পৃথিবী আছে! অথচ তিনি আমাদের সমাজেই ছায়ার মতন বসবাস করেন।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
লেখক: মাহাবুব খন্দকার নাটোর প্রতিনিধি
সাংবাদিক এবং লেখক
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!