এক এক করে মুখ থুবড়ে পড়ছে প্রকাশনা

সিদ্ধার্থ সিংহ
সিদ্ধার্থ সিংহ
2 মিনিটে পড়ুন
কথাশিল্পী সিদ্ধার্থ সিংহ

একসময় পয়লা বৈশাখ আসার অনেক আগেই প্রকাশকেরা নেমে পড়তেন কর্মযজ্ঞে। যাতে তাঁরা তাঁদের প্রকাশিতব্য বইগুলি ঠিক পয়লা বৈশাখের দিনই পাঠকদের হাতে তুলে দিতে পারেন।

তার পর বই প্রকাশের সেই উৎসবটা ঘুরে গেল বইমেলার দিকে। পয়লা বৈশাখে দু-একটা বই বের হলেও বেশির ভাগ বইই প্রকাশ করতেন কলকাতা বইমেলাকে লক্ষ্য করে।

তারও পরে আর কলকাতা বইমেলা নয়, অনেক ছোটখাটো প্রকাশকও বই প্রকাশের আদর্শ সময় হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন জেলার বইমেলাকে।

দীর্ঘদিন ধরেই বই বিক্রির প্রবণতা এমনিতেই কমছিল। সেই প্রবণতা আরও বেশি করে দেখা দিল এই অতিমারির সময়ে লকডাউন শুরু হতেই।

- বিজ্ঞাপন -

লোকে বাজার করে কিছু নিয়ে এলেও করোনার ভয়ে সেগুলোকে ধুয়েটুয়ে স্যানিটাইজ করে ঘরে তুলতেন। বাইরের জিনিস সচরাচর ঘরে ঢোকাতেন না। অনেকেই বন্ধ করে দিয়েছিলেন দৈনিক খবরের কাগজ নেওয়াও।

পাশাপাশি বইয়ের দোকান বন্ধ থাকার ফলে দোকানদার যেমন বই সাপ্লাই দিতে পারছিলেন না, ঠিক তেমনি পাঠকেরাও হাতের কাছে বই না পাওয়ায় অন্য বিনোদনের দিকে ঝুঁকছিলেন।

সেই ঝোঁকাটাই কাল হয়ে দাঁড়াল। এখন দোকানগুলি সাময়িক সময়ের জন্য খুললেও বই আর কেউ নিতে আসছেন না। দোকানদারেরা হাপিত্যেশ করে বসে আছেন।

বহু লোক বইয়ের দোকান তুলে দিয়ে পান, বিড়ি, সিগারেট, এমনকি শাড়ির দোকান পর্যন্ত খুলে বসেছেন। আর যেহেতু বইয়ের দোকানগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, বই বিক্রি না হওয়ার ফলে প্রকাশকের ঘরে এবং বাইন্ডিংখানায় স্তূপাকৃতি হয়ে পড়ে থাকছে ছাপানো ফর্মা।

আর তার ফলে নতুন করে আর কোনও বই করার দিকে ঝুঁকছেন না কোনও প্রকাশক। মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রকাশন শিল্প। যাঁরা অল্প বয়সী প্রকাশক, তাঁরা নিজেদের গড়ে তোলা কিংবা পৈতৃক সূত্রে পাওয়া প্রকাশনা ব্যবসায় তুলে দিয়ে নতুন ব্যবসার দিকে হাত বাড়াচ্ছেন। আর যাঁরা বয়স্ক প্রকাশক, তাঁরা দোকানের ঝাঁপ ফেলে দিচ্ছেন। কেউ কেউ বিক্রি করে দিচ্ছেন তাঁদের দোকানঘরও।

- বিজ্ঞাপন -

এই অবস্থা আরও কিছু দিন চললে শুধু যে এক এক করে সব প্রকাশনা সংস্থা মুখ থুবড়ে পড়বে, অনেকেই তল্পিতল্পা গুটিয়ে অন্যত্র পাড়ি দেবেন, তাই-ই নয়, প্রকাশনা শিল্প বলে যে একদিন কিছু একটা ছিল লোকে সেটাই ভুলে যাবে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
২০২০ সালে 'সাহিত্য সম্রাট' উপাধিতে সম্মানিত এবং ২০১২ সালে 'বঙ্গ শিরোমণি' সম্মানে ভূষিত সিদ্ধার্থ সিংহের জন্ম কলকাতায়। আনন্দবাজার পত্রিকার পশ্চিমবঙ্গ শিশু সাহিত্য সংসদ পুরস্কার, স্বর্ণকলম পুরস্কার, সময়ের শব্দ আন্তরিক কলম, শান্তিরত্ন পুরস্কার, কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত পুরস্কার, কাঞ্চন সাহিত্য পুরস্কার, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা লোক সাহিত্য পুরস্কার, প্রসাদ পুরস্কার, সামসুল হক পুরস্কার, সুচিত্রা ভট্টাচার্য স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার, অণু সাহিত্য পুরস্কার, কাস্তেকবি দিনেশ দাস স্মৃতি পুরস্কার, শিলালিপি সাহিত্য পুরস্কার, চেখ সাহিত্য পুরস্কার, মায়া সেন স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার ছাড়াও ছোট-বড় অজস্র পুরস্কার ও সম্মাননা। পেয়েছেন ১৪০৬ সালের 'শ্রেষ্ঠ কবি' এবং ১৪১৮ সালের 'শ্রেষ্ঠ গল্পকার'-এর শিরোপা সহ অসংখ্য পুরস্কার। এছাড়াও আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত তাঁর 'পঞ্চাশটি গল্প' গ্রন্থটির জন্য তাঁর নাম সম্প্রতি 'সৃজনী ভারত সাহিত্য পুরস্কার' প্রাপক হিসেবে ঘোষিত হয়েছে।
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

একটি অ্যাকাউন্ট নেই? নিবন্ধন করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!