বিদ্যাসাগরের জন্মদিন পালন বিদ্যানগর কলেজে

অর্ঘ্য রায়
অর্ঘ্য রায়
4 মিনিটে পড়ুন

ঐতিহ্য, উত্তরাধিকার ও পরম্পরা মেনে বাংলার শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারের সূর্যোদয় হয়েছিল ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জ্ঞান ও প্রতিভার পৌরোহিত্যে। তিনিই এদেশের আদি শিক্ষক। বিদ্যাসাগরের জন্মদিনটি কে সামনে রেখে বিদ্যানগর কলেজের বাংলা ভাষাসাহিত্য বিভাগ আয়োজন করেছিল এক ধ্রুপদী ঘরানার শ্রদ্ধা জ্ঞাপন অনুষ্ঠান। ‘বিদ্যাসাগর দিবস’ শিরোনামে দিনটি মহাসমারহে পালন করা হয়। পঞ্চ প্রদীপের আলোর সাহচর্য যেমন ছিল তেমন ছিল বিদ্যাসাগরের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান ও পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন। বর্ণপরিচয় গ্রন্থ থেকে বিশেষ অংশ পাঠ করে শোনানো হয়। পাঠে অংশগ্রহণ করেন বাংলা বিভাগের পক্ষ থেকে অবশেষ দাস ও অর্পিতা দাস।

এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ছিলেন বিদ্যানগর কলেজের অধ্যক্ষ ড. সূর্য প্রকাশ আগারওয়ালা। মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রথিতযশা কবি রফিক উল ইসলাম, ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা গ্রন্থাগারিক শ্রী মধুসূদন চৌধুরী। বিদ্যাসাগর দিবস পালনে স্বাগত ভাষণ দেন কলেজের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের বিভাগীয় প্রধান ড. বনানী চক্রবর্তী। তিনি বলেন, বর্তমান প্রজন্ম বিদ্যাসাগরের অবদান সম্পর্কে বিশেষভাবে অবগত নয়। শুধু ছোটরা কেন, বড়রাও বিদ্যাসাগর নিয়ে তেমন চর্চা করেনা। এই উদাসীনতা থেকে বাংলার মানুষকে বেরিয়ে আসতে হবে। তার জ্ঞান ও প্রতিভার নতুন ভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। দেখতে দেখতে দুটি শতক কেটে গেল বিদ্যাসাগরকে আমরা এখনো জেনে উঠতে পারলাম না। বুঝে উঠতে পারলাম না। শুধু বিদ্যাসাগর নয় এইভাবে বাংলার ইতিহাস, সমাজ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে ছাত্র-ছাত্রীদের যাতে গভীর জ্ঞান ও ধারণা গড়ে ওঠে সেজন্য আগামী দিনে আরো পরিকল্পিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এজন্য কলেজ কর্তৃপক্ষের আন্তরিক সহযোগিতা একান্তভাবে দরকার। আমাদের অধ্যক্ষ ড. সূর্য প্রকাশ আগরওয়ালা খুবই আন্তরিক সব বিষয়ে তার সহযোগিতা ছাড়া এই ধরনের ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের আয়োজন বাংলা বিভাগ করতেই পারতেন না। অধ্যক্ষ ড. সূর্য প্রকাশ আগরওয়ালা বলেন বাংলা বিভাগের একের পর এক অনুষ্ঠান কলেজের সংস্কৃতি বোধকে আলোকিত করছে। তিনি এ কথাও জানান যে বিদ্যাসাগরের জন্ম দিবস পালন করবার ইচ্ছা তিনি অনেক দিন ধরে বুকে পুষে রেখেছিলেন। সেই ইচ্ছার বাস্তবায়ন দেখে তিনি আনন্দিত। বিদ্যাসাগর শুধু বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের বিষয় নয়, শিক্ষাক্ষেত্রে তিনি সব ক্ষেত্রেই প্রনম্য। ২০০ বছর আগে জন্মগ্রহণ করেও এমন আধুনিকতা খুব কম মানুষের মধ্যে দেখা যায়। তিনি যেমন জ্ঞানী ছিলেন, তেমন ছিলেন দানশীল। তার জীবন সর্বকালের মানুষের কাছে এক ব্যতিক্রমী আদর্শ। মুখ্য বক্তা হিসেবে কবি রফিকুল ইসলাম দীর্ঘ এক ঘন্টা বক্তব্য রাখেন। বিদ্যাসাগরের জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে পর্যালোচনা করেন। বিদ্যাসাগরের কথা বলতে গিয়ে বারবার তিনি গৌতম বুদ্ধের কথাও বলেছেন। ঐশ্বর্যময় বৈরাগ্যের কথা বলেছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা গ্রন্থাগারিক শ্রী মধুসূদন চৌধুরী একজন স্বনামধন্য বক্তা তিনিও একটানা এক ঘন্টা অসাধারণ বক্তব্য রাখেন। বিদ্যাসাগরের জীবন গ্রন্থ প্রনয়ণ, সমাজ সংস্কার ও বিবিধ বিষয়ে তিনি আলোকপাত করেন। তার বক্তব্যে বর্তমান সময়ে বিদ্যাসাগরের প্রাসঙ্গিকতাও উঠে আসে। অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন অধ্যাপক শহিদুল রহমান লস্কর, অধ্যাপক সুব্রত সার, ড. গোপা বিশ্বাস, অধ্যাপিকা অনন্যা ব্যানার্জি সহ আরও অনেকেই। আলোচনা সভাতে শব্দ শূন্য শ্রোতারা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে বক্তাদের আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট অধ্যাপক-অধ্যাপিকা সহ ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি ছিল প্রশংসনীয়। বর্ণপরিচয় দিবস উদযাপনে তারিফ করবার মতো ধ্রুপদী ঘরানার মুন্সিয়ানা ছিল। মনোজ্ঞ এই অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক ছিলেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তথা বিশিষ্ট সাহিত্যিক অবশেষ দাস।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
সাংবাদিক ও কলামিস্ট। পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!