ফ্রান্সে পুলিশের গুলিতে কিশোর নিহত, সহিংসতায় গ্রেপ্তার ১৫০

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন
পুলিশের গুলিতে এক কিশোরের নিহতের ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে ফ্রান্স। ছবি রয়টার্স

ফ্রান্সে পুলিশের গুলিতে কিশোর নিহত, সহিংসতায় গ্রেপ্তার ১৫০

ফ্রান্সে পুলিশের গুলিতে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় টানা দ্বিতীয় রাত ধরে চলা সহিংসতা, অস্থিরতায় অন্তত ১৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

নাহেল এম নামের ওই কিশোরকে সড়কের এক ট্রাফিক স্টপে থামতে বলার পরও সে রাজি না হয়ে গাড়ি চালিয়ে যেতে উদ্যত হলে এক পুলিশ সদস্য তাকে খুব কাছ থেকে গুলি করে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ফ্রান্স মঙ্গলবার রাতভর সহিংসতা দেখেছে।

ফ্রান্সে পুলিশের গুলিতে কিশোর নিহত, সহিংসতায় গ্রেপ্তার ১৫০
জ্বলছে আগুন। ছবি রয়টার্স

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা ভিডিওতে বুধবার রাতেও অনেক এলাকায় গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দিতে এবং দোকানপাটে লুটপাটের দৃশ্য দেখা গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি

সংঘর্ষে কয়েক ডজন পুলিশও আহত হয়েছেন।

নাহেল যে এলাকা থেকে এসেছে, সেই নঁ তেরে কর্তৃপক্ষকে আংশিক পুলিশ প্রত্যাহারে বাধ্যও হতে হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম। এদিন প্যারিসজুড়েই বিক্ষোভকারীদের থানা লক্ষ্য করে আতশবাজি ছুড়তে দেখা গেছে।

উত্তরাঞ্চলীয় শহর লিলে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। অনলাইনে আসা ভিডিও ফুটেজে মুস-অ-বাগাইল শহরতলীতে টাউন হলের ভেতর লোকজনকে কাগজপত্র ও চেয়ারে আগুন দিতে দেখা গেছে।

নিহত কিশোরকে স্মরণ করতে পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর রেনেতে প্রায় ৩০০ লোক জড়ো হয়, তাদের মধ্যে অনেককেই সড়কে আগুন জ্বালাতে দেখা গেছে। পুলিশ পরে ওই বিক্ষোভকারীদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

ফ্রান্সে পুলিশের গুলিতে কিশোর নিহত, সহিংসতায় গ্রেপ্তার ১৫০
আগুন নেভাতে কাজ করছেন একজন দমকলকর্মী । ছবি রয়টার্স

মঙ্গলবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ কিশোর নাহেলকে গুলি করার ঘটনা ‘ক্ষমার অযোগ্য’ বলে অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন।

কিন্তু তার এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পুলিশের ইউনিয়নগুলো। তাদের ভাষ্য, প্রেসিডেন্ট খুব দ্রুত ঘটনায় জড়িত পুলিশকে দায়ী করে ফেলছেন।

ঘটনার পর পুলিশের একটি গ্রুপ ‘তরুণ অপরাধীকে’ গুলি করায় কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানানো ও কিশোরের মৃত্যুর জন্য তাদের বাবা-মাকে অভিযুক্ত করে একটি টুইটও পোস্ট করেছিল। পরে সেটি মুছে ফেলা হলেও গ্রুপটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

নাহেলকে গুলি করা পুলিশ কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে ওঠা নরহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার ভাষ্য, জীবন বিপন্ন এমনটা মনে হওয়াতেই তিনি গুলি চালিয়েছিলেন।

ফ্রান্সে এ বছর গাড়ি না থামানোয় পুলিশের গুলিতে চালক নিহতের দ্বিতীয় ঘটনা এটি। গত বছর এ ধরণের ঘটনায় রেকর্ড ১৩ জন নিহত হয়েছে।

Untitled 4 40 ফ্রান্সে পুলিশের গুলিতে কিশোর নিহত, সহিংসতায় গ্রেপ্তার ১৫০
আগুনে পুড়ে যাওয়া একটি গাড়ি। রয়টার্সের একটি ভিডিও থেকে স্কিন শট নেয়া।

স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে পুলিশ দাবি করেছে, কিশোর ওই চালক তাদের আঘাত করার উদ্দেশেই গাড়ি নিয়ে তাদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল।

তবে কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের অনুসন্ধান এবং ভিডিও ফুটেজে ভিন্ন তথ্য উঠে এসেছে। ফুটেজে দেখা গেছে, ওই কিশোর গাড়ি চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করার সময় পুলিশ কর্মকর্তা তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন।

গুলিটি তার বুকে বিদ্ধ হয়। জরুরি চিকিৎসা দেওয়ার পরও ওই কিশোরকে বাঁচানো যায়নি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা এক ভিডিওতে নাহেলের মা মৌনিয়াকে তার নিহত সন্তানের স্মরণে মিছিলে নামতে লোকজনের প্রতি আহ্বান জানাতে দেখা গেছে।

“সে একটি শিশু, মাকে তার দরকার। সে আমাকে সকালে চুমু খেয়ে বিদায় জানিয়েছিল, আর বলেছিল, তোমাকে ভালোবাসি মা। ঘণ্টাখানেক পর আমাকে বলা হল, কেউ একজন আমার ছেলেকে গুলি করেছে। কী করবো আমি? ও ছিল আমার জীবন। আমার সবকিছু,” বলেন তিনি।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!