২৯ মার্চ ২০২১ সোমবার বিকেল ৫টা ৪০মিনিটে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রয়াত হয়েছেন ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা মহম্মদ ইউসুফ কালু।
ভাষা সংগ্রামী মুহম্মদ ইউসুফ কালু ছবি: কিশোর কর্মকার
ভাষা সংগ্রামী এই যোদ্ধা বেশ কিছুদিন ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে শের-ই- বাংলা চিকিৎসা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎধীন ছিলেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। এসময় তিনি স্ত্রী, একমাত্র ছেলে,পুত্রবধূ, নাতি-নাতনী, আত্মীয়স্বজন ও বহুগুনগ্রাহী রেখে গেছেন। এই গুনীজনের মৃত্যুতে বরিশালে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ৩০মার্চ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বগুড়ারোড শ্রীচৈতন্য মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে তাকে গার্ড অব অর্নার, নামাজে জানাযা ও সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। এরপর তাকে দাফনের জন্য নেয়া হবে তার নিজ বাড়ি ঝালকাঠী জেলার রাজাপুর উপজেলার কানুদাসকাঠী মিয়াবাড়িতে বলে পরিবার সূত্র জানা গেছে।
শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মেডিকেল হাসপাতালের ৫ম তলার ১৮নং কেবিনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ মার্চ ২০২১ দিবাগত রাত ১০টা ৩মিনিটে মুহম্মদ ইউসুফ কালু সর্বশেষ সাক্ষাতকার দেন। নরওয়ে থেকে প্রকাশিত ‘সাময়িকী’ পত্রিকার প্রতিবেদক বাপ্পী মজুমদার শেরে বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে গিয়ে সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন।
বাপ্পী মজুমদার: আপনার জন্মস্থান কোথায়?
ভাষা সংগ্রামী মহম্মদ ইউসুফ কালু: ১৯৩১ সালের ১৭ জানুয়ারী বর্তমান ঝালকাঠী জেলার রাজাপুরের কানুদাসকাঠী মিয়াবাড়িতে আমার জন্ম। আমার বাবাে নাম ওবায়দুল করিম (রাজা মিয়া) ও মায়ের নাম ফাতেমা খাতুন। ৩ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে আমি সবার ছোট। বাবা রাজা মিয়া প্রথমে ১৯২০ সালের দিকে কোলকাতা পোর্ট কমিশনে চাকুরী করতেন। পরবর্তীতে চাকুরী ছেড়ে দেন এবং রাজা রায় বিহারীর জমিদারীর নায়েব নিযুক্ত হন। আমুয়া, ভান্ডারিয়া, কানুদাসকাঠী অঞ্চলের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
বাপ্পী মজুমদার:কিভাবে ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন? ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে আপনার অভিজ্ঞতা বিষয়ে আপনার কাছে জানতে চাইছি।
ভাষা সংগ্রামী মহম্মদ ইউসুফ কালু:পড়াশুনার প্রথম পাঠ গ্রামের পাঠশালায়। এরপর এসে ভর্তি হই বরিশাল ব্রজমোহন বিদ্যালয়ে (বিএম স্কুল)। ১৯৪৮ সালে আমি অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র। সেসময় বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবীর আন্দোলন তুঙ্গে। বরিশালে এই আন্দোলন ছিল ব্রজমোহন কলেজ (বি এম কলেজ) কেন্দ্রিক। একদিন প্রগ্রেসিভ ছাত্রফ্রন্ট এর নেতা এমায়দুল এর নেতৃত্বে বিএম কলেজ থেকে একটি মিছিল নিয়ে আসে আমাদের স্কুলের সামনে। অনেক বন্ধুদের সাথে আমিও সেই মিছিলে অংশগ্রহন করি। মিছিল নিয়ে সদর রোডের দিকে যাচ্ছি , বরিশাল কলেজ আসতেই বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ বাঁধা দেয়। এসময় পুলিশের সাথে ছাত্রদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশের বেপরোয়া লাঠির আঘাতে প্রথম দিনেই আমি সহ অসংখ্য ছাত্র আহত হই। কয়েকজন নেতাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তাদের ছেড়ে দেয় । এই মিছিলে সদর গার্লস স্কুলের মেয়েরাও অংশগ্রহন করেছিল সেদিন। মেয়েদের মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন রানী ভট্টাচার্য, গোলাম ছালেকের বড় বোন, একজন ম্যাজিষ্ট্রেটের দুই মেয়ে হাসি ও খুশি, আলেকান্দার গোলেনুর, মিসেস হামিদউদ্দিন ও মিসেস মহিউদ্দিন সিকদার। এরপর থেকেই বিভিন্ন সময়ে মিছিল মিটিংয়ে অংশগ্রহন করতে থাকি।
ভাষা আন্দোলন আন্দোলনের স্মৃতিচারন করতে গিয়ে এখনো উদ্বেলিত ও আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন শতবর্ষী এই যোদ্ধা।
ভাষা সংগ্রামী মুহম্মদ ইউসুফ কালু ছবি: কিশোর কর্মকার
পাকিস্থানের প্রতি ঘৃনা প্রকাশ করে ভাষা সৈনিক কালু একটি ছোট্ট উদাহরনে বলেন, সে সময়ে বরিশাল শহরে কয়েকটি অবাঙালী রেস্টুরেন্ট ছিল। রেস্টুরেন্টগুলো পরিচালনা করতো বিহারীরা। একদিন দুপুরে সদর রোডের কাথলিক চার্চের বিপরীত দিকে অবস্থিত একটি অবাঙালী রেস্টুরেন্টে জল খাওয়ার জন্য যাই। বাংলায় কথা বলেছি, একারনে হাত থেকে জলের গ্লাস কেড়ে নিয়ে যায় ওরা। তৎক্ষণাৎ রাগে ক্ষুব্ধ হয়ে ঐ স্থান ত্যাগ করি।মেট্রিকুলেশন পাস করে ১৯৫১ সালে আইএ ভর্তি হই বিএম কলেজে কমার্স বিভাগে। তখন থেকে ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা হই। তৎকালীন ছাত্রলীগের সভাপতি ও বিএম কলেজ ছাত্র সংসদের ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ গোলাম কিবরিয়াকে আহ্বায়ক করে ২৫ সদস্যের ‘ভাষা সংগ্রাম পরিষদ’। আমাকেও কমিটির সদস্য করা হয়। তখন আমি সহ আরও অনেকে হাতে পোস্টার লিখতাম। রাতে লুকিয়ে লুকিয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে পোস্টার লাগাতাম। সেসময় পোস্টার লাগাতে গিয়ে কয়েকজন ছাত্র পুলিশের হাতে আটক হই।১৯৫০ সালে বশির আহমেদ নামে এক বিহারী এসপি এবং এদেশীয় কিছু পাকিস্তানী দোসরদের কারনে এখানকার অনেক হিন্দু পরিবার দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়। যার মারাত্মক প্রভাব পড়ে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের উপর। গান-বাজনা, থিয়েটার, নাটক বন্ধ হয়ে যায়। ঐ সময় শহীদ আলতাফ মাহমুদ বরিশালে পড়াশুনা করতেন।দিন যতই গড়ায় ভাষা আন্দোলনে দেশ উত্তাল হয়ে ওঠে। এদিকে সার্কিট হাউস এলাকায় মুসলিম ইনষ্টিটিউট নামে একটি লাইব্রেরীতে সভা ডাকা হয়। সেই সভায় সভাপতিত্ব করেন তৎকালীন আওয়ামী মুসলিম লীগ সভাপতি আব্দুল মালেক খান। সভা থেকে ঘোষনা করা হয় ৮১ সদস্য বিশিষ্ট বৃহত্তর বরিশাল ‘ভাষা সংগ্রাম পরিষদ’। পরিষদের সভাপতি আব্দুল মালেক খান ও যুবলীগের সম্পাদক আবুল হাসেমকে নেতা নির্ধারণ করা হয়। আর বিএম কলেজ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করে এই কমিটির সাথে সংযুক্ত করে নেয়া হয়। এই কমিটিতে আমিও সদস্যপদ লাভ করি। তখন রাজনৈতিক ও আড্ডার কেন্দ্রবিন্দু ছিল অশ্বিনী কুমার হল সংলগ্ন সদু দা’র রুচিরা হোটেল ও হোটেল গুলবাগ। এছাড়াও আর্য্যলক্ষী ব্যাংকের পাশে কচু ক্ষেতের মধ্যে গোপনে মিটিং করতাম।৫২’র ভাষা আন্দোলনের ২১ ফেব্রুয়ারী দিনটি ছিল খুবই উত্তাল। সারা দেশব্যাপী ছিল ধর্মঘট ও বিক্ষোভ। এটি নির্ধারণ ছিল ঢাকা কেন্দ্রীয়ভাবে। আমরাও বরিশালে এই কর্মসূচী পালন করি। সদর রোড, চকবাজার, কালিবাড়ি রোড, বগুড়া রোড, আলেকান্দা, বিএম কলেজ এলাকা সহ শহরের বিভিন্ন স্থানে মিছিল করেছি। রাতে গুঞ্জন শুনি ঢাকায় গন্ডগোল হয়েছে। তখনতো এত যোগাযোগ মাধ্যম ছিলনা। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে জেনে রাতে আবার বরিশাল শহরে মিছিল বের করি আমরা।পরদিন অথাৎ ২২ ফেব্রুয়ারী সকালে ঢাকা থেকে মেইল যোগে বরিশাল আসেন বাউফলের সৈয়দ আশরাফ ও ভোলার শামসুল হুদা। তাদের কাছে ছিল ইমারজেন্সি টেলিগ্রাফ পত্রিকা। খুব গোপনে ছাপা হয়েছিল পত্রিকাটি। বড় ভাইদের মুখে শুনে এবং পত্রিকা দেখে ঢাকায় গন্ডগোলের খবর নিশ্চিত হই । ঐদিন আবার শহরের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত হয় বিক্ষোভ মিছিল, শোকসভা ও গায়েবানা জানাযা। ঐদিন রাতেই অশ্বিনী কুমার হলের সামনে শহীদ মিনার নির্মান শুরু হয়। শহীদ মিনার নির্মানের কয়েকদিন পর একদিন রাতে পুলিশ শহীদ মিনারটি ভেঙ্গে ফেলে।২৩ ফেব্রুয়ারী শহরে বের করা হয় এক বিশাল মৌন মিছিল। যে মিছিলে ছিল স্কুল-কলেজের ছাত্রী সহ চার’শ এর অধিক নারী। ওই সময় এত বড় মৌন মিছিল করা ছিল কল্পনাতীত। এরপর পর্যায়ক্রমে আন্দোলন চলতে থাকে। বিভিন্ন সময় মিছিল মিটিং হতো। ২১ফেব্রুয়ারী নিয়ে গাফফার চৌধুরী রচিত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো ২১শে ফেব্রুয়ারী’ গানটি আলতাফ মাহমুদ সুর দিয়েছেন এবং মিছিলে আমাদের সঙ্গে গাইতেন।মেডিকেল বেডে শুয়ে কথা বলতে বলতে কখনো শ্বাস ঘন হয়ে আসছিল। তবুও বিন্দুমাত্র অনীহা প্রকাশ করেননি বরং স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে তিনি বলতে থাকেন-ভাষা সংগ্রাম চলতে থাকে, এরই মধ্যে আসে ১৯৫৪ সালের নির্বাচন। শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে গঠন হয় যুক্তফ্রন্ট। নির্বাচনের আগে বরিশালে প্রচারনায় আসে পাকিস্থান মুসলিম লীগ সভাপতি ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী খান আব্দুল কাইউম। তখন আমরা রাষ্ট্রভাষা বাংলা ও স্বৈরাচারী সরকার পতনের দাবীতে কালো পতাকা সহকারে আমরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করি। এই সময় পুলিশের সঙ্গে ঘটে আমাদের তুমুল সংঘর্ষ। সেই সংঘর্ষে শহরের কাউনিয়া নিবাসী মুসলিম লীগের মালেক নামে একজন সদস্য মারা যায়। এই ঘটনায় আমি সহ ৩৫ জন গ্রেফতার হই। ২২ দিন কারাবাস করে জামিনে বের হয়ে নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের হয়ে কাজ শুরু করি। বরিশাল সদর, ঝালকাঠী, রাজাপুর, মঠবাড়িয়া, গলাচিপা সহ বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনে প্রচার প্রচারনা চালিয়েছি। ১৯৫৪ সালের ১০ মার্চ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট বিপুল ভোটে জয়লাভ করে।এরপর প্রাদেশিক আইন পরিষদে ১৯৫৪ সালে রাষ্ট্রভাষা আইন পাস হয়। কিন্তু কোন কার্যকারিতা না থাকায় ক্রমবর্ধমান আন্দোলনের মুখে পাকিস্থান কেন্দ্রীয় সরকার সংবিধান পরিবর্তনের মাধ্যমে ১৯৫৬ সালে বাংলা ভাষাকে পাকিস্থানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি প্রদান করে। পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই বাঙালি বিদ্বেষী ছিল পাকিস্থানীরা। পূর্ব পাকিস্থানের প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্য ছিল প্রকট। পাকিস্তান সরকার অনবরত চেষ্টা চালিয়ে গেছে বাঙালি জাতিকে পঙ্গু করে দিতে।পূর্ব বাংলাকে শাসন-শোষন, বাংলা ভাষা ও বাংলা সংস্কৃতিকে ধ্বংস করা এবং সাম্প্রদায়িকতার মত জঘন্য বিশৃংখল পরিস্থিতি সৃষ্টির মধ্য দিয়ে হীন স্বার্থ চরিতার্থ করাই ছিল পাকিস্থানের মূল উদ্দেশ্য। এই কাজের জন্য প্রায় ৩৫ ভাগ শিক্ষিত-অশিক্ষিত লোভী বাঙালি মুসলমানরা পাকিস্থানকে সহযোগিতা করেছে। মূলতঃ ভাষা সংগ্রামের মধ্য দিয়েই বীজ নিহীত হয় স্বাধীনতা যুদ্ধের।১৯৫৮ সালে প্রেসিডেন্ট হিসাবে আইয়ুব খান ক্ষমতা গ্রহনের পরই শুরু হয় দুর্ভিক্ষ। পাকিস্থানের চতুরতায় সৃষ্ট দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ মারা যায়। সেই সময়ও সাধ্যমত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। ৬৯’র গনঅভ্যুত্থান সহ প্রতিটি আন্দোলনেই দেশ ও মানুষের জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করেছি।১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে, দেশের হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। ৯নং সেক্টরের অধীনে কালীগঞ্জ, সাতক্ষীরার সীমান্ত এলাকায় পাকবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করেছি। ১৯৭১ সালের ১৪ই মে কোলকাতা লালবাজার চলে যাই। সেখানে বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির সহযোগিতায় হাসনাবাদ, হিংগলগড়, টাকি হেড কোয়াটার থেকে প্রশিক্ষন নেই। ওখানে দেখা হয় মিন্টু বসু, মিন্টু দাস, নুরুল আলম ফরিদ সহ বরিশালের কয়েকজনের সাথে। ঐসময় নুরুল আলম ফরিদ সম্পাদিত রনাঙ্গনের মুখপত্র ‘বিপ্লবী বাংলাদেশ’ পত্রিকার পরিচালকদের একজন ছিলাম। ৭১ সালে আমাদের বাড়ি লুট হয়। তখন দলিলপত্র,ব্যক্তিগত কাগজপত্র সবকিছুই খোয়া যায়। নষ্ট হয়ে যায় বহু স্মৃতি।বাপ্পী মজুমদার: শুনেছি, আপনি রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। ভাষা সংগ্রামী মহম্মদ ইউসুফ কালু: শিক্ষা জীবনের প্রথম ভাগে ছাত্র ইউনিয়ন করতাম। এরপরে ১৯৫২ সালে ছাত্রলীগে যোগ দেই এবং জড়িয়ে পড়ি আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে।বাপ্পী মজুমদার:একসময় আপনি পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে জানা যায়।ভাষা সংগ্রামী মহম্মদ ইউসুফ কালু: হ্যাঁ। ১৯৬২ সালে সাংবাদিকতা শুরু করি। প্রথমে আজাদ ও পরে দৈনিক পয়গামের বরিশাল সংবাদদাতা হিসাবে কাজ করেছি। ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত বরিশাল প্রেসক্লাবের (বর্তমানে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাব) সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি । এছাড়াও ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবল খেলায় পারদর্শী ছিলাম। ১৯৬২-১৯৭৩ পর্যন্ত বরিশাল ক্রীড়া সংস্থারও সদস্য ছিলাম।সাক্ষাৎকার গ্রহণ করছেন বাপ্পী মজুমদারছবি: কিশোর কর্মকার
বাপ্পী মজুমদার: স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর বছরে কি বলতে চাইবেন আপনি?
ভাষা সংগ্রামী মহম্মদ ইউসুফ কালু: দেশ স্বাধীন হলেও পাকিস্থানী চিন্তা চেতনার পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি কিছু লোক। এদের কারনেই দেশে আজ বিশৃঙ্গলা এবং তারাই দেশে উগ্র সাম্প্রদায়িকতার বিষবাস্প ছড়াচ্ছে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের কন্যা প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি ঐক্যবদ্ধ হলেই পতন ঘটবে অপশক্তির এবং উন্নত সুখী সুন্দর হিসাবে গড়ে উঠবে বাংলাদেশ।
বাপ্পী মজুমদার:দ্রুত আরোগ্য লাভ করুন এবং সুস্থ হয়ে ফিরে আসুন আমাদের মাঝে। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা।
একাধারে রাজনীতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক, খেলোয়ার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এই ভাষা সংগ্রামী বহু গুনে গুনান্বিত একজন মানুষ। স্বৈরাচার বিরোধী ও প্রতিটি প্রগতিশীল আন্দোলনে অংশগ্রহনসহ সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন।
সাময়িকী পরিবার পক্ষ থেকে এই মহান মানবের প্রতি শ্রদ্ধঞ্জলি এবং তার প্রয়াত আত্মার শান্তি কামনা করি। চির বিশ্রামে থাকুন। চির শান্তিতে থাকুন।
সাক্ষাতকার গ্রহন ও তথ্য সহযোগিতা কৃতজ্ঞতা: সাংস্কৃতিক কর্মী বাহাউদ্দিন গোলাপ, বাংলা নিউজের বরিশাল প্রতিনিধি মুশফিক সৌরভ, ফ্রিল্যান্সার ফটো সাংবাদিক কিশোর কর্মকার, অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মনির ও ভাষা সৈনিকের ছেলে সোহাগ।
নরওয়ে থেকে প্রকাশিত একমাত্র বাংলা পত্রিকা ‘সাময়িকী ডট কম’ পত্রিকার জন্য বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে সংবাদদাতা আবশ্যক। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন। আমাদের ইমেইল ঠিকানা [email protected]